বিকৃত ছবি-ভিডিও, উদ্বেগ জানালেন মেহজাবীন

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে সেলিব্রিটিদের ছবি ও ভিডিও বিকৃত করার প্রবণতা বেড়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া এসব কনটেন্ট অনেক সময় এতটাই বাস্তবসম্মত হয়, সাধারণ ব্যবহারকারীরা বিভ্রান্ত হন, মন্তব্য করেন, কখনও অপমানও করেন, যার শিকার হচ্ছেন মূলত তারকারা, বিশেষ করে নারীরা।
এই বাস্তবতায় বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, 'প্রযুক্তি আজ আমাদের জীবনের প্রতিটি কোণে ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা অনেকেই এর ভালো দিকগুলো নিয়ে আশাবাদী, কিন্তু এর অন্ধকার দিকটা আর অস্বীকার করার সুযোগ নেই।'
এআইকে 'বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রযুক্তি' উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি যখন ভুল মানুষের হাতে পড়ে, তখন তা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
মেহজাবীন লিখেছেন, 'অনেকেই এখন এআই ব্যবহার করে সেলিব্রিটিদের বা নারীদের ছবি ও ভিডিও বিকৃত করছে। এগুলো ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ছে, আর যারা বুঝতে পারে না এগুলো ভুয়া, তারা বিশ্বাস করে, মন্তব্য করে, অপমান করে।'
তিনি আরও বলেন, 'এটা এখন নিত্যদিনের ঘটনা। এমন মানুষদের সংখ্যা বাড়ছে, যারা সারাদিন ধরে শুধুই এসব করে বেড়ায়। তারা ভুল তথ্য ছড়ায়, বিভ্রান্তি তৈরি করে, মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করে। এটা শুধু অনৈতিক না, এটা একেবারে অপরাধ।'
এই ধরণের কর্মকাণ্ডকে তিনি 'ডিজিটাল সহিংসতা' হিসেবে উল্লেখ করেন। তার মতে, 'এআই থামানো যাবে না, কিন্তু এর অপব্যবহার রোধ করা দরকার। আমাদের দরকার কঠোর আইন, শক্ত প্রতিরোধ, আর জনসচেতনতা।'
তিনি আশা প্রকাশ করেন, 'আমাদের দেশে দ্রুত এমন নিয়ম-কানুন ও শাস্তির ব্যবস্থা হবে, যা সবাই—বিশেষ করে নারীদের জন্য—একটি নিরাপদ ও সম্মানজনক পরিবেশ তৈরি করবে।'
মেহজাবীনের এই স্ট্যাটাস ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা আলোচনা হচ্ছে। অনেকেই তার বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে মন্তব্য করছেন। কেউ কেউ এটিকে প্রযুক্তিনির্ভর সমাজে "নতুন ধরনের সহিংসতা" হিসেবে দেখছেন।
বিশ্বজুড়েই ডিপফেইক ও এআই-জেনারেটেড কনটেন্ট নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। বাংলাদেশেও কয়েক মাস ধরে এ ধরণের বেশ কয়েকটি ঘটনা আলোচনায় এসেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রযুক্তি যেমন সুবিধা তৈরি করে, তেমনি এর অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার সামাজিক ও নৈতিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
Comments