ব্যাংক বীমা-আর্থিক খাতের দাপটে ঊর্ধ্বমুখী বাজার

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবারও (২৪ জুলাই) দেশের পুঁজিবাজারে টানা নয় কার্যদিবস ধরে সূচক বাড়ার ধারা অব্যাহত রয়েছে। ব্যাংক ও আর্থিক খাতের দাপটেই মূলত বাজার উর্ধ্বগতিতে রয়েছে। আজ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হয়েছে ৯৫১ কোটি টাকার বেশি।
দিনের শুরুতেই বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ায় সূচক বাড়ে ১৩ পয়েন্ট। তবে প্রথম পাঁচ মিনিট পার হতেই বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। সূচক উঠানামার মধ্যে থাকলেও শেষ পর্যন্ত ব্যাংক ও আর্থিক খাতের জোরে লেনদেন শেষ হয় সূচকের ঊর্ধ্বমুখী ধারায়।
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২৮ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৩৯২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। বাছাই করা ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক বেড়েছে ৩ পয়েন্ট, অবস্থান করছে ২ হাজার ৮৯ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৫ পয়েন্ট কমে নেমে এসেছে ১ হাজার ১৭২ পয়েন্টে।
দিন শেষে ডিএসইতে দাম বেড়েছে ১৬১টি কোম্পানির, কমেছে ১৭১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬৬টির শেয়ার ও ইউনিটের দাম। তালিকাভুক্ত ২৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সবগুলোর শেয়ারের দাম বেড়েছে। আর ২১টি ব্যাংকের মধ্যে ১৬টির দাম বেড়েছে, কমেছে ৫টির। বীমা খাতেও শতভাগ কোম্পানির দর বেড়েছে।
সপ্তাহব্যাপী লেনদেনের পরিমাণ লক্ষণীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, সপ্তাহের শেষদিনে প্রতি কার্যদিবসে ৬০০ থেকে ৯৮৬কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে, যা প্রায় ৮–১০ মাসে সর্বোচ্চ। লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষে ছিল সিটি ব্যাংক। কোম্পানিটির ৩৬ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এরপর রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক (৩০ কোটি ২৯ লাখ টাকা) ও ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো (২৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকা)। শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় আরও রয়েছে—বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, স্কয়ার ফার্মা, আইডিএলসি ফাইন্যান্স, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, উত্তরা ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক ও ব্যাংক এশিয়া।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) বেড়েছে সূচক ও লেনদেন। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১০৮ পয়েন্ট। লেনদেন হয়েছে ৫৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা, আগের কার্যদিবসে যা ছিল মাত্র ৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। মোট ২৪৯টি কোম্পানির মধ্যে ১১৫টির দাম বেড়েছে, ৯৯টির কমেছে এবং ৩৫টির অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে আগের দিনের তুলনায় আজ লেনদেন বেড়েছে সাড়ে ৮ গুণ, যা বিনিয়োগকারী ও বিশ্লেষকদের মধ্যে বিস্ময় ও আগ্রহ সৃষ্টি করেছে।
এই লেনদেন বৃদ্ধির পেছনে ছিল দুই কোম্পানি—বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের মেঘনা পেট্রোলিয়াম এবং খাদ্য খাতের লাভেলো আইসক্রীম। আজ মেঘনা পেট্রোলিয়ামের ২৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, আর লাভেলোতে ১৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা লেনদেন হয়। এই দুই কোম্পানির সম্মিলিত লেনদেন হয়েছে ৪৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।
সাধারণভাবে সিএসইতে দৈনিক লেনদেন ১০ কোটি টাকার নিচে থাকে। চলতি সপ্তাহেও বাজারটি ৮ কোটির গণ্ডি পেরোয়নি। সেই তুলনায় আজকের এই বড় লেনদেন বাজারে 'চমক' হিসেবেই দেখা দিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, হঠাৎ লেনদেন বৃদ্ধির পেছনে থাকতে পারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সক্রিয়তা, বড় অর্ডার কিংবা কোম্পানি সংক্রান্ত কোনো খবর।
Comments