১৪ লাখ আফগান শরণার্থীকে জোর করেই ফেরত পাঠাচ্ছে পাকিস্তান

প্রায় ১৪ লাখ আফগান শরণার্থীকে জোরপূর্বক আফগানিস্তানে ফেরত পাঠানোর অভিযান পুনরায় শুরু করেছে পাকিস্তান সরকার। এ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।
পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ সোমবার (৪ আগস্ট) জানায়, প্রুফ অব রেজিস্ট্রেশন (পিওআর) কার্ডধারী আফগানদের থাকার মেয়াদ জুনে শেষ হয়ে যাওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে। অনেকেই আরও এক বছরের সময় চেয়েছিল যাতে তারা জমি-বাড়ি বিক্রি বা ব্যবসা গুটিয়ে দেশে ফিরতে পারে। কিন্তু সরকার সেই আবেদন গ্রহণ করেনি।
এই পিওআর কার্ডধারীদের বাইরে আরও প্রায় আট লাখ শরণার্থী রয়েছেন যারা আফগান সিটিজেন কার্ড (এসিসি) বহন করেন। তাদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নিচ্ছে পাকিস্তান। পাঞ্জাব, বেলুচিস্তান ও সিন্ধ প্রদেশের পুলিশ জানিয়েছে, বৈধ কাগজপত্র না থাকায় এসব আফগান নাগরিককে আটক করে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধরপাকড়
পুলিশ জানিয়েছে, এই কার্যক্রমে এখনো গণগ্রেফতার চালানো হয়নি। বরং বাড়ি বাড়ি গিয়ে ও অনির্দিষ্ট তল্লাশির মাধ্যমে অবৈধ আফগানদের চিহ্নিত করা হচ্ছে।
খাইবার পাখতুনখোয়ার আফগান শরণার্থী কমিশনার শাকিল খান বলেন, 'হ্যাঁ, অবৈধভাবে বসবাসরত আফগানদের সম্মানের সঙ্গে দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।' তিনি একে এখন পর্যন্ত 'সবচেয়ে বড় প্রত্যাবাসন অভিযান' হিসেবে উল্লেখ করেন।
মানবিক সংকটের আশঙ্কা
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এ বছরই পাকিস্তান ও ইরান থেকে ১২ লাখের বেশি আফগান নাগরিককে স্বদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ইউএনএইচসিআর আশঙ্কা করছে, এভাবে বড় আকারে, দ্রুত এবং জোরপূর্বক প্রত্যাবাসন আফগানিস্তানে মানবিক বিপর্যয় ও আঞ্চলিক অস্থিরতা ডেকে আনতে পারে।
সংস্থাটির মুখপাত্র কায়সার খান আফ্রিদি বলেন, এভাবে মানুষকে ফেরত পাঠানো আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। এটি কার্যত 'রিফুলেমেন্ট', অর্থাৎ শরণার্থীদের জোরপূর্বক এমন দেশে ফেরত পাঠানো যেখানে তাদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে।
তিনি আরও বলেন, আমরা পাকিস্তান সরকারের কাছে আবেদন করছি, এমন তাড়াহুড়ো বন্ধ করে স্বেচ্ছায়, ধীরে ও মর্যাদার সঙ্গে প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করুন।
সূত্র: ইউএনবি
Comments