১১৪ বছর বয়সে চলে গেলেন বিশ্বের প্রবীণতম দৌড়বিদ

বিশ্বজুড়ে দৌড়বিদদের জন্য অনুপ্রেরণার প্রতীক হিসেবে পরিচিত ফৌজা সিং আর নেই। সোমবার (১৪ জুলাই) ভারতের পাঞ্জাবে সড়ক দুর্ঘটনায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই কিংবদন্তি অ্যাথলেট। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১১৪ বছর।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানা যায়, পাঞ্জাবের জলন্ধর-পাঠানকোট মহাসড়কে সোমবার (১৪ জুলাই) বিকেলবেলায় একটি গাড়ির ধাক্কায় গুরুতর আহত হন তিনি। মাথায় আঘাত পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকেরা সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বর্তমানে তার মরদেহ স্থানীয় মর্গে রাখা হয়েছে। প্রবাসে থাকা তার সন্তানদের ফেরার পর সম্পন্ন হবে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া।
ফৌজা সিংয়ের মৃত্যুর খবরে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন পাঞ্জাবের রাজ্যপাল গুলাব চাঁদ কাটারিয়া। শোকবার্তায় তিনি বলেন,'সর্দার ফৌজা সিংজির প্রয়াণে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তিনি ছিলেন এক অনন্য দৃষ্টান্ত, যিনি শতায়ু বয়সেও সমাজে সচেতনতা তৈরিতে সক্রিয় ছিলেন। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে 'নেশামুক্ত রঙলা পাঞ্জাব' অভিযানে তার সঙ্গে পদযাত্রায় অংশ নেওয়ার সেই স্মৃতি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।'
১৯১১ সালের ১ এপ্রিল পাঞ্জাবের জলন্ধরের বেয়াস গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ফৌজা সিং। ব্যক্তিগত জীবনের নানা বেদনা, সন্তান ও স্ত্রীর মৃত্যু—তাকে নতুন অর্থ খুঁজে পেতে অনুপ্রাণিত করে। ৮৯ বছর বয়সে দৌড়ের জগতে পা রাখেন তিনি। ২০০০ সালে লন্ডন ম্যারাথনে অংশ নিয়ে শুরু হয় তার প্রতিযোগিতামূলক দৌড়ের পথচলা। এরপর লন্ডন, নিউইয়র্ক ও টরন্টোসহ বিভিন্ন শহরে মোট নয়টি পূর্ণ ম্যারাথনে অংশ নেন। ২০০৩ সালে টরন্টো ম্যারাথনে তার সেরা দৌড়ের সময় ছিল ৫ ঘণ্টা ৪০ মিনিট ৪ সেকেন্ড।
তার কৃতিত্ব শুধু অ্যাথলেটিকসেই সীমাবদ্ধ ছিল না বরং তিনি হয়ে উঠেছিলেন বিশ্বব্যাপী এক মানবিক ও সাংস্কৃতিক প্রতীক। ২০০৪ সালের এথেন্স ও ২০১২ সালের লন্ডন অলিম্পিকে অলিম্পিক মশাল বহনের সম্মান পান তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ব্র্যান্ডের একটি বিজ্ঞাপনে কিংবদন্তি ডেভিড বেকহ্যাম ও মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে অংশ নিয়ে তিনি বিশ্বমাধ্যমেও নজর কাড়েন।
Comments