ইন্দোনেশিয়ায় কেন এই সময় এতো সহিংস আন্দোলন?

১. অতিরিক্ত পার্লামেন্টারিয়ান ভাতা
ইন্দোনেশিয়ার ৫৮০ জন সাংসদ প্রতি মাসে প্রায় ৫০ মিলিয়ন রুপিয়ার বাসভাড়া ভাতা পাচ্ছেন — যা রাজধানী জাকার্তার ন্যূনতম মজুরির প্রায় ১০ গুণ ।
এই ব্যয়বহুল ভাতা সাধারণ মানুষের দারিদ্র্য ও বেকারত্বের সঙ্গে অত্যন্ত সংশ্লিষ্ট হয়ে যায়, যা প্রচণ্ড অসন্তোষের সঞ্চার করে ।
২. আর্থিক সংকট, বেকারত্ব এবং দারিদ্র্য
দেশব্যাপী মূল্যবৃদ্ধি, চাকুরির অভাব ও মধ্যবিত্তের সংকোচনের কারণে জনগণের জীবনযাত্রায় চাপ পড়েছে ।
২০২৫ সালের প্রথমার্ধে প্রায় ৪২,০০০ জন কর্মী কর্মহীন হয়েছেন।
৩. অভিযোগিত সাংস্কৃতিক ব্যাপার: গৃহ প্রবৃদ্ধি নীতি ও অদম্য সংসদীয় নির্দিষ্টতা
"ডার্ক ইন্দোনেশিয়া" (#IndonesiaGelap) আন্দোলন ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয়, যেখানে শিক্ষায় ছাঁটাই ও দুর্নীতি বিরোধী নীতি বিশেষভাবে লক্ষ করা হয় ।
৪. মিলিটারির অগ্রাধিকার বৃদ্ধি
২০২৫ সালের মার্চে সংশোধিত টিনআই (TNI) আইন অশান্তি সৃষ্টি করে, যা সৈন্যদের মুখ্য সামরিক স্তর ছাড়াও বিচারব্যবস্থা ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের সুযোগ দেয়—যা স্বৈরাচারী সামরিক নিয়ন্ত্রণের পুনরুত্থানের আশঙ্কা বেড়ে দেয় ।
৫. ব্যক্তিগত প্রতীক: ডেলিভারি চালকের মৃত্যু
২১ বছর বয়সী ডেলিভারি চালক আফ্ফান কুরনিয়াওয়ান একটি পুলিশ আর্মাড ভ্যানের ধাক্কায় নিহত হন—এই দুঃখজনক হত্যাকাণ্ড ভিডিও হয়ে ভাইরাল হয়ে যায় এবং সহিংসতা তীব্রায়িত হয় ।
৬. নির্বাচনী ও পুলিশি বিধ্বংস
আন্দোলন জারি থাকাকালীন পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর কঠোর হস্তক্ষেপ, নির্মম আচরণ এবং হাজার হাজার আটক—জনমনে সরকার ও নিরাপত্তাবাহিনীর প্রতি আস্থা নষ্ট করেছে ।
৭. প্রতিবাদীদের ১৭+৮ দাবি
মতাদর্শগত সাম্য ও গণতান্ত্রিক সংস্কারের অনুরোধে তরুণ ও সচেতন নাগরিক ১৭+৮ (১৭ + ৮) নামে ২৫ দফা দাবির তালিকা উপস্থাপন করেন—যাতে রয়েছে: সংসদীয় ভাতা বাতিল, আইন প্রণয়ন, নিরাপত্তা বাহিনীকে নিরপেক্ষ নিরীক্ষা, মন্ত্রীদের হস্তক্ষেপ বন্ধ ইত্যাদি ।
সারসংক্ষেপ:
> ইন্দোনেশিয়ায় বর্তমানে সহিংস আন্দোলন চালাচ্ছে মূলত:
> পার্লামেন্টারিয়ানদের অতিরিক্ত ভাতা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনঅসন্তোষ।
> অর্থনৈতিক সংকট, বেকারত্ব ও জীবনযাত্রার খারাপ অবস্থা।
> সৈন্যদের রাজনৈতিক ক্ষেত্রের বাড়তি দখলের ভয়।
> পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর কঠোর হস্তক্ষেপ।
Comments