ডিএসইতে পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে সূচক

বর্তমানে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিনিয়োগকারীরা বাজারের স্বচ্ছতা, প্রাতিষ্ঠানিক অংশগ্রহণ এবং নীতিনির্ধারকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। বাজারকে স্থিতিশীল করতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি, না হলে এই পতনের ধারা দীর্ঘমেয়াদে আরও গভীর সংকট তৈরি করতে পারে।
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার (১৫মে) দেশের শেয়ারবাজারে বড় পতন প্রবণতা অব্যাহত ছিল। লেনদেনের শুরুতে স্বল্প সময় সূচকে কিছুটা ইতিবাচক গতি থাকলেও লেনদেনের মাঝামাঝি সময় থেকে বড় বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির চাপে বাজার ক্রমেই নিম্নমুখী হতে থাকে। দিন শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৪.৫৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৭৮১ পয়েন্টে, যা গত সাড়ে পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর এই সূচক নেমেছিল ৪ হাজার ৭৭৯ পয়েন্টে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আজ ডিএসইর অন্য দুটি সূচকের মধ্যে ডিএসইএস সূচক ১৪.৫৫ পয়েন্ট কমে হয়েছে ১ হাজার ৩৮ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২০.৯১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৭৭০ পয়েন্টে।
ডিএসইতে আজ মোট ৩৯৫টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নেয়। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ কোম্পানির দরপতন হয়। দর বেড়েছে মাত্র ৪২টির, কমেছে ৩১৭টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৩৬টি কোম্পানির শেয়ারদর। বাজারে একতরফা দরপতন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ভয় ও হতাশা সৃষ্টি করেছে, যার কারণে অনেকেই লোকসান সত্ত্বেও শেয়ার বিক্রি করতে বাধ্য হন।
টাকার অঙ্কে আজ ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২৯৬ কোটি ৮৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা, যা গত ৯ কর্মদিবসের মধ্যে সর্বনিম্ন। যদিও গতকালের তুলনায় আজকের লেনদেন প্রায় ২ কোটি ৬৬ লাখ টাকা বেশি। এর আগে গত ২৯ এপ্রিল ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ২৯১ কোটি টাকার মতো।
পেছনে তাকালে দেখা যায়, ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছিল ২০২১ সালের ১৬ আগস্ট, যেদিন ২ হাজার ৯৫৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছিল এবং সূচক ছিল ৬ হাজার ৪৮ পয়েন্টে। একইভাবে, সর্বোচ্চ সূচক রেকর্ড হয়েছিল ২০২১ সালের ১০ অক্টোবর, যেদিন ডিএসইএক্স সূচক পৌঁছায় ৭ হাজার ৩৬৭ দশমিক ৯৯ পয়েন্টে।
সবখাতেই ছিল দরপতনের কবলে। ব্যাংক খাতে ৫১ কোটি টাকা লেনদেন হলেও দরপতন হয় ৬৯ শতাংশ কোম্পানির। খাদ্য খাতে ৩৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়। দরপতনে ছিল ৮৫ শতাংশ কোম্পানি। মিউচুয়াল ফান্ড খাতে ২৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়। দরপতনে ছিল ৮৫ শতাংশ কোম্পানি।
চিটাগাং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) একই চিত্র দেখা গেছে। লেনদেন হওয়া ২০৫ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৩৭টির, কমেছে ১৫১টির, অপরিবর্তিত ছিল ১৭টির দর। লেনদেন হয় ১০ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
Comments