অভিজিৎ থেকে দীপন- আর কত হত্যা?

নভেম্বর ৯, ২০১৫

26এই একই বছরে পর পর কয়েকজন মুক্তচিন্তার মানুষ, লেখক ও প্রকাশক নৃশংসভাবে খুন হলেন। এর আগেও ২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ব্লগার ও গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী রাজীব হায়দার নিজ বাসার সামনে খুন হয়েছিলেন। এই বছর এ ধরনের খুনের শুরুটা হয়েছিল ফেব্রুয়ারির বইমেলা থেকে। প্রকাশ্য বইমেলা প্রাঙ্গণে পুলিশের উপস্থিতিতে ও অনেক লোকের ভিড়ের মাঝেই ঘাতকরা চাপাতির ঘায়ে হত্যা করেছিল বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায়কে। তাঁর স্ত্রী বন্যা আহমেদের চিৎকার শুনেও এগিয়ে আসেনি কেউ, এমনকি পুলিশও না। সম্ভবত ওটা পুলিশের ডিউটির মধ্যে পড়ে না। বন্যা নিজেও গুরুতর আহত হয়েছিলেন। ঘটনাটি ঘটেছিল ২৬ ফেব্রুয়ারি। এরপর ৩০ মার্চ একইভাবে প্রকাশ্য লোকালয়ে চাপাতি দিয়ে হত্যা করা হয়েছিল আরেকজন লেখক ও ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবুকে। দুজন ঘাতককে হাতেনাতে ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছিলেন দুই সাহসী ব্যক্তি- যাঁদের আমরা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ বলে তুচ্ছজ্ঞান করি। একেবারে হাতেনাতে ধরা সত্ত্বেও এই খুনেরও বিচার শুরু হয়নি। তদন্তের খবর নেই। তারপর ১২ মে সিলেটে নিহত হলেন আরেক লেখক অনন্ত বিজয় দাস। ৭ আগস্ট ঢাকায় ঘরে ঢুকে চাপাতি দিয়ে হত্যা করেছে লেখক নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায়কে। সর্বশেষ ৩১ অক্টোবর আজিজ মার্কেটে প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনকে তাঁর অফিস রুমে ঢুকে একইভাবে চাপাতির আঘাতে খুন করেছে দুর্বৃত্তরা। দীপন ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হকের ছেলে এবং অভিজিৎ রায়ের একটি বইয়ের প্রকাশক। অভিজিৎ রায়ের অন্য বইয়ের প্রকাশক শুদ্ধস্বরের মালিক আহমেদুর রশীদ টুটুল ও আরো দুজনকে প্রায় একই সময়ে লালমাটিয়ায় একটি বাড়িতে প্রকাশকের কার্যালয়ে হত্যা করার চেষ্টা চালায় দুর্বৃত্তরা। একের পর এক বীভৎস ঘটনা ঘটছে, ধর্মের নামে মুক্তবুদ্ধিকে স্তব্ধ করার ঘৃণ্য প্রয়াস চলছে। কোনো বিচার হচ্ছে না। তেমন কোনো তদন্ত হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না- এই যে পরিস্থিতি তাকে কিভাবে আখ্যায়িত করব?

