আক্রান্ত হওয়ার আগেই প্রতিহত করুন ডায়াবেটিস
বর্তমান বিশ্বের সাধারণ কিছু কঠিন অসুস্থতাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ডায়াবেটিস। বহুমূত্র বা ডায়াবেটিস মেলাইটাস একটি দীর্ঘকালীন রোগ। রক্তে স্বাভাবিকের চেয়ে চিনি বা গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে গেলে ইনসুলিনের উৎপাদন বা কার্যকারিতা কমে গেলে এই রোগ হয়।
ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশনের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি দশজন মানুষের মধ্যে একজন ডায়াবেটিসে ভুগছেন। বর্তমানে পুরো বিশ্বে ৫৩ কোটির বেশি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। অর্থাৎ বছরে ১৫ লক্ষের বেশি মানুষ ডায়াবেটিস আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এছাড়া হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, অন্ধত্ব, কিডনি ফেইলিউর, পা কেটে ফেলার মতো ইত্যাদি আরও অনেক সমস্যার কারণ হতে পারে ডায়াবেটিস।
১৪ নভেম্বর সারাবিশ্বে পালিত হয় আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস দিবস। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনের মাধ্যমে সুস্বাস্থ্য ধরে রাখতে হয়। সবচেয়ে বেশি স্বস্তিতে থাকা যায়, যদি আক্রান্ত হওয়ার আগেই ডায়াবেটিস হওয়া প্রতিরোধ করা যায়। গুন্ডারসেন হেলথ সিস্টেমের একটি প্রতিবেদনে এই নিয়ে কিছু টিপস শেয়ার করা হয়েছে।
১. সাদা রুটি, আলুর মতো পরিশোধিত শর্করা এবং চিনিযুক্ত খাবার, রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় এবং রক্তে ইনসুলিনের তারতম্য ঘটায়। এর ফলে সময়ের সাথে সাথে ডায়াবেটিস সৃষ্টি করতে পারে। তাই খাদ্যতালিকায় আগে থেকেই চিনিজাতীয় খাবার সীমিত করুন এবং জটিল কার্বোহাইড্রেট যেমন শাকসবজি, ওটমিল এবং পুরো শস্য বেশি পরিমাণে রাখুন।
২. ধূমপান ইনসুলিনের কার্যকারিতা প্রতিহত করতে পারে। এর ফলে টাইপ-টু ডায়াবেটিস হতে পারে। তাই ধূমপানের অভ্যাস থাকলে দ্রুত ত্যাগ করুন।
৩. একবারে অনেক বেশি পরিমাণে খাবার খেলে স্বাভাবিকের তুলনায় রক্তে ইনসুলিন এবং শর্করার মাত্রার তারতম্য হতে দেখা যায়।
৪. হাঁটা, নাচ, শরীরচর্চা, সাঁতারের মতো শারীরিক পরিশ্রম হয় এমন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন ৩০ মিনিট করে শরীরের ঘাম ঝরাতে হবে। সীমিত পরিমাণে শারীরিক পরিশ্রম করা বা একেবারেই না করা ডায়াবেটিস তৈরি হওয়ার কারণ হতে পারে।
৫. যদি আপনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে না চান তাহলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। শুধু তাই নয়, অন্যান্য মিষ্টি পানীয় পান করাও কমিয়ে ফেলতে হবে। মিষ্টি পানীয় ডায়বেটিস হওয়ার কারণ হতে পারে।
৬. তন্তুজাতীয় খাবার খাওয়ার অভ্যাস অনেক রোগের মতো ডায়াবেটিস প্রতিরোধেও কার্যকর। তন্তু বা ফাইবারজাতীয় খাবার খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং পেট সুস্থ রাখতেও সাহায্য করে, যার ফলে ডায়াবিটিসের সম্ভাবনাও কমে যায়।
প্রতিবছর ১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালন করা হয়। এই দিবসের উদ্দেশ্য সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ডায়াবেটিস হওয়া প্রতিরোধ করা এবং ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সুস্থতা নিশ্চিত করা।