মুশফিককে ফেরানোর চেষ্টা বিসিবি’র

মে ১০, ২০১৩

eea1e689263108185f790c16502fe151

ঢাকা জার্নালঃ  জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ ম্যাচটা ছিলো পেনাল্টির মতো। গোল করলে কেউ কিছু বলবে না, কিন্তু মিস হলেই ধেয়ে আসবে সমালোচনার জলোচ্ছ্বাস। তাতে হয়ত ভেসে যেতে চাননি ‘আবেগী’ মুশফিকুর রহিম। তাই ২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ হারের পরই অপ্রত্যাশিতভাবে ঘোষণা দিলেন নেতৃত্ব ছাড়ার।

 

ম্যাচ হারের পরই ড্রেসিংরুমে সতীর্থদের জানিয়েছিলেন সিদ্ধান্তটা। তাকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন সবাই। যে কারণে সিরিজ শেষে ঐতিহ্য ভেঙে অধিনায়কের বদলে সাংবাদিক সম্মলেনে পাঠানো হয় সহ-অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহকে। মাঝপথে হঠাৎ করেই চলে আসেন মুশফিক। দেরির জন্য ক্ষমা চেয়ে বোমসেলের মতোই জানান, ‘অধিনায়ক হিসেবে এটাই আমার শেষ। টোয়েন্টি টোয়েন্টি সিরিজ শেষে নেতৃত্বে থাকছি না আমি। দলও খারাপ খেলেছে, আমিও খারাপ খেলেছি। অধিনায়ক হিসেবে দায়টা আমারই।’

ব্যাপারটা হজম করতে সময় লাগে অনেকের। হঠাৎ এ ধরনের সিদ্ধান্ত কেন? সাংবাদিকরা জানতে চাইলে চেয়ার ছেড়ে উঠতে উঠতে জানান, ‘এ নিয়ে আর কিছু বলতে চাইছি না।’

 

সংবাদ সম্মেলনে জানিয়ে দিলেই অবশ্য হয় না। নেতৃত্ব ছাড়তে দরকার বোর্ডের অনুমোদন। সেটা হয়নি এখনও। বিসিবি পুরো ব্যাপারটাই খতিয়ে দেখছে। শুধুই কি ব্যর্থতার জন্য মুশফিকুরের এ সিদ্ধান্ত, নাকি পর্দার আড়ালে আছে অন্য কিছু? দেশে ফিরে ম্যানেজারের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হবে সেটা।

 

বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস জানালেন সেটাই, ‘মুশফিকের সিদ্ধান্তটা বিস্ময় হয়ে এসেছে আমাদের জন্য। এমন কিছু ভাবিইনি আমরা কেউ। ওর সঙ্গে কথা হয়েছে। তাতে মনে হয়েছে আবেগী হয়ে নেতৃত্ব ছেড়েছে মুশফিক। তবে ১৫ মে দেশে ফিরে এলে সামনা সামনি কথা হবে ওর সঙ্গে। খতিয়ে দেখব ম্যানেজারের রিপোর্টও। এতদিন দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে মুশফিক। ওর মত অধিনায়কই দরকার বাংলাদেশের।’

 

জালাল ইউনুসের কথায় পরিষ্কার মুশফিককে ফেরানোর আশা ছেড়ে দেয়নি বোর্ড। এজন্যই মুশফিকের সিদ্ধান্ত বদলের চেষ্টা করছেন কোচ শেন জার্গেনসন আর জিম্বাবুয়েতে যাওয়া নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন। টেলিফোনে কথা বলেছেন বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসানও। এ চতুর্মুখী আলোচনা আর ফেরানোর উদ্যোগ শেষ পর্যন্ত সফল হয় কিনা সেটাই দেখার বিষয়।

 

এবারের সফরটা ভালো না কাটলেও মুশফিকুর রহিম বাংলাদেশের সফল অধিনায়কদেরই একজন। তার নেতৃত্বে প্রথমবারের মত এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলার পাশাপাশি শ্রীলংকার মাটিতে একটা টেস্ট ড্র করেছে বাংলাদেশ। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরিও করেছেন কিছুদিন আগে। শ্রীলংকায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ জিতেছে কোন ওয়ানডে ম্যাচ। তাছাড়া তার নেতৃত্বে খেলা ২১ ওয়ানডেতে ৮ জয় ১২ হার ১ পরিত্যাক্ত ম্যাচ নিয়ে বাংলাদেশের সাফল্যের গড় ২৭.৬৫। ৪৭ ম্যাচে ২২ জয় ২৫ হার ও ২৯.২৯ গড় নিয়ে তার চেয়ে এগিয়ে কেবল সাকিব আল হাসান। ১০ টেস্টে ১ জয় ৭ হার ২ ড্রসহ ৩০.৫৬ গড়ে তো মুশফিকই বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক। এমন অধিনায়ককে একটা মাত্র সিরিজের ব্যর্থতায় কোনভাবেই হারাতে চায় না বিসিবি।

 

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.