বিএনপি-আওয়ামী লীগই হেফাজত উত্থানের কারণ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ইমতিয়াজ মনে করেন হেফাজতে ইসলামের উত্থানে বিএনপি যেমন সহায়তা করেছে তেমনি সহায়তা করেছে সরকারও৷ কারণ তারা ভোটের হিসাব করেছে৷ হেফাজতকে সহায়তা করা, তাদের আন্দোলনে সমর্থন দেয়া এসবে পিছ-পা হয়নি বিএনপি৷ আর সরকারও তাদের ‘গুডবুক’এ রাখার চেষ্টা করেছে৷ আর এই চেষ্টা এখনো থেমে নেই৷

আর সে কারণেই রবিবার মতিঝিলের শাপলা চত্বরে সংঘাতের পর হেফাজতের নেতাদের বিরুদ্ধে কমপক্ষে ১৬টি মামলা হলেও হেফাজতের প্রধান আল্লামা আহমদ শফিকে কোনো মামলায় আসামি করা হয়নি৷

রবিবার রাতে শাপলা চত্বর থেকে হেফাজত কর্মীদের অপসারণে যৌথ বাহিনীর অভিযানে ‘গণহত্যার’ অভিযোগ তুলে বিএনপি হেফাজতের আগেই দুই দিনের হরতাল ডেকে দেয়৷ এ সম্পর্কে অধ্যাপক ইমতিয়াজ বলেন, “হেফাজতকে নিয়ে দুটি বড় দলই প্রথম থেকে রাজনীতির খেলা খেলেছে”৷

তিনি বলেন, “দুই দলই হিসেব করেছে সামনের নির্বাচনকে ঘিরে৷ একারণেই হেফাজতের ১৩ দফা দাবি কোনো দলের পক্ষেই মানা সম্ভব না হলেও তারা হেফাজতের প্রতি সহানুভূতি দেখায়৷ তারা চিন্তা করে দেশের কওমী মাদ্রাসা কেন্দ্রীক ব্যক্তিদের ভোটের কথা৷ তাই সরকার যেমন তাদের সমাবেশ, অবরোধের অনুমতি দেয়, ‘যৌক্তিক দাবি’ বিবেচনার আশ্বাস দেয়, তেমনি দাবির সঙ্গে একমত না হয়েও বিএনপি তাদের সমর্থন দেয়৷”

তিনি আরো বলেন, “দুই রাজনৈতিক দলেই গণতন্ত্র না থাকায় তারা বিভিন্ন অপশক্তির ওপর ভর করে ক্ষমতায় যেতে চায় অথবা টিকে থাকতে চায়৷ আর এই সুযোগ নেয় মৌলবাদী চক্রসহ নানা অপশক্তি৷ তারা ডালপালা ছড়ায় এবং রাষ্ট্রের সংবিধান ও প্রচলিত আইনকে চ্যালেঞ্জ করে৷ আর এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় দেশের গণতন্ত্র এবং সাধারণ মানুষ৷”

অধ্যাপক ইমতিয়াজ বলেন, “আগামী নির্বাচন নিয়ে দুই বড়দল যত দিন কোনো সমঝোতায় পৌঁছতে না পারবে ততদিন নানা গ্রুপ এবং শক্তির আবির্ভাব হবে৷ তারা দেশে নানা ধরণের সংঘাত এবং সংঘর্ষের সৃষ্টি করবে৷ আর তারা বেড়ে উঠবে দুই বড় দলের আশ্রয়েই৷ কারণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া যখন ব্যাহত হয় তখন অপশক্তির কদর যেমন বাড়ে তেমনি তাদের অবস্থানও শক্ত হয়৷”