যতদিন দিন পর পর বিছানার চাদর ধোয়া উচিত
কাজের ব্যস্ততা শেষে একটু স্বস্তি নিতে বিছানায় গা এলিয়ে দেয় কম বেশি সবাই। বাদ যায় না পরিবারের ছোট সদস্যওরাও। এমনকি অনেকে টিভি দেখা কিংবা মোবাইল ফোন স্কোলিং করেন বিছানাতে বসেই। সব মিলিয়ে অনেকটা সময় কাটে বিছানায়, তাই চাদর পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি ভাবতে হয়। তবে অনেকেই না বুঝে ভুল করে ফেলেন। আর ভুলের সূত্রপাত ময়লা বিছানার চাদর দিয়ে।
অনেকে জানেন না কতদিন পরপর বিছানার চাদর ধুতে হবে। এক বিছানার চাদর দিয়েই হয়তো কেউ একমাস পার করছেন আর কেউবা এক সপ্তাহও পার করছেন না। স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে নিয়মিত বিছানার ধুতে হবে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিষয়টি। ভারতের সাদ্যাস্কার সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর নব্যা খান্না এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
নব্যা খান্নার মতে, বিছানার চাদর সাধারণত প্রতি এক থেকে দুই সপ্তাহ পর পর ধোয়া উচিত। তবে, যাদের অ্যালার্জি আছে, ঘরে পোষা প্রাণী রয়েছে বা অতিরিক্ত ঘাম হয়, তারা সপ্তাহে একবার ধুলে উপকার পাবেন। স্বাস্থ্যকর ও সতেজ ঘুমের পরিবেশ নিশ্চিত করতে পরিষ্কার বিছানার চাদরের বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সারাদিন কাজ শেষে অনেকেই ঘরে ফিরে বিছানায় চলে যান। কেউবা ছুটির দিন পুরো সময় বিছানায় কাটায়। যার ফলে প্রতিদিন বিছানার চাদরে আশ্রয় নেয় ঘাম, ধুলাবালি, আমাদের ত্বকের মৃত কোষ এবং ব্যাকটেরিয়া। এ থেকে অনেক সময় ব্রণ, অ্যালার্জি এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। আর এ কারণেই পরিষ্কার চাদরে ঘুমাতে হবে। স্বাস্থ্যকর ও আরামদায়ক ঘুমের পরিবেশের জন্য পরিষ্কার বিছানার চাদর গুরুত্বপূর্ণ।
চাদর ধোয়ার ভুল: চাদর ধুতে গিয়ে অনেকেই ভুল করেন এতে করে চাদর জীবাণুমুক্ত হয় না। বিশেষজ্ঞদের মতে এমন অনেকেই আছেন যারা ঠান্ডা পানিতে চাদর ধুতে অভ্যস্ত। সত্যি বলতে এটা চাদরের জীবাণু ধ্বংস করতে পারে না। এমনকি অনেকে একসঙ্গে দুই থেকে তিনটা চাদর ওয়াশিং মেশিনে দিয়ে দেন এতে করে চাদর ভালোভাবে পরিষ্কার হয় না।
বিছানার চাদরের যত্ন নেয়ার টিপস: বিছানার চাদর ভালোভাবে পরিষ্কার রাখার কিছু পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সহজেই জীবাণুমুক্ত চাদর পেতে যে টিপস অনুসরণ করতে হবে:
অতিরিক্ত ডিটারজেন্ট ব্যবহার: অনেকে ভাবেন অতিরিক্ত ডিটারজেন্ট ব্যবহার করলেই চাদর পরিষ্কার হয়। কেউবা এর সঙ্গে ব্যবহার করেন ফেব্রিক সফটনার যা চাদর নরম রাখে। তবে এই দুইটা জিনিসের অতিরিক্ত ব্যবহার চাদরের শোষণ ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। যার ফলে খুব সহজেই চাদর ময়লা দেখা যায়।
গরম পানিতে চাদর ধোয়া: হাতে কিছুটা সময় নিয়ে গরম পানিতে বিছানার চাদর ধুতে হবে। এতে করে সহজেই চাদরের জীবাণু দূর হবে।
ভালোভাবে শুকানো: চাদর ব্যবহার করার আগে ভালোভাবে শুকিয়ে নিন যাতে ছত্রাক এবং ফাঙ্গাস না জন্মায়। এর ব্যতিক্রম হলে অসুস্থ হতে পারেন।
পরিচর্যার নির্দেশনা দেখুন: একেক চাদর একেক ধরনের সুতা দিয়ে তৈরি। তাই চাদর ভেদে যত্ন আলাদা হয়। চাদরের সঙ্গে দেয়া গাইডলাইন অনুযায়ী চাদর ধোয়ার নিয়ম অনুসরণ করুন।
সত্যি বলতে অনেক সময় চাদর পরিষ্কার করা কিছুটা কষ্টকর হয়ে যায়। এটাকে কিছুটা পরিশ্রমের কাজ মনে হলেও নিয়মিত চাদর ধুতে হবে। আরামদায়ক এবং স্বাস্থ্যকর ঘুমের পরিবেশ নিশ্চিত করতে চাদর পরিষ্কার রাখতে হবে।