বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে বেক্সিমকোর শ্রমিকদের অবরোধ

গাজীপুরের কাশিমপুরের সারাবো এলাকায় বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে টানা ৫ম দিনের মতো বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন। সোমবার সকাল ৬টায় ঢাকা-টাংগাইল মহাসড়কের চক্রবর্তী মোড়ে সড়ক অবরোধ করে তারা এ আন্দোলন শুরু করেন।
শ্রমিকদের আন্দোলনের ফলে সড়কের যান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটলেও বিকল্প পথে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন গাজীপুর শিল্প পুলিশের উপপরিদর্শক রফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, সকালে শ্রমিকেরা সড়ক অবরোধ শুরু করে। তবে, বর্তমানে কতজন শ্রমিক আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শ্রমিকরা জানান, গত অক্টোবর মাসের বেতন এখনও পরিশোধ না হওয়ায় তারা চরম সংকটে রয়েছেন। তারা বলেন, যতদিন বেতন পাব না, ততদিন আন্দোলন চালিয়ে যাব। আমরা ঘরে ফিরব না।
তাদের দাবি, বারবার আন্দোলন করেও কর্তৃপক্ষ থেকে কোনো ইতিবাচক সাড়া পাননি। আজ আমাদের আন্দোলনের ৫ম দিন, অথচ কর্তৃপক্ষ কোনো আশ্বাস দেয়নি, জানান আরেক শ্রমিক।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, শ্রমিকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা বলেন, শ্রমিকরা বহিরাগত কাউকে দেখলেই মোবাইল ছিনিয়ে নেয় এবং তা ভেঙে ফেলে। তাদের মনোভাব খুবই আক্রমণাত্মক।
এদিকে, অভিযোগ রয়েছে যে আন্দোলনরত শ্রমিকরা গণমাধ্যমকর্মীদের ঘটনাস্থলে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না।
শিল্প পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। শিল্প পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। এর মধ্যে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা মূলত এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।
গতকাল রবিবার সকাল ৬ টা থেকে সন্ধ্যা ১২টা পর্যন্ত চন্দ্রা-নবীনগর সড়ক অবরোধের পর রাতে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেন। তবে আজ সকালে আবারো সড়ক অবরোধ শুরু করেছেন।
বিক্ষোভের বিষয়ে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
সাভার হাইওয়ে থানার ওসি সওগত উল আলম বলেন, শ্রমিকদের আন্দোলন এখন মহানগরীর ভেতর ঢুকে পড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করছে।
শ্রমিকদের আন্দোলন এবং কর্তৃপক্ষের নীরবতার কারণে পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল আকার ধারণ করছে। আন্দোলন কতদিন চলবে এবং শ্রমিকদের দাবি কবে পূরণ হবে তা এখনও অনিশ্চিত।
Comments