বনবিভাগের সারারাতের চেষ্টায় সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের কলমতেজী টহল ফাঁড়ি-সংলগ্ন বনে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। রোববার (২৩ মার্চ) ভোর ৪টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। নিশ্চিত করেছেন সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী নুরুল আমীন।
তিনি বলেন, বন বিভাগের কর্মীরা সারা রাত চেষ্টা চালিয়ে ভোর ৪ টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছেন। তবে গাছের শুকনো পাতা ও ডাল-পালার কারণে আগুন পুরোপুরি নেভানো যায়নি এখনও।
কাজী নুরুল আমীন জানান, শনিবার সন্ধ্যায় ফায়ার সার্ভিস ফিরে যাওয়ার পর বন বিভাগের কর্মীরা সারা রাত আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছেন। বন বিভাগের নিজস্ব পাম্প ও পাইপ লাইনের মাধ্যমে আগুনস্থলে পানি দেওয়া হয়েছে। বন রক্ষী ও বন কর্মকর্তাদের সঙ্গে স্থানীয় অর্ধ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক রাতভর আগুন নিয়ন্ত্রণে আমাদের সঙ্গে কাজ করেছেন। আগুন এখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পরে রোববার সকাল ৮টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আবারও ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছেছেন। বর্তমানে আগুন পুরোপুরি নেভাতে কাজ করছেন তারা।
শরণখোলা ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা নাজমুল হক জানান, রোববার সকাল ৬টার দিকে শরণখোলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেছে। এছাড়াও মোংলা, মোড়লগঞ্জ, কচুয়া ও বাগেরহাট থেকে আরও ৪টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গেছে। এছাড়াও ফায়ার সার্ভিস বনবিভাগসহ অন্য অন্যান্য বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থলে আছেন।
এর আগে শনিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের কলম তেজী এলাকায় শনিবার দুপুরে আগুন দেখতে পায় টহলরত বনকর্মীরা। পরে খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ও চাঁদপাই রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তাসহ সহকারী বন সংরক্ষক।
পরবর্তীতে আগুন নেভাতে বন বিভাগের কর্মীদের পাশাপাশি ভিলেজ কনজারভেশন ফোরাম, ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম, কমিউনিটি পেট্রল গ্রুপের শতাধিক সদস্য ছাড়াও স্বেচ্ছাসেবকরা কাজে যোগ দেন। ইতোমধ্যে আগুনের ছড়িয়ে পড়া রোধে ঘটনাস্থলের চারপাশে 'ফায়ার লাইন' তৈরি করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, অগ্নিকাণ্ডস্থল নদী বা খাল থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার ভেতরে হওয়ায় সরাসরি পানি সরবরাহ করা কঠিন। তবে আগুন কেবল বনের সমতলে রয়েছে, উপরের দিকে ছড়ায়নি। ইতোমধ্যে বন বিভাগের নিজস্ব ফায়ার ইঞ্জিনের মাধ্যমে এক কিলোমিটার পর্যন্ত পানি পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় ৩ কিলোমিটার দূরে অগ্নিকাণ্ডস্থলে পানি পৌঁছানোর প্রচেষ্টা চলছে, যা ইতোমধ্যে সফল হয়েছে।
Comments