শেষ ওভারে ৩০ রান নিয়ে রংপুরকে জেতালেন সোহান
নুরুল হাসান সোহানকে যদি ওভারটা বাঁধাই করে রাখার সুযোগ দেয়া হতো, তবে হয়তো সুযোগটা লুফেই নিতেন রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক। এক ওভারে ৩টি ছয়ের পাশাপাশি ৩টি চার মেরে ৩০ রান তুলেছেন এই ব্যাটার। সেটা কখন জানেন? রংপুরের যখন শেষ ওভারে জয়ের জন্য ২৬ রান লাগে!
ফরচুন বরিশালের কাইল মেয়ার্সের করা ওভারে ৩০ রান তুলে রংপুরকে ৩ উইকেটে জেতালেন সোহান। ফলে ৬ ম্যাচের সব কটিতে জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান পাকাপোক্ত করল রংপুর। অন্যদিকে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয়স্থানে থাকা বরিশাল ২টি ম্যাচে হারল, ২টিই রংপুরের বিপক্ষে। মুখোমুখি দেখায় আগের ম্যাচে ৮ উইকেটে হেরেছিল তারা।
৭ বলে সোহানের ব্যাট থেকে আসে ৩২ রান। তার বীরত্বের আগে কী নাটকীয়তাটাই না হয়ে গেছে সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে। আগের ওভারে ৩টি উইকেট তুলে নিয়ে বরিশাল জয়ের সুবাতাস পাচ্ছিল। ১৯তম ওভারের প্রথম দুই বলে ২টি ছক্কা হাঁকিয়ে জাহানানদাদ খানকে সীমানায় ক্যাচ দেন রংপুরকে লড়াইয়ে রাখা খুশদিল শাহ। ২৪ বলে ৪৮ রান করেন পাকিস্তানি অলরাউন্ডার। পরের বলে সোহান জাহানদাদকে ক্যাচ নিতে বাধা দেয়ায় স্ট্রাইকপ্রান্তের মেহেদী হাসান 'অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড' আউট হন। ওভারের পঞ্চম বলে সাইফউদ্দিনও সীমানায় ক্যাচ দেন।
খুশদিল শাহর পাকিস্তানি সতীর্থ ইফতিখার আহমেদও ৪৮ রান করেন। মূলত তাদের বিদায়ের পর জয়ের আশা নিভে যেতে থাকে রংপুর। কিন্তু সোহান দপ করে জ্বলে উঠে জয় তুলে নিলেন। তাউফিক হাসান ৩৮ ও সাইফ হাসান করেন ২২ রান।
এর আগে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৯৭ রান সংগ্রহ করে বরিশাল। দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেয়ার পথে ৬১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন কাইল মেয়ার্স। রংপুরের পক্ষে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন আকিফ জাভেদ। ৪ ওভার বল করে মাত্র ১৬ রান খরচায় ১ উইকেট নিয়েছেন তিনি। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নিলেও ৩ ওভারে ৪৭ রান খরচ করেছেন কামরুল ইসলাম।
এদিন টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু পায় বরিশাল। টানা তিন ম্যাচে ব্যর্থ হওয়ার পর চতুর্থ ম্যাচে দ্যুতি ছড়ান নাজমুল হোসেন শান্ত। তার সামনে সুযোগ এসেছিল ফিফটি হাঁকানোর। তবে কাজে লাগাতে পারেননি। ৩০ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কার মারে ৪১ রান করে কামরুলের বলে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। তার আগে অবশ্য তামিমের সঙ্গে গড়েন ৮১ রানের দারুণ জুটি। শান্তর বিদায়ের পর ক্রিজে স্থায়ী হননি বরিশালের অধিনায়কও। ৩৪ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৪০ রান করে কামরুলের একই ওভারে ক্যাচ তুলে দেন তামিমও।
তৃতীয় উইকেটে নেমে ঝড় তোলেন কাইল মেয়ার্স ও তাওহীদ হৃদয়। তাদের ৫৯ রানের জুটি ভাঙেন আকিফ জাভেদ। ১৮ বলে ১ ছক্কা ও ১ চারের মারে ২৩ রান করে ক্যাচ তুলে দেন হৃদয়। এরপর ক্রিজে নেমে সাইফউদ্দিনের বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৪ বলে ২ রানে থামে তার ইনিংস।
তবে চমক দেখান ফাহিম আশরাফ। মেয়ার্সের সঙ্গে জুটি গড়ে চড়াও হন রংপুরের বোলারদের ওপর। শেষ ওভারে রান আউট হওয়ার আগে ৬ বলে ২ ছক্কা ও ১ চারের মারে ২০ রান করেন তিনি। অন্যদিকে একপ্রান্ত আগলে রেখে তাণ্ডব চালিয়ে যাওয়া মেয়ার্স ফিফটি তুলে নেন ২৭ বলে। শেষ পর্যন্ত ২৯ বলে ৭ ছক্কা ও ১ চারের মারে ৬১ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।