ফের বড় পতনে আশাভঙ্গ বিনিয়োগকারীদের

প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে পুঁজিবাজার পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকের খবরে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা আশান্বিত হলেও তা মোটেও স্থায়ী হলো না। বৈঠকের খবরে আগের কর্মদিবসে সূচকে আশাব্যঞ্জক উত্থান এলেও দ্রুতই সেই উত্থান চাপা পড়ে যায় বিনিয়োগকারীদের হতাশায়। বাজার সংশ্লিষ্টরা ধারণা করেছিলেন, বাজারে তারল্য বাড়াতে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে বৈঠক থেকে কার্যকর কিছু পদক্ষেপ আসবে। ফলস্বরূপ বৈঠকের আগের কর্মদিবসে (বৃহস্পতিবার) সূচক বেড়ে যায় প্রায় ১০০ পয়েন্ট।
কিন্তু বৈঠকে বাজার পরিস্থিতির উন্নয়নে তাৎক্ষণিক কোনো আর্থিক বা নীতিগত প্রণোদনার ঘোষণা আসেনি। বৈঠকের পরদিন গতকাল সোমবার সূচক ফের নেতিবাচক ধারায় প্রবেশ করে।
আজ মঙ্গলবার (১৩ মে) শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় খানিকটা উত্থানের মধ্য দিয়ে। তবে দিনের মধ্যভাগ থেকে পতনের ধারায় নেমে যায় উভয় বাজার। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক প্রায় ৬০ পয়েন্ট পড়ে যায়। দিনশেষে অ্যাডজাস্টমেন্টের পর ৪৭ পয়েন্টে স্থির হয়। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও একই চিত্র দেখা যায়।
বাজার সংশ্লিষ্টদের অভিমত, বাজার এখন একধরনের দিক নির্দেশনাহীনতার মধ্যে রয়েছে। বৈঠক থেকে স্পষ্ট কোনো বাস্তবায়নযোগ্য পরিকল্পনা না আসায় বিনিয়োগকারীরা সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছেন। কেউ নতুন করে বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন না।
আজ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ৪৬.৯৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৮৭৪ পয়েন্টে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরীয়াহ সূচক ১২.১০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৬৩ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৬.৭৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭৯৮ পয়েন্টে।
ডিএসইতে আজ ৩৪৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৩৬৪ কোটি ০৯ লাখ টাকার। লেনদেন কমেছে ২০ কোটি ১৬ লাখ টাকা।
এদিন লেনদেন হওয়া ৩৯৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৫৪টির, কমেছে ৩০৯টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৩৫টির।৭৬ শতাংশ কোম্পানির দরপতন হয়। প্রায় ৯৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়ে ব্যাংক খাত লেনদেনের শীর্ষে থাকলেও সবখাতেই ছিল দরপতনের কবলে। এরপরে মিউচুয়াল ফান্ড খাতে সাড়ে ৪১ লাখ এবং খাদ্য খাতে ৩০ কোটি টাকা লেনদেন হয়। ১৬ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়ে মিডল্যান্ড ব্যাংক লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে। দরপতন হয় ৯০ পয়সা। লেনদেনে দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে ছিল বিচ হ্যাচারি ও এনআরবি ব্যাংক। দরবৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স ও প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। দরপতনে ছিল মাইডাস ফাইন্যান্স, এসএএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড, এনআরবি ব্যাংক।
অপরদিকে সিএসইতে আজ ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকার। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২০১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৫টি শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে, কমেছে ১১৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৩টির দর।
আজ সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৩৬.৯৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৬৮৬ পয়েন্টে। সিএসসিএক্স সূচক কমেছে ১৯ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট।
Comments