বুয়েট শিক্ষার্থী মুহতাসিম মাসুদ নিহতের ঘটনায় ৩ আসামি রিমান্ডে
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পুলিশের চেকপোস্টে প্রাইভেটকার চাপায় বুয়েট শিক্ষার্থী মুহতাসিম মাসুদ নিহতের ঘটনায় গ্রেফতার তিন আসামির দুইদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রোববার (২২ ডিসেম্বর) সকালে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নূর মহসিনের আদালত এ আদেশ দেন।
এর আগে সকাল দশটায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে তিন আসামি প্রাইভেটকার চালক মুবিন আল মামুন, তার দুই বন্ধু মিরাজুল করিম ও আসিফ চৌধুরীকে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত তাদের সবাইকে দুইদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে মাদকসহ দায়ের করা দুটি মামলার মধ্যে সড়ক পরিবহন আইনের মামলায় রিমান্ড শুনানি হয়েছে। আদালত এই মামলায় তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
এদিকে ঘটনার ন্যায়বিচারের দাবিতে সকাল থেকেই জেলা আদালত প্রাঙ্গনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচী করেন তারা। পূর্বাচলের ঘটনা পরিকল্পিত হত্যাকান্ড দাবি করে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন নিহতের স্বজন ও সহপাঠীরা।
নিহত মুহতাসিম মাসুদের ফুপা জাকির হোসেন বলেন, এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে দুর্ঘটনা বলে চালানো হচ্ছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায় বিচার দাবি করছি।
বুয়েট শিক্ষার্থীরা বলেন, 'আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই এই ঘটনার যেন সুষ্ঠু তদন্ত হয়। আমরা আশা করছি, আদালত ন্যায়বিচার করবে।'
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে বুয়েটের সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী মুহতাসিম মাসুদ তার দুই সহপাঠীকে নিয়ে ৩০০ ফুট সড়কের পূর্বাচল এলাকা থেকে খাবার খেয়ে মোটরসাইকেলে করে ঢাকায় ফিরছিলেন। পুলিশের চেক পোস্ট অতিক্রম করার সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তাদের গতিরোধ করে।
এসময় বেপরোয়া গতিতে আসা একটি প্রাইভেটকার চেকপোস্টের ব্যারিকেড ভেঙে তাদের মোটরসাইকেলটিকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় মুনতাসির মাসুদের। গুরুতর আহত হন তার দুই সহপাঠী বন্ধু অমিত সাহা এবং মেহেদি হাসান খানসহ দুই পুলিশ সদস্য।
পুলিশ প্রাইভেটকার চালক মুবিন আল মামুন, তার দুই বন্ধু মিরাজুল করিম ও আসিফ চৌধুরীকে বিদেশী মদের বোতলসহ গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা মাসুদ মিয়া বাদী হয়ে সড়ক পরিবহন আইনে রূপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
গ্রেফতাররা মদ্যপ অবস্থায় ছিলো কিনা তা যাচাইয়ের জন্য ডোপ টেস্ট করতে শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে তাদের তিন জনকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। ডোপ টেস্টে প্রাইভেটকার চালক মুবিল আল মামুন ও মিরাজুল করিমের রিপোর্ট পজেটিভ আসে। তবে আসিফ চৌধুরীর রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
পরে শনিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে রূপগঞ্জ থানার এ এস আই মেহেদী হাসান বাদী হয়ে মাদক সেবন ও বহনের অপরাধে মুবিল আল মামুন ও মিরাজুলকে এবং মাদকদ্রব্য সরবরাহে সহায়তার অভিযোগে আসিফ চৌধুরীকে আসামি করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন।