হাড়কাঁপানো শীতে কাবু ফরিদপুর: খড়কুটো জ্বালিয়ে উষ্ণতা খুঁজছে শিশুরা
হাড়কাঁপানো শীতে কাবু ফরিদপুর: খড়কুটো জ্বালিয়ে উষ্ণতা খুঁজছে শিশুরা
টানা ছয় দিন ধরে তাপমাত্রা কমতে থাকায় ফরিদপুরে জেঁকে বসেছে তীব্র শীত। গত চার দিন ধরে সূর্যের দেখা না মেলায় এবং বাতাসে অত্যধিক আর্দ্রতার কারণে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। এই কনকনে ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে জেলার বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে চরাঞ্চলের শিশুদের খড়কুটো ও গাছের পাতা জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা যাচ্ছে।
বুধবার সকালে সদরপুর উপজেলার চর সুলতানপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের পাশে দেখা যায় একদল শিশু জড়ো হয়ে আগুন পোহাচ্ছে। আশপাশ থেকে কুড়িয়ে আনা গাছের শুকনা পাতা, ডালপালা আর কাগজ পুড়িয়ে শরীরে একটু উষ্ণতা দেওয়ার চেষ্টা করছে তারা। সেখানে থাকা ৭ বছর বয়সী শিশু রাতুল ইসলাম জানায় তার কষ্টের কথা। সে বলে, "অনেক ঠান্ডা, অনেক দিন ধরে সূর্যের আলো দেখা যায় না। এই ঠান্ডায় দেখে সবাই আগুন জ্বালিয়ে গোল হয়ে বসে তাপ নেয়। এইজন্য আমরা সবাই আজ সকালে আশপাশ থেকে লাকড়ি গুছিয়ে আগুন জ্বালিয়ে তাপ নিচ্ছি।"
রতুলের মতো অনেক শিশুরই এখন সকাল কাটে আগুনের কুণ্ডলীকে ঘিরে, কারণ টানা কয়েকদিনের কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় স্বাভাবিক চলাফেরা দুঃসহ হয়ে পড়েছে। ফরিদপুর আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, আজ বুধবার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৮ শতাংশ। গত সোমবার তাপমাত্রা ছিল ১৩.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং মঙ্গলবার ছিল ১২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ ধারাবাহিকভাবে তাপমাত্রা কমছে, যা শীতের তীব্রতাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে বহুগুণ।
তীব্র শীতের প্রভাব পড়েছে কৃষি ও শ্রমজীবী মানুষের ওপর। সদরপুরের সবজি চাষি আক্কাস মাতুব্বর জানান, মাঠে কাজ করতে গেলে মনে হয় "বরফের বাতাস" গায়ে লাগছে। অন্যদিকে ভ্যানচালক ইসাক মোল্লা জানান, রাস্তায় মানুষ না থাকায় আয় কমে গেছে, তবুও পেটের দায়ে মোটা কাপড় পরে রাস্তায় নামতে হচ্ছে।
জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সামাদুল হক জানান, ফরিদপুরে আজ বুধবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উত্তরীয় বাতাস ও মেঘলা আকাশের কারণে কুয়াশা বেড়েছে এবং সূর্যের দেখা মিলছে না। আরও ২-৩ দিন এমন পরিস্থিতি থাকতে পারে, তবে আকাশ পরিষ্কার হলে দিনের তাপমাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
Comments