ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের আগে লন্ডনে জেলেনস্কি, ইউরোপীয় সমর্থন চায় কিয়েভ

যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার আসন্ন শান্তি সম্মেলনের ঠিক একদিন আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) লন্ডন সফর করেছেন। তার লক্ষ্য - ইউরোপীয় নেতাদের সমর্থন নিশ্চিত করা, যাতে কোনো চুক্তির মাধ্যমে ইউক্রেনের ভূখণ্ড বিভক্ত না হয়।
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের 'আল্টিমেটাল' শেষ হওয়ার পর শুক্রবার (১৫ আগস্ট) আলাস্কায় এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া ইউক্রেন যুদ্ধ ইউরোপে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সবচেয়ে বড় সংঘাত হিসেবে বিবেচিত হয়। ইতোমধ্যে লক্ষাধিক প্রাণহানি ও কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
এদিকে, লন্ডন সফরকালে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টার্মারের সঙ্গে ডাউনিং স্ট্রিটে সাক্ষাৎ করেছেন জেলেনস্কি। এর আগে বুধবার (১৩ আগস্ট) ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ নেন তিনি। এই বৈঠকে আলাস্কা সম্মেলনের জন্য কিছু 'রেড লাইন' নির্ধারণের চেষ্টা করা হয় বলে জানা গেছে।
ওইদিন ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দেন, পুতিন যদি 'শান্তির পথে না আসেন' তবে 'মারাত্মক পরিণতি' অপেক্ষা করছে রাশিয়ার জন্যে। যদিও তিনি বিস্তারিত কিছু বলেননি, তবে তার হুঁশিয়ারিতে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ইঙ্গিত রয়েছে।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রিই সিবিহা এক্স-পোস্টে বলেছেন, 'গতকাল ছিল ইউরোপীয় ও ট্রান্স-আটলান্টিক ঐক্য জোরদারের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। আমাদের এখন প্রয়োজন শক্তির ভিত্তিতে শান্তি, যা বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ভিত্তি।'
তবে জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি ট্রাম্পকে সতর্ক করেছেন যে, পুতিন শান্তির বিষয়ে 'প্রতারণা' করছেন। তবে তিনি ট্রাম্পের যুদ্ধ-পরবর্তী নিরাপত্তা নিশ্চয়তার ধারণাকে সমর্থন করেছেন। তিনি বলেন, আলাস্কা বৈঠকের উদ্দেশ্য হলো 'আলোচনার টেবিল প্রস্তুত করা', যার পরবর্তী ধাপে জেলেনস্কিও অংশ নেবেন।
এদিকে, ইউক্রেনের দোনেৎস্ক অঞ্চলের দোব্রোপিলিয়া শহরের কাছে রুশ বাহিনী ৯-১০ কিলোমিটার অগ্রসর হয়েছে বলে জেলেনস্কি দাবি করেছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইউক্রেনকে রিজার্ভ বাহিনী মোতায়েন করতে হয়েছে বলেও জানান তিনি।
গ্যালাপ-এর এক জরিপে দেখা গেছে, ৬৯% ইউক্রেনীয় নাগরিক দ্রুত যুদ্ধের সমাপ্তি চায়, তবে তারা দেশের বা সার্বভৌমত্বের বড় ছাড় দিয়ে শান্তি চায় না। পুতিনের শর্তানুযায়ী, ইউক্রেনকে চারটি অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে এবং ন্যাটোতে যোগদানের পরিকল্পনা পরিত্যাগ করতে হবে, যা কিয়েভ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে।
তথ্যসূত্র: রয়টার্স
Comments