চবিতে ১০ ছাত্রী বহিষ্কারের প্রতিবাদে ১৫৪ নাগরিকের বিবৃতি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ ছাত্রীকে বহিষ্কারের প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ১৫৪ জন নাগরিক। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে এই বিবৃতি পাঠানো হয়।
এতে তারা বলেছেন, একটি অস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে, যথাযথ তদন্ত না করে এবং কোনো রকম আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই একযোগে এসব শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়েছে। তারা এ বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, ঘটনার পুনঃ তদন্ত এবং অপেশাদার আচরণের জন্য প্রক্টরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলের সামনে একদল ছাত্রের নৌকার ভাস্কর্য ভাঙতে যাওয়ার ঘটনায় প্রশাসন নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। একজন সহকারী প্রক্টর ছাত্রীদের গালিগালাজ করে কথা বলেছেন এবং আওয়ামী লীগের দোসর ট্যাগ দিয়েছেন, যা ছাত্রীদের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে দেয়। এসবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান প্রক্টর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কুরুচিপূর্ণ কথা বলেছেন, নারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে যৌন হয়রানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন, যা প্রশাসনিক শিষ্টাচারের সব সীমা অতিক্রম করেছে।
তারা বলেন, ছাত্রী হলের প্রাঙ্গণে মধ্যরাতে ভাঙচুর করতে যাওয়া, সাংবাদিকদের হেনস্তা করার অভিযোগ, একজন নারী শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে সহকারী প্রক্টরের গায়ে হাত তোলার অভিযোগ, দুজন প্রক্টরের অশালীন বক্তব্য ও ফেসবুকে নারী শিক্ষার্থীদের জঘন্য ভাষায় আক্রমণ—এসব বিষয়ে যথাযথ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন ছিল, যা হয়নি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করায় ও ছাত্রীদের প্রতি প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের স্পষ্ট বিদ্বেষ পরিলক্ষিত হওয়ায় যে তদন্ত ও শাস্তি হয়েছে, তার গ্রহণযোগ্যতা নেই। অবিলম্বে এই শাস্তি প্রত্যাহার করে নির্দোষ শিক্ষার্থীদের হয়রানি থেকে মুক্তি দিয়ে পুনরায় স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে।
বিবৃতি দেয়া ব্যক্তিদের মধ্যে অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ, নৃবিজ্ঞানী ও লেখক রেহনুমা আহমেদ, শিক্ষক সামিনা নিত্রা, আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাইদুল ইসলাম, চিন্তক আ আল মামুন, লেখক ও গবেষক আলতাফ পারভেজ, চলচ্চিত্রকার লাবনী আশরাফি, কবি রহমান মুফিজ, শিক্ষক তানিয়াহ মাহমুদা, নাট্য নির্দেশক দীপক কুমার গোস্বামী, চলচ্চিত্রকার রাফসান আহমেদ, সাংবাদিক অনিক রায়, গবেষক মীর হুযাইফা আল মামদূহ, কবি সাইয়েদ জামিল, লেখক পারভেজ আলম, ফাহমিদুল হক, ফিরোজ আহমেদ, শিক্ষক সেলিম রেজা নিউটন, অর্থনীতি গবেষক মাহা মির্জা, লেখক দিলশানা পারুল, অধিকারকর্মী ফারজানা মাহবুবা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা, সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম, লেখক এবাদুর রহমান ও চিন্তক তুহিন খান রয়েছেন।
Comments