নির্যাতনের ভিডিও ফাঁস: ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
মাত্র এক সপ্তাহ আগেও সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা ছিলেন ইসরায়েলের সেনাবাহিনীতে মেজর জেনারেল ইফাত তমার-ইয়েরুশালমি। তাঁর দায়িত্ব ছিল দেশটির সশস্ত্র বাহিনীতে আইনের শাসন বজায় রাখা। কিন্তু বর্তমানে তিনি নিজেই একটি ফৌজদারি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন।
ইসরায়েলের কুখ্যাত সামরিক কারাগার সদে তেইমানে ফিলিস্তিনি বন্দিদের ওপর শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের ভিডিও ফাঁসের পর ইয়েরুশালমির বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভিডিও ফাঁস ও তমারকে গ্রেপ্তারের ঘটনা বর্তমানে ইসরায়েলের জাতীয় কেলেঙ্গারিতে পরিণত হয়েছে।
গত বছর ফাঁস হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, কারাগারে এক ফিলিস্তিনি বন্দিকে যৌন নির্যাতন করা হচ্ছে। কাছেই বেশ কয়েকজন বন্দি মুখ নিচু করে মাটিতে শুয়ে আছেন। ভিডিওটি ফাঁসের জেরে গত বুধবার ইফাত তমার-ইয়েরুশালমিকে সামরিক অ্যাডভোকেট জেনারেলের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। একই দিন ইসরায়েলের অ্যাটর্নি জেনারেল গালি বাহারাভ-মিয়ারা ভিডিও ফাঁসের ঘটনায় একটি ফৌজদারি তদন্ত শুরুর নির্দেশ দেন।
দুই দিন পর তমার-ইয়েরুশালমি পদত্যাগপত্র জমা দেন। তাতে স্বীকার করেন, তিনিই ভিডিওটি প্রকাশের অনুমোদন দিয়েছিলেন। চিঠিতে ইয়েরুশালমি বলেন, 'ইউনিটের ভেতর থেকে গণমাধ্যমে যেকোনো কিছু প্রকাশিত হয়ে থাকলে, সেটির পূর্ণ দায় আমি নিচ্ছি।'
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ভিডিও ফাঁসের ঘটনাকে দেশের ভাবমূর্তির ওপর বড় আঘাত বলে অ্যাখ্যা দিয়েছেন। গত রোববার তিনি বলেন, এটি ইসরায়েলের জনসংযোগের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বিপর্যয়। আর জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির এমন কর্মকাণ্ডকে অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করেন।
এরপরই ঘটে নাটকীয় মোড়। তমার-ইয়েরুশালমি নিখোঁজ হন। রোববার কয়েক ঘণ্টা ধরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও পুলিশ তাঁর খোঁজ পায়নি। পরে ব্যাপক অভিযানের পর তেল আবিবের একটি সমুদ্রসৈকতে তমারের খোঁজ পাওয়া যায়।
রোববার সন্ধ্যায় পুলিশ তমার-ইয়েরুশালমিকে গ্রেপ্তার করে। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণা, আস্থাভঙ্গ, সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার, বিচারপ্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি এবং সরকারি তথ্য ফাঁসের অভিযোগ আনা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তাদের মতে, তমার ইচ্ছাকৃতভাবে সংবেদনশীল সামরিক তথ্য গণমাধ্যমে ফাঁস করেছেন। এটি এখন ইসরায়েলে ব্যাপক রাজনৈতিক ও আইনগত বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
 
        
      
Comments