২২ বছরেও দিলদার, যেখানে এখনো একাই রাজা

এসএসসি পাস করার পর পাঠ্য জীবনের ইতি টানেন। অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসার টানে নতুন বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে নাম লেখান। অমল বোস পরিচালিত 'কেন এমন হয়' সিনেমাতে অভিনয়ের মাধ্যমে ঢালিউডে পা রাখেন দিলদার।
১৯৪৫ সালের ১৩ জানুয়ারি চাঁদপুরে জন্মগ্রহণ করেন দিলদার। আশি থেকে নব্বই দশকে সিনেমায় নায়ক-নায়িকার পর দর্শকমহলে দিলদার অভিনীত কমেডি চরিত্রগুলো বেশ জনপ্রিয় ছিল।
প্রথম সিনেমাতেই নিজের অভিনয় ক্ষমতার স্বাক্ষর রাখেন দিলদার। এরপর একে একে নিজেকে কৌতুক চরিত্রে অপ্রতিদ্বন্ধী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। প্রেক্ষাগৃহে দর্শক মাতাতে ও সিনেমায় হাস্যরস তৈরিতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দিলদারকেই দেখা যেত। তিনি একে একে উপহার দেন 'বেদের মেয়ে জোছনা, 'বিক্ষোভ, 'অন্তরে অন্তরে, 'চাওয়া থেকে পাওয়া, 'শুধু তুমি, 'স্বপ্নের নায়ক, 'আনন্দ অশ্রু', 'এই ঘর এই সংসার', 'বিচার হবে', 'স্বপ্নের পৃথিবী'র মতো ব্যবসা সফল সিনেমা।
কৌতুকের বাইরেও 'আব্দুল্লাহ্' সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে নায়ক হিসেবে অভিষেক হয় দিলদারের। এতে দিলদারের নায়িকা হয়েছিলেন চিত্রনায়িকা নূতন। দর্শকপ্রিয়তায় সিনেমাটি ব্যবসা সফল সিনেমার তালিকায় স্থান পায়।
২০০৩ সালে মারা যান এ কমেডি সুপারস্টার। তার মৃত্যুর পর ঢাকাই সিনেমাতে শক্তিশালী কৌতুক অভিনেতার আবির্ভাব ঘটেনি। ঢালিউড ইন্ডাস্ট্রিতে তার শূন্যতা এখনো ভোগায় নির্মাতাদের। যে কারণে মৃত্যুর পরেও এ অভিনেতা আজও জীবন্ত হয়ে আছেন দর্শক হৃদয়ে। ২০০৩ সালে 'তুমি শুধু আমার' চলচ্চিত্রের জন্য সেরা কৌতুক অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও লাভ করেন দিলদার।
দিলদার শুধু অভিনেতা ছিলেন না, ছিলেন প্রাণবন্ত একজন মানুষও। শুটিং সেটে থাকতেন প্রাণখোলা হাসিতে ভরা। মালেক আফসারীর 'লাল বাদশা' ছবির জন্য 'শুধু ডিম দিয়ে পরিচয়' গানটিও নিজেই গেয়েছিলেন দিলদার।
দিলদার শুধু পর্দায় নয়, বাস্তব জীবনেও ছিলেন সকলের মন জয় করা একজন মানুষ। তার অনুপস্থিতি বার বার বুঝিয়ে দিয়েছে শূন্যতা কতখানি।
Comments