এর আগে শিয়া সম্প্রদায়ের ধর্মীয় সমাবেশে হোসেনী দালানে গ্রেনেড হামলা, দুই বিদেশি নাগরিককে হত্যা, ঈশ্বরদীতে খ্রিস্টান যাজককে গলা কেটে হত্যার প্রচেষ্টা- সব মিলিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আমরা বাস করছি। সব হত্যার মোটিভ হয়তো এক নয়। বিদেশি হত্যার সঙ্গে হয়তো দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। কিন্তু অভিজিৎ, বাবু, অনন্ত, নীলাদ্রি ও দীপনের হত্যা যে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের কাজ, যারা ধর্মের নাম করে জঘন্য অপরাধ করে চলছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু সবচেয়ে আশ্চর্য লাগে যখন স্বয়ং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল দীপন হত্যার পরপরই বলেন যে, ‘পরিস্থিতি ভালো, অবশ্যই ভালো।’ পরিস্থিতি এমনই ভালো যে একই মন্ত্রিসভার সদস্য আরেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু নিজেও নিরাপত্তার অভাবের কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমিও বিপদমুক্ত নই।’ সরকার কোথায় ভরসা দেবে, না উল্টো শঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। হয়তো তথ্যমন্ত্রীর শঙ্কাটাই সত্য। কিন্তু জনগণের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব তো সরকারেরই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাগর-রুনি হত্যার পর বলেছিলেন, বেডরুমের নিরাপত্তার দায়িত্ব সরকারের নয়। এ কথা ঠিক যে জনে জনে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। কিন্তু যখন ধারাবাহিকভাবে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ একইভাবে হত্যা করে চলেছে এবং দীপন ও টুটুল যখন আগেই পুলিশকে জানিয়েছিলেন যে তাঁদের হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে তখন কি পুলিশের কিছুই করণীয় ছিল না? আর এই ব্যর্থতা ঢাকার জন্যই কি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জোর করে হলেও এই অসত্য কথাটি বলতে হবে, ‘পরিস্থিতি খুব ভালো আছে।’

অভিজিৎ থেকে দীপন- আর কত হত্যা?

কিন্তু মন্ত্রীর অসহায়ত্ব প্রকাশ অথবা আরেক মন্ত্রীর ঘটনাকে অবজ্ঞা করা কোনোটিই জনগণকে আশ্বস্ত করবে না, কাজের কাজও হবে না। বরং সরকারের চরম অপদার্থতাই প্রমাণিত হবে। কালের কণ্ঠ’র সম্পাদকীয়তে (২ নভেম্বরের সংখ্যা) তাই যথার্থই বলা হয়েছে, ‘সরকার ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যত কিছুই বলুন না কেন, ঘটনাপ্রবাহ বন্ধ করা না গেলে ভাবমূর্তির এই সংকট বাড়তেই থাকবে। বরং যেকোনো ঘটনা ঘটার পর তদন্ত সম্পন্ন না করেই লাগামহীন কথাবার্তা বলে কিংবা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দোষারোপ করে এই সংকটকে আরো তীব্র করা হচ্ছে।’

তদন্ত শেষ না করে, এমনকি ঘটনা ঘটার পরপরই মন্তব্য করা, বিশেষ করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ঘাড়ে দোষ চাপানো এখন সরকারের মন্ত্রী, নেতা, এমনকি পুলিশের বড় কর্মকর্তাদের নিয়মিত আচরণে পরিণত হয়েছে। একটা উদাহরণ দেওয়া যাক।

দুই বিদেশি হত্যা ও শিয়া সমাবেশের হত্যাকাণ্ডের পরপরই সরকারের কর্তাব্যক্তিরা বলতে শুরু করলেন, এটা লন্ডন থেকে মা ও ছেলের কাজ। ইঙ্গিতটা খুবই স্পষ্ট। ইতালির নাগরিক সিজারে তাভেল্লার হত্যার ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেই বসলেন যে বিএনপির ঢাকার নেতা এম এ কাইয়ুম যিনি এখন পলাতক আছেন, তিনিই হচ্ছেন হুকুমদাতা, অর্থাৎ হত্যাকারী। এর কয়েক দিন পর একই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুর পাল্টে বললেন, ‘পলাতক কাইয়ুমকে সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়েছে।’ সুনির্দিষ্টভাবে হুকুমের আসামি (এই কথাটি এখন বহুল ব্যবহৃত হচ্ছে) আর সন্দেহের তালিকায় থাকা দুটি সম্পূর্ণ দুই জিনিস।

