যুদ্ধাপরাধের বিচার দাবি পাকিস্তানি লেখকের

ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৬

minar_ঢাকা জার্নাল:  ভাষা আন্দোলনই পাকিস্তানি অন্যায়ের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রথম প্রতিবাদ।  মহান এই ভাষা আন্দোলনই বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের জন্ম দিয়েছিল।

সেই ভাষা আন্দোলন আজ কেবল বাঙালির একার গৌরব না, এ গৌরব গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে গেছে। সমস্ত ভাষার মর্যাদাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ১৯৫২, ৭১-এ পাকিস্তান যে আগ্রাসনবাদী ভুল করেছিল, আশা করি অন্তত ভাষার প্রশ্নে আর কোনো শাসক, আর কোনো দেশ এ ভুল করবে না। কোনো দেশ, জাতিই আগ্রাসন মেনে নেয় না।

রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে মহান ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পর এভাবেই নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করেন পাকিস্তানের কবি, লেখক রাহাত সাইদ।

বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর আয়োজনে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ‘সাম্রাজ্যবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী সাংস্কৃতিক কনভেনশন’এ যোগ দিতে বাংলাদেশে এসেছেন তিনি। তিনদিনব্যাপী কনভেনশনে ২১ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের কর্মসূচিও ছিল। কেন্দ্রীয় উদীচী’র সাধারণ সম্পাদক প্রবীর সরদার বিদেশি প্রতিনিধিদের এ প্রভাত ফেরির নেতৃত্ব দেন।

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের বিষয়ে পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গী কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রথমত যে, যিনি বা যারা ভাষার শত্রু তারা সবার শত্রু। বায়ান্নতে বাংলা ভাষার যারা শত্রু ছিল তারা পাকিস্তানেরও শত্রু।

মানবতাবিরোধী অপরাধের চলমান বিচার প্রক্রিয়ার প্রতি সমর্থন জানিয়ে তিনি বলেন, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় যে যুদ্ধাপরাধ হয়েছে তার বিচার হওয়া উচিৎ। যারা যুদ্ধাপরাধ করেছে তাদের বিচার হওয়া উচিৎ। বাংলাদেশ যে বিচার প্রক্রিয়া চলছে তা অব্যাহত থাকবে বলে আমি মনে করি।

তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধ প্রশ্নে বাংলাদেশের প্রতি পাকিস্তানের দুঃখ প্রকাশ যথেষ্ট নয়। জেনারেল পারভেজ মোশারফ (পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রপতি) দুঃখ প্রকাশ করেছেন। ব্যক্তিগতভাবে আমিও বাংলাদেশিদের মতোই ব্যথিত। কিন্তু দুঃখ প্রকাশ করেই দায় শেষ হয় না।

কনভেনশনে অংশ নেওয়া ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, চিন, জাপানের প্রতিনিধিরাও ছিলেন এ শ্রদ্ধা নিবেদনে। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক পাকিস্তানের এ প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলেন।

কনভেনশনে আগত বিদেশি প্রতিনিধিরা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পর অমর একুশে গ্রন্থমেলা পরিদর্শনে যান।

ঢাকা জার্নাল, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.