সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বিএনপির দাবি হাস্যকর : প্রধানমন্ত্রী

ডিসেম্বর ১২, ২০১৫

31প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপির দাবি অত্যন্ত হাস্যকর। কারণ, দেশের মানুষ তাদের জন্ম, গণতান্ত্রিক আচরণ ও সংস্কৃতি সম্পর্কে ভাল করেই জানে। শেখ হাসিনা বলেন, একজন সামরিক স্বৈরশাসক দেশের সংবিধান ও সামরিক আইন লংঘন করে বিএনপি প্রতিষ্ঠান করেছিলেন। দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান সারাজীবন ভোট কারচুপি করেছেন। তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি এবং অন্যান্য নির্বাচনে ভোটার বিহীন নির্বাচন করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী আজ মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলার উত্তর মেদিনি মন্ডলে খানবাড়িতে এক বিশাল জনসমাবেশে ভাষণদানকালে এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতুর মূল কাজের নির্মাণ এবং নদী শাসনের কাজ উদ্বোধন উপলক্ষে জেলা সফরকালে মুন্সীগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এই জন সমাবেশের আয়োজন করা হয়। শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পর মাত্র দেড় মাসের মধ্যে জনগণ খালেদা জিয়াকে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে বাধ্য করেছিল। এখন তারা নির্বাচন সম্পর্কে নানা নীতি বাক্য শুনাচ্ছেন যা জনগণের সঙ্গে উপহাস ছাড়া কিছু নয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি জন্ম থেকেই একটি অবৈধ দল। তারা শুরু থেকেই স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র ধংস করার সব পদক্ষেপ নিয়েছে এবং উন্নয়ন কাজ বাধাগ্রস্ত করে আসছে। তারা কি করে বৈধ কিছু করবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন আওয়ামী লীগ সরকারের নেয়া বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচির সহ পদ্মা সেতুর উন্নয়ন কাজও স্থগিত করেছিল। তিনি বলেন, বিএনপি’র পৃষ্ঠপোষকতায় বঙ্গবন্ধুর খুনিরা সংসদ সদস্য হয়েছিল। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের খুবই দুর্ভাগ্য, এখন আমাদেরকে বিএনপি’র কাছ থেকে নির্বাচন সম্পর্কে কোনটি সঠিক কোনটি ভুল সে কথা শুনতে হয়। যে দল জানে না জনগণের কল্যাণে কিভাবে কাজ করতে হয়; তারা শুধু জানে কিভাবে ধ্বংস করতে হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালে বিএনপি আন্দোলনের নামে ধ্বংসাত্মক রাজনীতি করেছে। তারা প্রায় ১৫০ জন নিরীহ মানুষ, ৫৫ জন বাস চালক ও হেলপার, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ২২ জন সদস্যকে হত্যা করেছে। শত শত পবিত্র কোরআন শরীফ পুড়িয়ে ছাই করেছে, এমন কি মসজিদের অভ্যন্তরে মুসুল্লীদেরকে হত্যা করেছে। বিএনপি ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে একই ধরনের নৃশংসতা করেছে। তারা আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা সরানোর লক্ষ্যে চলতি বছরের প্রথম তিন মাস সহিংসতা চালিয়েছে। বিএনপি কর্মীরা খালেদা জিয়ার প্ররোচনায় নিরীহ মানুষের ওপর হামলা চালিয়েছে এবং তাদেরকে পুড়িয়ে মেরেছে। মুন্সীগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে দলের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমীর হোসেন আমু, আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী এবং নুহ-উল আলম লেনিন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান বক্তব্য রাখেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, খাদ্যমন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং আহমেদ হোসেন, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা, সুকুমার রঞ্জন ঘোষ এমপি, ও সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলিও বক্তব্য রাখেন। প্রধানমন্ত্রী এর আগে মূল সেতুর নির্মাণ কাজ এবং নদী শাসনের কাজের উদ্বোধন করেন এবং একটি বোটে করে পদ্মা নদীতে সেতুর নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেন। প্রধানমন্ত্রী অগ্নিসংযোগ, হত্যা এবং সন্ত্রাসের অভিযোগে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করে নিতে বিএনপি’র দাবি নাকচ করে দিয়ে বলেন, তারা জীবন্ত মানুষ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মেরেছে। অগ্নিসংযোগ এবং সরকারি সম্পত্তি ধ্বংসের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। কোন অপরাধী ছাড় পাবে না। মানুষ হত্যার জন্য দায়ীদের এবং তাদের অর্থ যোগানদাতাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.