শেয়ার কারসাজি: বিকন ফার্মার এমডি ও পরিবারকে ৩.৮৫ কোটি টাকা জরিমানা

খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের কোম্পানি জেমিনি সি ফুড লিমিটেডের শেয়ার কারসাজির অভিযোগে পাঁচ ব্যক্তিকে মোট ৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সম্প্রতি বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বিএসইসি বলছে, এ কারসাজিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এম) মোহাম্মদ এবাদুল করিমসহ তাঁর পারিবারিক সহযোগীরা।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৭ মে পর্যন্ত সময়ে মোহাম্মদ এবাদুল করিমসহ তাঁর সহযোগীরা জেমিনি সি ফুডের শেয়ারের দাম যোগসাজশ করে বাড়ান। বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় এনেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
শেয়ার কারসাজিতে সহযোগীদের মধ্যে রয়েছেন—এবাদুল করিমের দুই সন্তান, তাঁর শ্যালক ও নিকটতম আত্মীয়। তাঁরা একে অপরের সঙ্গে যোগসাজশ করে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে কোটি কোটি টাকার মুনাফা হাতিয়ে নিয়েছেন।
পুঁজিবাজারে কয়েক বছর ধরে গুঞ্জন ছিল, জেমিনি সি ফুডের শেয়ার নিয়ে কারসাজি চলছে। কোম্পানিটির ব্যবসা ও আর্থিক অবস্থার উন্নতির কারণে নয়, বরং কারসাজির মাধ্যমে শেয়ারের দাম বাড়ানো হয়েছে। অবশেষে তদন্ত সাপেক্ষে কোম্পানিটির শেয়ার কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্র জানিয়েছে।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৭ মে পর্যন্ত সময়ে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি জেমিনি সি ফুডের শেয়ারের দাম কারসাজি করে বাড়ানোর দায়ে ৫ ব্যক্তিকে জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে মোহাম্মদ এবাদুল করিমকে ১১ লাখ টাকা, তাঁর মেয়ে রিসানা করিমকে ২ লাখ ১২ হাজার টাকা, তাঁর ছেলে উফাত করিমকে ১ লাখ ৪১ হাজার টাকা, তাঁর শ্যালক সোহেল আলমকে ১০ লাখ টাকা ও ফাতেমা সোহেলকে ১১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সে হিসাবে, কোম্পানিটির শেয়ার কারসাজির জন্য মোট ৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এর আগে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানি খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজ ও ওরিয়ন ইনফিউশন লিমিটেডের শেয়ার কারসাজি করার দায়ে মোহাম্মদ এবাদুল করিমকে বড় অঙ্কের জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রী নুরুন নাহার, তাঁর মেয়ে ও তার নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকেও বড় অঙ্কের জরিমানা করা হয়।
২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৭ মে পর্যন্ত সময়ে মোহাম্মদ এবাদুল করিমসহ ৫ ব্যক্তি যোগসাজশ করে জেমিনি সি ফুডের শেয়ার লেনদেন করেন। কারসাজিকারীরা কোম্পানিটির শেয়ার যোগসাজশ করে দাম বাড়ান। ওই সময়ের মধ্যে কোম্পানির শেয়ারের দাম ৩৪১ দশমিক ৭০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৩৪ দশমিক ৪০ টাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। ফলে কোম্পানির শেয়ারের দাম ৫৯২ দশমিক ৭০ টাকা বা ১৭৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ বেড়ে যায়।
Comments