বাংলাদেশে গবেষণা
কথাটা হয়তো সবার পছন্দ হবে না, তবে বাস্তবতা হলো, আমাদের মতো গরীব দেশ চাইলেই দুনিয়ার সব বিষয়ে বিশ্বমানের গবেষণা শুরু করতে পারবে না।
২০ কোটি মানুষের দেশের রিজার্ভ হলো ২০ বিলিয়ন ডলার মাত্র। আর সৌদি আরবের বেস্ট গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাউস্টের (KAUST) এন্ডোর্সেমন্টই হলো ২০ বিলিয়ন ডলার।
আমাদের দেশে ভালো মানের গবেষণা শুরু করতে হবে বাজার যাচাই করে। উদাহরণ স্বরূপ, সরকার যদি মহাকাশ বিজ্ঞানের ওপর এখন ৫০০ কোটি টাকা খরচ করে, সেটা দেশের বাজারে কোন কাজেই আসবে না আপাতত। একে, ৫০০ কোটি টাকা এই গবেষণার জন্য কিছুই না। দ্বিতীয়ত এই ফিল্ডে লোকাল পিএইচডি'রা কাজ করবে কোথায়? এর turnaround কতোটুকু হবে?
ঠিক একই টাকা যদি, সেমিকন্ডাকটর ফিল্ডে গবেষণার জন্য ঢালে, তাহলে, এক বছরের ট্রেইনিং কোর্স অফার করলেও অনেকে সেটা শেষ করে ভালো চাকরি পাবে। দেশে রেভিনিউ আসবে।
সরকারের উচিত প্রায়োরিটি বেইজড রিসার্চ ফিল্ড সিলেক্ট করা। এগ্রিকালচার, ফার্মাসিউটিক্যাল, ফুড প্রোডাকশন এন্ড সেইফটি, সেমিকন্ডাটর, পোশাকশিল্প ইত্যাদি আরো কিছু ফিল্ড যে ফিল্ডে যথারীতি দেশে একটা বড়ো বাজার আছে।
দেশের অর্থনীতিকে আরো চাঙ্গা করা যাবে। এবং যেখানে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানও টাকা ঢালবে যদি দেখে যে তাদের শিল্পেরও লাভ হবে। প্লাস, এসব ফিল্ডে লোকাল স্কিলড মানুষ তৈরি করলে, তারা দেশেই ভালো চাকরি পাবে। এভাবে অনেকগুলো বিষয় স্টাডি করে ফোকাস করা উচিত।
বাজারের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রেখে যদি গবেষণায় ফোকাস করা যায়, তাহলে এক্সিসটিং শিল্পগুলো আরো বিকশিত হবে। আরো রেভিনিউ আসবে। সেই রেভিনিউ তখন অন্যান্য ফিল্ডের রিসার্চ এণ্ড ডিভেলপমেন্টে খরচ করা যাবে।
খেয়াল করে দেখেন, নব্বইয়ের দশকে, সারা দেশে বিবিএ-এমবিএ একটা হৈ-চৈ শুরু হলো। কারণ হালো প্রাইভেট ব্যাংকিং ও কর্পোরেট চাকরির বিকাশ। দেশের সব প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় শুরুই করতো বিবিএ-এমবিও আর কম্পিউটার সাইন্স দিয়ে।
গবেষণার দুইটা মোটা উদ্দেশ্য থাকে। এক. জ্ঞান সৃষ্টি।
দুই. জ্ঞান সৃষ্টির মধ্য দিয়ে লোকালি স্কিলড মানুষ তৈরি করা।
গরীব দেশ শুধুমাত্র জ্ঞান তৈরির লক্ষ্য গবেষণা করতে পারে না। আর্থিক সীমাবদ্ধতার জন্য। তাকে বরং ফোকাস করতে হয়, যে গবেষণার মধ্য দিয়ে জ্ঞান, স্কিল ও রেভিনিউ তৈরি করা যায়, সেটার প্রতি।