সফল হতে যে বিষয়গুলো গোপন রাখার পরামর্শ মনোবিজ্ঞানীদের

অধিকাংশ মানুষকে নিজের কাছে ভালো মনে হতে পারে। এর অর্থ এই নয় যে, তাদের সবাই আপনার শুভাকাঙ্ক্ষী। বিষয়টি যত তাড়াতাড়ি বুঝতে পারবেন ততই ভালো। বাস্তবিক অর্থে, বেশিরভাগ মানুষ 'বন্ধুসুলভ' হয়, কিন্তু তাদের মনে আপনার জন্য মোটেও ভালো কোনো উদ্দেশ্য নাও থাকতে পারে। বন্ধু, সহকর্মী বা আপনার আশপাশে থাকা মানুষগুলো মূলত এমনই।
ব্যক্তিজীবনে সফল হওয়ার জন্য কিছু বিষয় কেবল নিজের কাছেই রাখতে হয়। যা কখনো অন্যদের সঙ্গে ভাগ করতে নেই। সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী মনোবিজ্ঞানীর এমন কয়েকটি বিষয় জানিয়েছে। এবার তাহলে সেসব ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।
দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা অর্জন হওয়ার আগে প্রকাশ না করা: এমন অনেক পরিকল্পনা বা লক্ষ্য থাকে, যা অর্জন হতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হয়। মনোবিজ্ঞানীরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন, লক্ষ্য সম্পর্কে অতিরিক্ত কথা বলা মস্তিস্কের সাফল্যে মিথ্যা অনুভূতিতে প্ররোচিত করতে পারে। যাকে সামাজিক বাস্তবতা বলা হয়। এর অর্থ, মস্তিষ্ক শুধুই সাফল্যের কথা বলার জন্য আপনাকে উৎসাহিত করতে পারে, বাস্তবে তা অর্জন নাও হতে পারে।
এমনটা হলে তা আপনার উৎসাহকে হ্রাস করে এবং অর্জনের পথ থেকে দূরত্বে ঠেলে দেয়। এ কারণে লক্ষ্যগুলো গোপন রাখার কথা বলা হয়। এতে তা অর্জনে মনোযোগও থাকে।
আয় ও সম্পদ প্রকাশ না করা: আপনার আয় কেমন, কতটা সম্পদ আছে বা অর্জন করতে যাচ্ছেন কিংবা আর্থিক অবস্থা নিয়ে খোলামেলা কথা বলা ঠিক নয়। এতে যেমন অপ্রয়োজনীয় অনেক কথা বলা হয় বা অন্যদের সঙ্গে তুলনা হতে পারে; বিশেষ করে কর্মস্থলে। অর্থ সংক্রান্ত বিষয় প্রায়ই হিংসা বা শ্রেষ্ঠত্বের অনুভূতি তৈরি করে। এ জন্য এসব বিষয় গোপন রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ।
প্রেমের সম্পর্কে তথ্য ভাগ না করা: প্রায়ই বলা হয় 'বদ নজর' বা নজর আসল (দুষ্ট নজর)। অনেকের সঙ্গেও এমনটা হয়েও থাকে। বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাপারে নির্দিষ্ট কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলা স্বাভাবিক হলেও অতিরিক্ত কথা বলা হিতে বিপরীত হতে পরে। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, বাইরের মানুষদের সঙ্গে ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কথা বললে সঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্কে বিভেদ সৃষ্টি হতে পারে। আস্থা কমে যেতে পারে। আপনার দৃষ্টিভঙ্গি বোঝার বিপরীতে আপনাকে বিচার করা শুরু করতে পারে। অনেক সময় বিচ্ছেদে গড়ায় সম্পর্ক। এ জন্য সম্পর্কের গোপনীয়তা রক্ষা করার কথা বলা হয়।
নিজের বিনয়ী আচরণ নিয়ে কথা না বলা: অনেকেই আছেন আপনার বিনয়ী আচরণ, ভদ্রতা ও ভালো কাজ নিয়ে কথা বলে। প্রায় মানুষই নিজের সম্পর্কে ভালো কথা শুনলে কিছুটা গর্ব করেন। কিন্তু এতে অনেক সময় অপ্রয়োজনীয় বিচার ও তুলনার সৃষ্টি হয়। এ জন্য ভালো কাজ গোপনে করাই ভালো। গোপনে অন্যকে সহায়তা করলে এটি কেবল অন্যদের উপকার করে না, বরং আপনার অহংকারও নিয়ন্ত্রণও রাখে।
পরবর্তী লক্ষ্য নিয়ে কথা না বলা: ব্যক্তিগত কিংবা পেশাগত, কোনো ক্ষেত্রেই পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে কথা বলতে নেই। কর্মস্থলে হলে, অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরির প্রস্তাব পাওয়া, চাকরি ছেড়ে দেয়া, নতুন শহরে চলে যাওয়া বা বদলি হওয়ার মতো বিষয় কারও সঙ্গে শেয়ার করতে নেই। এসব বিষয়ে অন্যদের সঙ্গে আলোচনা করলে আপনার উদ্দেশ্য সফল নাও হতে পারে। আপনাকে নিরুৎসাহিত করা, অযাচিত পরামর্শ দেয়া কিংবা কোনোভাবে জটিলতা সৃষ্টিও হতে পারে। কেউ কেউ আবার আপনার সঙ্গে প্রতিযোগিতাও করতে পারে। এ জন্য এক্ষেত্রে সাবধান।
Comments