দুর্ব্যবহার করলেই এডিডাসকে এসএমএস

মে ৮, ২০১৩

garmentsঢাকা জার্নাল: এশিয়ার তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে কর্মীরা তাঁদের প্রতি দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে মনে করলে সরাসরি এডিডাস সংস্থার কাছে এসএমএস পাঠাতে পারবেন। জার্মানির প্রখ্যাত স্পোর্টস সামগ্রী তৈরির প্রতিষ্ঠান এডিডাস এমনি সর্বাধুনিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১২ সালে, ইন্দোনেশিয়ায়। সেখানে একাধিক তৈরি পোশাক কারখানায় এডিডাসের জন্য জামাকাপড় তৈরি করা হয়। সেই সব কোম্পানির কর্মীরা তাদের মুঠোফোন মারফত এডিডাসকে সরাসরি খবর পাঠাতে পারেন। জানাতে পারেন তাদের অধিকার লঙ্ঘিত হওয়ার কথা।

মুশকিল এই যে, বার্তাগুলি সেই স্থানীয় কোম্পানির পার্সোনেল ডিপার্টমেন্টেই পৌঁছবে, যদিও এডিডাস তা প্রয়োজনে চেক করে দেখতে পারে। দৃশ্যত যে সব কর্মীরা অভিযোগ করছেন, তাদের নাম ফাঁস হবার কোনো সম্ভাবনা নেই। এছাড়া অভিযোগ গুরুতর দেখলে এডিডাস স্থানীয় কোনো এনজিও-কে গিয়ে খোঁজখবর করতে বলতে পারে।

বাংলাদেশে রানা প্লাজা ধসে পড়ার ঘটনার পর এশিয়ার বিভিন্ন দেশে গার্মেন্টস সেক্টরের পরিবেশ ও পরিস্থিতি নিয়ে আবার পশ্চিমে সাড়া পড়েছে।

কিন্তু গার্মেন্টস কর্মীদের কাজের পরিবেশ ও শর্তাবলী যে অমানুষিক, তা তো অনেকদিন আগে থেকেই শোনা ও জানা ছিল। শুধুমাত্র জরুরি এসএমএস পাঠিয়ে সে সব সমস্যার সমাধান হবে বলে মানবাধিকার কর্মীরা মনে করেন না।

এডিডাসের তরফ থেকে কর্মী ও মালিকপক্ষের মধ্যে ‘যোগাযোগ’ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, এডিডাস ৬৫ জন বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করেছে, যারা সারা বিশ্বে এডিডাসের কনট্র্যাক্টকৃত কোম্পানিগুলিতে গিয়ে সেখানে সব কিছু ঠিকঠাক আছে কিনা, চাক্ষুষ পরীক্ষা করে আসেন। কিন্তু এ-ও সত্য যে, বর্তমানে বাংলাদেশের সঙ্গে গার্মেন্টস ফ্যাক্ট্রিতে অগ্নি নিরাপত্তা নিয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষরের কথা চলেছে। চিবো এবং ফিলিপস-ফ্যান হয়জেন-এর মতো সংস্থা তা-তে স্বাক্ষর করলেও, এডিডাস এখনও গড়িমসি করছে।

মানবাধিকার কর্মীদের অভিযোগ, এডিডাস একটি গোটা দেশের সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করে থাকে, যা-তে কর্মীদের সর্বনিম্ন পারিশ্রমিকের পর্যায় বাড়ানো না হয়। চীন পর পর দু’বছর সর্বনিম্ন পারিশ্রমিকের পর্যায় বাড়ানোর পর আডিদাসের তরফ থেকে অন্যান্য দেশে উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোর কথা বলা হয়।

কাজেই এসএমএস মারফত এসওএস পাঠানো নয়, গার্মেন্টস কর্মীদের দরকার তাদের মজুরি বাড়ার, মাইনে বাড়ার। তাদের প্রয়োজন সুস্থ, আইনসম্মত, নিরাপদ কাজের পরিবেশ, যা একটি এসএমএস পাঠিয়ে পাওয়া গেলে এই মাটির পৃথিবী স্বর্গ হয়ে যেত।

সূত্র: ডি-ডব্লিউ

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.