সে জন্য সাবেক পুলিশপ্রধান (আইজিপি) মহম্মদ হাদিস উদ্দিন এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, (বাংলাদেশ প্রতিদিন, ২৯ অক্টোবর) ‘কোনো ঘটনার তদন্তের আগেই কারো কোনো বক্তব্য দেওয়াটা ঠিক নয়।…কিন্তু দেখা যাচ্ছে, কোনো ঘটনা ঘটার পর এমন স্থান থেকে ঘটনার বিষয়ে বক্তব্য দেওয়া হয়, তখনই আর তদন্তটি সঠিকভাবে এগোয় না। এমন বক্তব্যে তদন্ত ও তদন্ত কর্মকর্তার ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ে।…পুলিশের কাজেও মানুষ আস্থা রাখতে পারে না।’

মন্ত্রী ও সরকারদলীয় রাজনৈতিক নেতারাও লাগামহীন কথা বলতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন। কখনো কখনো এসব বক্তব্য অত্যন্ত রুচিহীন, কদর্য ও দায়িত্বজ্ঞানহীন বলেও বিবেচিত হতে পারে। একেবারে সাম্প্রতিক একটা উদাহরণ দেওয়া যাক। দীপনের মৃত্যুর পরপরই সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তাঁর বাবা অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেছিলেন, ‘আমি বিচার চাই না, আমি চাই সকলের শুভবুদ্ধির উদয় হোক।’ ছেলের লাশ সামনে রেখে অঝোর ঝরে কাঁদতে কাঁদতেও তিনি একই কথা বলেছেন। আমার কাছে তাঁকে মহান মনে হয়েছে। পিতার কাঁধে পুত্রের লাশের চেয়ে ভারী আর কিছুই হতে পারে না। এমন ভার কাঁধে নিয়েও যিনি এত দার্শনিকতাপূর্ণ কথা বলতে পারেন, তিনি অনেক উঁচু স্তরের মানুষ। কিন্তু সেই স্তর স্পর্শ করা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফের মতো লোকদের পক্ষে সম্ভবপর নয়। আমার কাছে মনে হয় অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক যেন অনেকটা গান্ধীর মতো কথা বললেন। প্রতিহিংসা নয়, বিচার নয়, তিনি সবার শুভবুদ্ধির কামনা করেছেন। আর হানিফ সাহেবের মতো আওয়ামী নেতার প্রতিক্রিয়া কী হলো? তিনি বললেন, ‘দীপনের বাবা খুনিদের মতাদর্শে বিশ্বাসী।’ মানুষ এত ছোট মাপের হতে পারে? তা-ও আবার রাজনৈতিক নেতা? অনেক বড় মাপের নেতা। অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হকের বেদনা বোঝার ক্ষমতাও তাঁর নেই। রুচি, সাংস্কৃতিক মানের অভাব তো বটেই। হায়! এঁরাই আমাদের দেশ চালাচ্ছেন। কী হবে সেই দেশের ভবিষ্যৎ।

আমাদের শাসক রাজনীতিবিদরা যেমন যা খুশি কথা বলেন, পুলিশও তেমনই কাজের চেয়ে বক্তৃতাবাজি করতে বেশি পছন্দ করে বলে মনে হয়। তারাও আজকাল রাজনীতির ভাষায় কথা বলে। কখনো কখনো রাজনৈতিক নসিহত দেয়। আগ বাড়িয়ে বাড়তি কথা বলে, যা জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে মাত্র।

গত আগস্ট মাসে নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায়কে যখন হত্যা করা হলো তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যথার্থই বলেছিলেন, ‘ইসলাম পবিত্র ধর্ম। যারা ধর্মকে কলুষিত করছে তারা ধর্মে বিশ্বাস করতে পারে না। তারা নিজেদের মুসলমান হিসেবে কিভাবে ঘোষণা দেবে? ধর্মের নামে কোনো সন্ত্রাস চলতে দেওয়া হবে না।’

আর ঠিক তার পরই ধর্মের নামে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নিয়ে অথবা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ না করে পুলিশপ্রধান নসিহত প্রদান করলেন, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে এমন লেখা লিখতে নিষেধ করলেন। রাজনৈতিক নেতা বা সামাজিক নেতার দায়িত্ব পুলিশ পালন করল; কিন্তু নিজের আসল কাজের ক্ষেত্রে চরম ব্যর্থতার প্রমাণ দিল। এ প্রসঙ্গে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান (১৩ আগস্ট ২০১৫) বলেছিলেন, ‘পুলিশের পক্ষ থেকে ব্লগারদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে লেখালেখি বন্ধ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।…তারা সঠিক সময়ে এ বার্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এখন সময় ব্লগার হত্যার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা।’

