কনকর্ডের তৈরি ১৮ তলা ভবন এতিমখানাকে দেয়ার নির্দেশ বহাল

সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৫

konঢাকা: রাজধানীর আজিমপুরে স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার জায়গায় আবাসন প্রতিষ্ঠান কনকর্ডের তৈরি ১৮ তলা ভবন এতিমখানাকে হস্তান্তরের নির্দেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি।

আজ মঙ্গলবার চেম্বার বিচারপতি মোহাম্মাদ ইমান আলী এ আদেশ দেন। আজ আদালতে রিটের পক্ষে শুনানী করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ,কনকর্ডের পক্ষে শুনানী করেন ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম।

পরে আদালত থেকে বেড়িয়ে রিটকারীর পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান বিষয়টি সাংবাদিকদের বলেন। হাইকোর্ট আগামী ৩০ দিনের মধ্যে এ ভবন ও সম্পত্তি এতিমখানাকে বুঝিয়ে দিতে বলেন।

বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে জারি করা এক রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ চার দফা নির্দেশনা দিয়ে এ রায় দেন।

সে রায়ের স্থগিতাদেশ চেয়ে আজ মঙ্গলবার কনকর্ড কর্তপক্ষ একটি আবেদন করলে শুনানী শেষে চেম্বার বিচারপতি “আউট অব লিষ্ট” বলে আদেশ দেন। অর্থাৎ হাইকোর্টর রায়ই বহাল থাকবে।

এতিমখানা রক্ষায় আদালতের চার দফা নির্দেশনা হলো- ক. আজিমপুর এতিমখানার সম্পত্তি সংরক্ষণ করতে হবে, খ. এতিমখানার সম্পত্তি হস্তান্তর সম্পর্কে ২০১৩ সালের ২২ জুলাইয়ের দলিল এবং ২০১৪ সালের ১৩ এপ্রিলের আমমোক্তার নামা দলিল বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। কারণ সেগুলো শুরু থেকেই বাতিল। গ. এতিমখানার জায়গায় কনকর্ডের তৈরি ১৮ তলা বিল্ডিং এতিমখানার পক্ষে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এবং ঘ. কনকর্ডকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে স্থাপনা ও সম্পত্তি এতিমখানাকে বুঝিয়ে দিতে বলা হয়েছে।

অন্যথায় সরকারকে সম্পত্তি বুঝিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় এবং এতিমখানার প্রয়োজনে ডেভলপ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। মনজিল মোরসেদ বলেন, ১৯০৯ সালে ঢাকার নবাব ‘সলিমুল্লাহ এতিমখানা’ স্থাপন করে এবং পরবর্তী সরকারের নিকট হতে আজিমপুর সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানা সম্প্রসারণের জন্য বিভিন্ন সময় জমি লিজ নিয়ে পরিচালনা করে আসছে। গত ২০০৩ সালের ২২ জুলাই এতিমখানার সভাপতি শামসুন্নাহার ও সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট জি এ খান আহসান উল্লাহ এতিমখানার দুই বিঘা জমি ডেভেলপার কোম্পানি কনকর্ডের কাছে হস্তান্তর করেন।

এতিমখানার সম্পত্তি অবৈধ হস্তান্তর সংক্রান্ত প্রতিবেদন বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশ পায়। পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর তা সংযুক্ত করে চার জন ছা্ত্রের পক্ষে রিট পিটিশন দায়ের করেন মনজিল মোরসেদ। পরবর্তীতে উক্ত রিট পিটিশনে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যাণ্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)পক্ষভুক্ত হয়।

রিট আবেদনে বলা হয়, এতিমখানার সম্পত্তি সরকারের নিকট থেকে লিজ নেওয়া এবং লিজ চুক্তিতে এতিম খানার সম্প্রসারণের জন্য বিনামূল্যে দেয়া হয় এবং শর্ত ছিল প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন ব্যাতীত অন্য কোন কাজে জমি ব্যবহার করা যাবেনা। তা সত্বেও এতিমখানার সভাপতি ও সেক্রেটারি সম্পূর্ণ অবৈধভাবে আর্থিক লাভবান হয়ে এতিমখানার সম্পত্তি কনকর্ড গ্রুপের কাছে হস্তান্তর করেছিল।

২২ সেপ্টেম্বর ২০১৫

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.