চার দপ্তরের দায়িত্ব এক কাঁধে, সেবায় অনন্য ইউএনও নু এমং মারমা মং

চারটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের দায়িত্ব একাই সামলিয়েও জনগণের সেবায় পিছপা হননি কুমিল্লার বরুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নু এমং মারমা মং। ইউএনও কার্যালয়ের পাশাপাশি উপজেলা পরিষদের প্রশাসক, পৌরসভার প্রশাসক এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। সম্প্রতি নতুন এসিল্যান্ড যোগদান করায় একটি দপ্তরের চাপ কমলেও এখনো নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন এ প্রশাসনিক কর্মকর্তা।
২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর বরুড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন নু এমং মারমা মং। যোগদানের পর থেকেই দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি। শুধু দাফতরিক দায়িত্ব নয়, উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতির দায়িত্বও পালন করছেন তিনি।
সরকার পতনের পর গত ৫ আগস্ট উপজেলা চেয়ারম্যান অপসারিত হলে উপজেলা পরিষদ প্রশাসকের দায়িত্বভার নেন তিনি। একইভাবে পৌর মেয়রকে অপসারণ করা হলে বরুড়া পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পান ইউএনও। গত ৭ জুলাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বদলিজনিত বিদায়ের পর এক মাসের জন্য ওই দায়িত্বও পালন করেন তিনি। ফলে এক পর্যায়ে চারটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের দায়িত্ব এসে পড়ে এই কর্মকর্তার কাঁধে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ইউএনও অফিস ও উপজেলা পরিষদ একই ভবনে থাকায় তিনি সার্বক্ষণিক দুই অফিসের দায়িত্ব পালন করছেন। সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন পৌরসভা অফিসে বসে সেবা দিচ্ছেন জনগণকে। দিনভর বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজের পাশাপাশি সন্ধ্যা পর্যন্ত অফিসে থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ অন্যান্য কার্যক্রমও সম্পন্ন করেন তিনি।
উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দাফতরিক কাজের পাশাপাশি তিনি অসহায় পরিবারের এক শিশুকে ভারী কাজ থেকে উদ্ধার করে স্কুলে ভর্তি করানো ও আর্থিক সহায়তা প্রদান, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, দুর্ঘটনাগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ানো, জলাবদ্ধতা নিরসন, মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ নানাবিধ সামাজিক কর্মকাণ্ড ও পরিচালনা করে আসছেন।
এ প্রসঙ্গে ইউএনও নু এমং মারমা মং বলেন, নিয়মতান্ত্রিকভাবেই চারটি দপ্তরের দায়িত্ব আমার ওপর পড়েছিল। গত ৬ আগস্ট নতুন এসিল্যান্ড যোগ দেওয়ায় একটি দপ্তরের চাপ কমেছে। প্রতিটি দায়িত্বই সুষ্ঠুভাবে পালন করার চেষ্টা করছি। যদিও এটা বড় চাপ, তারপরও সরকারি বিধান অনুযায়ী কাজ করতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, উপজেলায় যোগদানের পর থেকেই আন্তরিকতার সঙ্গে জনগণের সেবা করার চেষ্টা করছি। দায়িত্বের আকার বড় বা ছোট নয়, কাজটিকে আন্তরিকভাবে করাটাই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। যতদিন এখানে আছি, জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাব। আমি চাই, কেউ যেন কোনো হয়রানির শিকার না হন। জনগণ আমাকে আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করছে, এজন্য আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
Comments