সেই আসল কাজটা এখনো হয়নি। গণজাগরণ মঞ্চের প্রধান ডা. ইমরান সরকারসহ অনেকেই তাই সন্দেহ প্রকাশ করছেন শর্ষের মধ্যেই ভূত লুকিয়ে আছে কি না। গত জুলাই মাস পর্যন্ত খবর ছিল যে পূর্ববর্তী সাত মাসে ১০ হাজার জামায়াতকর্মী আওয়ামী লীগে যোগদান করেছে। অনেকেই নাশকতার মামলার আসামি। আওয়ামী লীগেরই অঙ্গসংগঠন বলে পরিচিত ওলামা লীগ গত আগস্ট মাসেই পহেলা বৈশাখ পালনকে ইসলামবিরোধী বলে ঘোষণা করেছিল। যারা অভিজিৎ, ওয়াশিকুর, অনন্ত, নীলাদ্রি ও দীপনকে হত্যা করছে, মতাদর্শগতভাবে তাদেরই কাছাকাছি লোকজনের ভিড় জমেছে নাকি প্রশাসনে ও সরকারি দলে। অন্যথায় পর পর এতগুলো একই ধরনের হত্যা, ধর্মের নামে সন্ত্রাসের অব্যাহত ধারায় বিস্তৃতি- এটা কিভাবে ব্যাখ্যা করা যায়?

এসব দেখে এবং সরকারের বাগাড়ম্বর, নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা প্রত্যক্ষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কাবেরী গায়েন ক্ষোভের সঙ্গে বলেছেন, ‘নিশ্চিতভাবে জেনে গেছি, চাপাতির আক্রমণের শিকার আমার প্রজন্ম নিয়ে বলার খুব বেশি কেউ নেই। সুখে থাকুন রাজনীতিবিদরা। সুখে থাকুন ক্ষমতার মানুষরা। সুখে থাকুন আমাদের শিল্পী-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবীরা- তাঁরাও আসলে ক্ষমতার মানুষ।’

এটা তাঁর ক্ষোভের কথা। ক্ষমতার মানুষ বা ক্ষমতার কাছাকাছি মানুষরা যদি মনে করেন ধর্মের নামে ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসীদের বেশি না ঘাঁটিয়ে, একটু দূরত্বে থেকে সুখে থাকতে পারবেন, তাহলে তাঁরা মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন। খুনিদের চাপাতির আঘাত থেকে কেউই বাঁচবেন না।

কিন্তু এমন দুর্ভাগ্যজনক পরিণতি নিশ্চয়ই আমাদের কাম্য নয়। যে শত্রুদের পরাজিত করে, যে চরম দক্ষিণপন্থী সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী ভাবাদর্শকে পরাভূত করে অনেক রক্ত ও সংগ্রামের বিনিময়ে বাংলাদেশ অর্জন করেছিলাম, আমাদের গর্বের বাংলাদেশ, সেই দেশের এমন সর্বনাশ আমরা হতে দিতে পারি না। গণজাগরণ মঞ্চের মতো অসংখ্য মঞ্চ তৈরি হোক। ঘাতকরা যেন পালিয়ে যাওয়ার সুযোগটুকু না পায়। দেশের শত্রু, ইসলামের শত্রু এই ঘাতকদের নির্মূল করা, বিচার করা ও শাস্তি প্রদানের কাজটি সরকার যেন একটু গুরুত্ব দিয়ে ধরে। সে জন্যও সরকারের প্রতি আন্তরিকভাবে আহ্বান জানাব। গৎবাঁধা কথা আর নয়, আমরা সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ দেখতে চাই।

লেখক : রাজনীতিবিদ

 

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.