রাজীব কুমার দাশ-এর কবিতা

দাড়ি উবাচ
-অলিন্দ যাযাবর
" সকলকিছু একসময় পেকে যায় ঝড়ে পড়ে
পেকে যাবার পরে থমকে দাঁড়ায় সময় থাকে না কোনোকিছুতে নতুন করে উন্মত্ততা কোলাহল;
আম পাকে জাম পাকে কাঁঠাল পাকে সংসার পেকে হয়ে পড়ে ফিকে ভাবলেশহীন।
স্মৃতিরাও একসময় পেকে যায় ঝড়ে পড়ে
চলে যায় অগস্ত্যযাত্রা পথে;
চির অচেনা মানুষের নিজের বলে থাকে না
কোনোকিছুতে কোনোকিছু
মানুষ চিরায়ত ইচ্ছে অনিচ্ছের কাছে পরাধীন। "
০২.০৮.২০২৫
কবি,অলিন্দ যাযাবর জাতীয় সংসদ ভবনের চবুতর ধরে ভাবলেশহীন উদ্দেশ্যহীনভাবে হেঁটে চলেছেন। চোখে মুখে দেশ বিদেশ দিয়ে বিস্তর চিন্তা জেঁকে বসেছে। বাস্তু সংবেদন টেলিপ্যাথিক বিভ্রম চিন্তা নিয়েও বেশ সতর্ক। তবুও কবি প্রচুর ঘেমে চলেছেন। পাতলুন কিছুটা ঢিলেঢালা করে খোলা মাঠে বসে পড়েছেন।
শাহবাগী আবেগী ছাত্র অছাত্র শান্ত-অশান্ত উন্মত্ত জনতার মতো করে বসে পড়েছেন তো পড়েছেনই — পাতলুন ভিজে যায় যাক, খুলে যায় যাক। কবি অলিন্দ যাযাবর দেশ শান্তি পাকাপাকি চুক্তি ছাড়া সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা একখণ্ড চবুতর ছেড়ে কিছুতেই উঠছেন না।
কবি অলিন্দ একসময় বাম রাজনীতিতে হাতে কলমে বুদ্ধি পাকালেও রাজনীতি সুফলে — সাদাসিধে সাধারণের মাঝে অসাধারণ কিছু সুফল ও সফলতা দেশ চরিত্রে বয়ে আনেনি দেখে, রাজনীতি ছেড়ে নির্বিবাদ হাতে কলম তুলে নেন। দেশ ভবিতব্য জীবন চরিত্রে পাকা পাকাপাকি রাজনীতি সমরনীতি শিক্ষানীতি অর্থনীতি আইন ও নীতি বাদে — কাঁচা আবেগের বশে একসময় নীতি নৈতিকতার স্হানে অন্য দশজনের মতো করে হাঁটলেও দাড়ি পাকার পরে সবকিছুতে মেপে চলেন।
কবি লিখে চলেছেন —
" একগাল পাকা কাশবন দাড়ি দুলছে বাতাসে
নিরবচ্ছিন্ন ফুলকা ফুৎকার টেনে চলেছে বদ্বীপের ঊনজীবন
মানুষের দেখার কোথাও কেউ নেই কোথাও নেই একটু ভালো দেখাদেখি
মাতামাতি আবেগের শিহরণ;
মানুষ বাদে ভালো নেই গড ঈশ্বর খোদা জীবনেশ্বর
খোদা না ভজিত যদি মানুষের মন!
খোদা কী — চাওয়া পাওয়া লোভে
মানুষের মতো করে বেছে বেছে খুন করিত যখন তখন ?। "
কিছুটা পেকে যাবার পরে যা থাকে অবশিষ্ট তা নিয়ে তা নিয়ে মানুষ ছুটে চলে দিগ্বিদিক অবিরত। শূন্য সংসদ, কেপিআই নিরাপত্তা নিয়ে কারোর এখন জবাবদিহিতা নেই। সংসদ সার্জেন্ট এট আর্মস এসে বলতে পারবেন না —
কবি সরে যান, আপনার কলমও হতে পারে মহান সংসদের নিরাপত্তা ঝুঁকি।
কবি কলম হয়ে যেতে পারে তাৎক্ষণিক ইরানের হাইপারসনিক মিসাইল।
দিন পেকে সন্ধ্যে হয়। আকাশে চাঁদ উঠে। চাঁদ পেকে মধ্যগগনে হেসে উঠে আকাশ সাজিয়ে দেয় সংসার। কবি চারিদিকে তাকায়। সংসদ চবুতর চরিদিকে ফাঁকা নিশিতা অন্ধকার, হেঁটে চলে কিছু নিশি বালিকা, তারও কিছু দূরে গেয়ে চলে হুক্কাহুয়া শেয়াল সংসার।
মানুষের চেতনায় জং ধরে। জং ধরে মনের ইঞ্জিনে। শেষ রাতের দিকে বৃষ্টি নামে। খোলা আকাশে কবি ভিজে চলেছেন। আকাশের ততক্ষণে ফুরিয়ে গেছে চাঁদের প্রয়োজন । দিনের আলোতে চাঁদ পেকে গেছে। দিবস আলোয় চাঁদ এবার অস্তিত্বহীন।
কবি উঠে দাঁড়ায়। হেঁটে চলে কবি জীবন। কবি যাবে কোথায়? কার ধারে কাছে হবে কবি ঠিকানা বসতি। কবি যাবে কার কাছে এখন? এখানে কবিতে মব কবি, সকলেতে অখন্ড হিংসে ভরতি মন, রাষ্ট্রের ভেতরে রাষ্ট্র, ভাষাতে অসংখ্য আগাছা অস্থির বিনোদন। এখানের সবাই বেলাজ বেহায়া বেদে বেহেমিয়ান। এখানের রাজনীতি কবিরা গালি দিয়ে কবিতার পংক্তি আওড়ান। অস্থির ছাত্র সমাজ পড়ালেখা বাদে ঔদ্ধত্য বৈষয়িক সুখ বেছে নেন। নিজের খেয়ে না খেয়ে পরের নানান ফরমায়েশ ফরমালিনে পেকে অকাল কুষ্মাণ্ড হয়ে তারা ঝড়ে পড়েন। মহান স্যার যোগ্যতা কোনোদিন হবে না জেনে আগাম জোর করে নিজেদের স্যার বলিয়ে ছেড়ে দেন।
পাকাপোক্ত পাকাপাকিতে ত্রস্তব্যস্ত
নানাবিধ আধা সিকি কাঁচা অস্হায়ী ঐতিহাসিক জাতীয় চরিত্র— কখন যে হবেন মহান পাকা দাড়ির মতো পবিত্র; তা না জেনে সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা চবুতরে —কবি অলিন্দ যাযাবর মুখে সবাই জানতে চানঃ
" কবি অলিন্দ! দাড়ি পাকছে কেন? "
Comments