পাকিস্তানি শ্রমিকদের উপসাগরীয় দেশগুলোতে চাকরির জন্য প্রস্তুত করছে দুবাই

দুবাই-ভিত্তিক একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কোডেড মাইন্ডস, পাঞ্জাব ব্যাংক এর সঙ্গে যৌথভাবে এমন একটি উদ্যোগ শুরু করেছে যা পাকিস্তানি শ্রমজীবী কর্মীদের সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ও অন্যান্য উপসাগরীয় দেশগুলোতে চাকরির জন্য প্রস্তুত করছে।
এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে সম্প্রতি গুজরানওয়ালায় প্রথম প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ২৭৩ জন প্লাম্বার, ইলেকট্রিশিয়ান ও কার্পেন্টার অংশগ্রহণ করেছেন, যারা পাঞ্জাব টেকনিক্যাল অ্যান্ড ভোকেশনাল ট্রেনিং অথরিটি (TVTA)-এর মাধ্যমে বিদেশে চাকরি পেয়েছেন।
প্রশিক্ষণে যা থাকছে:
> অর্থ পাঠানো (রেমিট্যান্স) ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা
> উপসাগরীয় দেশগুলোর শ্রম আইন
> বহুসাংস্কৃতিক কর্মস্থলে আচরণ
> স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা
> সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের সতর্কতা
বর্তমানে ২৫ লাখের বেশি পাকিস্তানি গালফ অঞ্চলে কর্মরত আছেন, যাদের বেশিরভাগ নির্মাণ, উৎপাদন, হসপিটালিটি ও সেবা খাতে কাজ করছেন। পাকিস্তানের ব্যুরো অফ ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অনুযায়ী, FY2025 (জুলাই ২০২৪ – জুন ২০২৫) সময়ে প্রবাসী কর্মীরা প্রায় ৩৪.৯ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন, যার বড় একটি অংশ এসেছে ইউএই ও সৌদি আরব থেকে।
তবে শ্রম অধিকার গ্রুপগুলো বলছে, অনেক কর্মী নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে সমস্যায় পড়েন, চুক্তির শর্ত সম্পর্কে সচেতন নন কিংবা ভুয়া রিক্রুটমেন্টের ফাঁদে পড়েন।
কোডেড মাইন্ডস-এর আমনা খইশগি বলেন, "পাকিস্তানি শ্রমিকরা দক্ষ হলেও আন্তর্জাতিক চাকরির বাস্তবতা সম্পর্কে সচেতন নয়। এই প্রশিক্ষণ সেই ব্যবধান কমানোর চেষ্টা করছে।"
পাঞ্জাব ব্যাংক এর প্রেসিডেন্ট জাফর মাসুদ জানান, এই কর্মসূচি শুধু কর্মীদের কল্যাণই নয়, দেশের বৈদেশিক মুদ্রা প্রবাহ রক্ষার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ। "আমাদের শ্রমিকরা শুধু পরিবারের উপার্জনকারীই নয়, দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহের বড় উৎস। তাদের প্রস্তুত করে পাঠানো হলে বিদেশে সফল হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে এবং তারা ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহারেও উৎসাহিত হয়।"
প্রশিক্ষণে অংশ নিয়ে অনেক শ্রমিক আত্মবিশ্বাসী বোধ করছেন। নাবিল আহমেদ, লাহোরের ২৪ বছর বয়সী এক ইলেকট্রিশিয়ান যিনি দুবাই যাচ্ছেন, বলেন: "আমি কখনো আমার শহরের বাইরে কাজ করিনি। এই প্রশিক্ষণ আমাকে অনেক পরিষ্কার ধারণা দিয়েছে যে কীভাবে বিদেশে জীবন সামলাতে হয়।"
আমনা খইশগি জানান, এখন পর্যন্ত প্রায় ৫,০০০ কর্মী এই প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, তবে তিনি চান সরকার এটি আবশ্যিক করুক। "এই ওয়ার্কশপগুলোকে যেন স্কিল ট্রেনিংয়ের মতোই বাধ্যতামূলক করা হয়," তিনি বলেন এবং পাকিস্তানের অভিবাসন ব্যুরো ও গন্তব্য দেশের সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানান এই প্রশিক্ষণকে মানদণ্ডে পরিণত করার জন্য।
Comments