অবশেষে বরফ গললো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখীতে

ব্যবধানটা এক সপ্তাহের। এরই মধ্যে বিএনপি নেত্রী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা ও এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহর মধ্যে 'মনোমালিন্যের' বরফ গলতে শুরু করেছে। নেপথ্যে ছিল জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিখ্যাত ছানামুখী মিষ্টি।
হাসনাত আব্দুল্লাহ তার বক্তব্যে বলেছেন, 'আমাদের সঙ্গে একটা মনোমালিন্য হয়েছে রুমিন ফারহানার। তিনি অনেকদিন ধরে রাজনীতি করছেন। আমরা উনার এলাকায় আসছি শুনে উনি উনার লোকজন পাঠিয়েছেন। আমাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না খবর নিয়েছেন। আমাদের জন্য তিনি কিছু উপহারও পাঠিয়েছেন। সেইসাথে ছানামুখী মিষ্টিও পাঠিয়েছেন। এটি রাজনীতির জন্য একটি পজিটিভ বার্তা। এটাকে অবশ্য আমাদের স্বাগত জানানো উচিত।'
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনপিসি) এর মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ একটি উঠান বৈঠকে যোগ দিতে শনিবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় যান।
উপজেলার ছতুরগ্রামে গ্রামে উঠান বৈঠকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রুমিন ফারহানা বিষয়ে কথা বলে হাসনাত আব্দুল্লাহ। ওই উপজেলার ইসলামপুরে বিএনপির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার পৈতৃক বাড়ি।
বৈঠকে হাসনাত আবদুল্লাহ আরো বলেন, 'আমরা ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশে কোনো সহিংসতার দিকে ফিরে যেতে চাই না। আমাদের মধ্যে ভিন্নমত থাকবে, ভিন্নমত হচ্ছে গণতন্ত্রের শক্তি। অন্যদিকে সহিংসতা হচ্ছে গণতন্ত্রের শত্রু। কেউ যদি আমাদের আক্রোশমূলক কথা বলে আমরা গণতান্ত্রিকভাবে তার জবাব দেব। কেউ যদি আমাদের ইতিবাচক বার্তা দেয় আমাদের অবশ্যই গ্রহণ করা উচিত।'
রুমিন ফারহানার ব্যক্তিগত সহকারী জাকির হোসেন শুভ উপহার পাঠানোর বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, দলীয় কর্মীরা এনসিপি নেতাদের খোঁজখবর নিয়েছেন এবং তাদের জন্য ছানামুখী পাঠানো হয়েছে।
গত ২৪ আগস্ট বিজয়নগরের আসন পুনর্বিন্যাস নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কার্যালয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানা অভিযোগ করেন, শুনানি করার সময় তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। অন্যদিকে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতা বিজয়নগরের বাসিন্দা মো. আতাউল্লাহ অভিযোগ করেন, রুমিন ফারহানা ও তার লোকজনের আক্রমণের শিকার হয়েছেন তিনি।
এদিকে এ ঘটনার পর রুমিন ফারহানাকে বিএনপির আওয়ামী বিষয়ক সম্পাদক বলে মন্তব্য করেন এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ। এর পরিপ্রেক্ষিতে রুমিন ফারহানাও হাসনাত আব্দুল্লাহর কয়েকটি পুরনো ছবি পোস্ট করে 'এই সেই ফকিন্নির বাচ্চাটা না' বলে মন্তব্য করেন। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আলোচনা-সমালোচনা হয়। যদিও পরে রুমিন ফারহানা তার অনাকাঙ্ক্ষিত শব্দচয়নে কেউ কষ্ট পেলে দুঃখ প্রকাশ করেন।
Comments