ইতালিতে অবৈধ অভিবাসন রোধে অভিযান জোরদার, প্রত্যাবাসন হার বেড়েছে ১২%

ইতালিতে অবৈধভাবে বসবাসরত অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর কার্যক্রম জোরদার করেছে দেশটির সরকার। চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে ২০২৪ সালের তুলনায় প্রত্যাবাসন হার বেড়েছে প্রায় ১২ শতাংশ। ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ানতেদোসি এ তথ্য জানিয়েছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ২০২৪ সালে ৫,৪০০ জন অভিবাসীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১৬% বেশি। ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত এই সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় ১২% বেশি হারে বাড়ছে। সম্প্রতি এক সপ্তাহে ১২২ জন অভিবাসীকে প্রত্যাবাসন আওতায় পাঠানো হয়েছে।
ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (ভিমিনালে) জানায়, ২০২৪ সালে সমুদ্রপথে ইতালিতে এসেছে ৬৬,৩১৭ জন অভিবাসী, যা ২০২৩ সালের তুলনায় প্রায় অর্ধেক। এই হ্রাসের পেছনে সরকারের কঠোর অভিবাসন নীতি, দ্বিপক্ষীয় চুক্তি এবং দ্রুত রিমপ্যাট্রি কার্যক্রম ভূমিকা রেখেছে।
এদিকে পুরো ইউরোপজুড়ে প্রত্যাবাসন কার্যক্রম এখনও চ্যালেঞ্জের মুখে। ইউরোপীয় পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ৪,৫৩,৮৪০ জনের বিরুদ্ধে বহিষ্কারের আদেশ জারি হলেও বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র ২৬%। এ কার্যক্রমে জড়িত থাকে স্থানীয় পুলিশ, কোয়েস্টুরা, কনস্যুলার দপ্তরসহ একাধিক প্রশাসনিক সংস্থা, যার ফলে প্রক্রিয়া দীর্ঘ হয়।
ইতালি এখন অভিবাসন নীতির অংশ হিসেবে আলবেনিয়ায় দুটি ডিটেনশন সেন্টার স্থাপন করেছে, যেখানে অভিবাসীদের ১৮ মাস পর্যন্ত আটকে রাখার সুযোগ রয়েছে। ইতালির সরকার একে 'প্রতিরক্ষামূলক কৌশল' হিসেবে দেখলেও, মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছে।
ইতালিতে অবৈধভাবে প্রবেশকারী অভিবাসীদের মধ্যে বাংলাদেশিরা সংখ্যায় শীর্ষে। শুধু ২০২৪ সালেই এই সংখ্যা ছিল ১৩,৭৭৯ জন। ইতালির অভ্যন্তরীণ তথ্যমতে, প্রায় ৭০ হাজার বাংলাদেশি বর্তমানে অবৈধভাবে ইতালিতে বসবাস করছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতে, প্রত্যাবাসন কার্যক্রমে ১২২ জনকে এক সপ্তাহে ফেরত পাঠানো প্রশাসনিক সাফল্য নয়, বরং এটি অভিবাসন কৌশলের ধারাবাহিক বাস্তবায়নের অংশ। সরকার অভিবাসন ইস্যুতে আরও কঠোর ও ফলপ্রসূ পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে।
Comments