সাহসিকতার জন্য ঝর্ণাকে সম্মান জানালো পুলিশ
এপ্রিল ৫, ২০১৩ ঢাকা জার্নাল: শিবিরের হামলায় আহত পুলিশ সদস্যকে উদ্ধারের জন্য ঝর্ণা সম্মান জানানো হলো। ঝর্নার মতো সম্মান পেলেন রাজশাহী কালের কণ্ঠের স্টাফ রিপোর্টার রফিকুল ইসলাম ও এটিএন নিউজের ক্যামেরাম্যান মাহফুজুর রহমান রুবেল।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজশাহী পুলিশ কমিশনারের দফতরে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে তাদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দিয়ে পুলিশের পক্ষে রাজশাহী পুলিশ কমিশনার এসএম মনির-উজ-জামান সম্মান জানান।
আর জাতির কাছে এরা স্মরণীয় কাজের জন্য মহত্যের পরিচয় পেলেন। পুরো জাতি তাদের সাহসিতকতা ও মানবিকতার স্যালুট করেছে।
প্রসঙ্গত, গত এক এপ্রিল রাজশাহী আর্মড পুলিশের এসআই জাহাঙ্গীরকে রাস্তায় ফেলে ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে দেয় শিবিরকর্মীরা। শুধু তাই না তার পিস্তলটি কেড়ে নিয়ে যায়। এ সময় অন্য পুলিশ সদস্যরা পালিয়ে গেলেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন ঝর্ণা। এসময় দুই সাংবাদিকদের সহযোগিতায় ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে তারা হাসতপাতালে নিয়ে যান ঝর্ণা।
সাহসী এই ভূমিকার কারণে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) পক্ষ থেকে তাদের এ সম্মাননা ও দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে এক এপ্রিলের ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে ঝর্ণা বলেন, “সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হামলার আগে বাসা থেকে তিনি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান। ছুটে রাস্তায় এসে দেখতে পান শিবিরকর্মীরা আহত পুলিশ সদস্য জাহাঙ্গীর আলমকে আহত করে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে গেছে। মাথা থেকে গলগল করে রক্ত বেরুচ্ছে। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসছে না। তখন আমি আর কোনো কিছু চিন্তা না করে দৌঁড়ে গিয়ে তাকে তোলার চেষ্টা করি। এসময় আরো দুই সংবাদকর্মী ছুটে আসেন। আমাদের তিনজনের ডাকে পাশ থেকে কয়েকজন আসেন। এরপর তাকে নিয়ে আমি হাসপাতালে নিয়ে যাই। দুপুর ২টা পর্যন্ত আমি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ছিলাম। পরে বাসায় ফিরে টেলিভিশনে হামলার দৃশ্য দেখে শিউরে ওঠি।”
সম্মাননা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আরএমপি পুলিশের উপ-কমিশনার (পূর্ব) শাহ গোলাম মাহমুদ। অনুষ্ঠানে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ঝর্ণাকে সম্মাননা ক্রেস্ট তোলে দেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এছাড়া করপোরেশনের ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের পক্ষ থেকে ঝর্ণাকে সম্মাননা দেওয়া হয়। বুধবার স্থানীয় কাউন্সিলর অফিসে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে তাকে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন কাউন্সিলর আব্দুস সোবহান।
ঝর্ণা পরিচয়
ঝর্ণা রাজশাহী মহানগরীর আরডিএ মার্কেটের একটি বিউটি পার্লারে কাজ করেন। পারিবারিক জীবনে ছেলে নীরব (১২) ও মেয়ে সানজিদা’র (৫) জননী। স্বামী শাহীন ঢাকার মিরপুরে একটি সিল্কের কারখানায় ব্লক মাস্টার। তবে পাঁচ বছর ধরে স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ নেই তার। লোকমুখে শুনেছেন, সেখানে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন শাহীন। অভাব-অনটনের সংসারে বিউটি পার্লারে কাজ করে সংসার চালান তিনি। শালবাগান এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকেন দুই সন্তান নিয়ে।
ঢাকা জার্নাল, এপ্রিল ০৩, ২০১৩