রিউমেটিক ফিভার কী? জেনে নিন এর কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায়
![](https://dhakajournal.com/sites/default/files/styles/big_1/public/images/2025/02/05/fever.jpg?itok=yWL5ieAm×tamp=1738758309)
রিউমেটিক ফিভার বা বাতজ্বর একটি প্রদাহজনিত রোগ, যা অপর্যাপ্তভাবে চিকিৎসা করা স্ট্রেপ থ্রোট বা স্কারলেট জ্বরের কারণে হতে পারে। এটি সাধারণত ৫ থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়, তবে প্রাপ্তবয়স্কদেরও আক্রান্ত করার সম্ভাবনা থাকে। যদি ঠিকমতো চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে হৃদরোগসহ দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। মায়ো ক্লিনিকের এক প্রতিবেদনে রিউমেটিক ফিভার এবং এই রোগের চিকিৎসা নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেছেন চিকিৎসকরা।
রিউমেটিক ফিভারের লক্ষণ: স্ট্রেপ থ্রোট সংক্রমণের ২ থেকে ৪ সপ্তাহ পর এই রোগের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। লক্ষণগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
- আক্রান্ত ব্যক্তির জ্বর হবে সেই সঙ্গে হাঁটু, গোড়ালি, কনুই ও কবজিতে ব্যথা ও ফুলে যাবে।
- অনেক সময় বুকের ব্যথা হয়।
- অতিরিক্ত ক্লান্তি বোধ করা।
- ত্বকের ছোট এবং ব্যথাহীন গুটি দেখা দিবে।
- বাইরে ছড়িয়ে পড়া লালচে চামড়ার ফুসকুড়ি।
যেসব কারণে রিউমেটিক ফিভার হতে পারে: রিউমেটিক ফিভার গ্রুপ এ স্ট্রেপ্টোকক্কাস ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ফলে হয়। যা স্ট্রেপ থ্রোট ও স্কারলেট জ্বর সৃষ্টি করে। যেসব কারণে এই রোগ হতে পারে:
জিনগত কারণ: কিছু মানুষের শরীরে এমন জিন থাকতে পারে যা তাদের রিউমেটিক ফিভারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ায়।
স্ট্রেপ ব্যাকটেরিয়ার নির্দিষ্ট ধরন: কিছু স্ট্রেপ ব্যাকটেরিয়া অন্যদের তুলনায় বেশি ক্ষতিকর।
পরিবেশগত কারণ: ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং অপ্রতুল স্বাস্থ্যসেবা রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
জটিলতা: রিউমেটিক ফিভার হৃদযন্ত্র, জয়েন্ট ও টিস্যুতে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি করতে পারে। এর ফলে রিউমাটিক হার্ট ডিজিজ হতে পারে, যা কয়েক বছর বা কয়েক দশক পরেও প্রকাশ পেতে পারে।
সম্ভাব্য জটিলতা:
- হার্টের ভালভের সংকীর্ণতা (ভালভ স্টেনোসিস)
- হার্টের ভালভ থেকে রক্তের উল্টো প্রবাহ (ভালভ রিজার্জিটেশন)
- হৃদপেশীর দুর্বলতা
- অনিয়মিত ও দ্রুত হার্টবিট (এট্রিয়াল ফাইব্রিলেশন)
- হার্ট ফেইলিউর
প্রতিরোধের উপায়: রিউমেটিক ফিভার প্রতিরোধের জন্য চিকিৎসকরা কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছেন। চিকিৎসকদের পরামর্শ মানলে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। রিউমেটিক ফিভার প্রতিরোধে করণীয়:
- স্ট্রেপ থ্রোট বা স্কারলেট জ্বর হলে দ্রুত চিকিৎসা নিন।
- ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সম্পূর্ণ অ্যান্টিবায়োটিক কোর্স শেষ করুন।
- পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ বজায় রাখুন।
- সাধারণ ঠান্ডা-কাশিকে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন: স্ট্রেপ থ্রোট যথাযথভাবে চিকিৎসা করা হলে রিউমেটিক ফিভার প্রতিরোধ করা সম্ভব। যদি নিচের লক্ষণগুলো দেখা দেয়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন:
- হঠাৎ শুরু হওয়া গলা ব্যথা
- গিলতে সমস্যা
- উচ্চমাত্রার জ্বর
- মাথাব্যথা
- পেট ব্যথা, বমি বা বমি বমি ভাব
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী যথাযথ চিকিৎসা নিলে রিউমেটিক ফিভার প্রতিরোধ করা সম্ভব। যদি কোনো লক্ষণ দেখা দেয়, তবে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
Comments