কল্পনার পৌরাণিক জগতে প্রবেশের রহস্যময় দুয়ার!

সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৫

152গল্প শুনতে কে না ভালোবাসে? আর সেটা যদি হয় প্রাচীন কোন গাছ, ফুল, নদী বা রাজা-রাজড়ার পুরাকাহিনী তবে? কিন্তু সত্যিই কি প্রাচীন এসব যুগ যুগ ধরে মানুষের মুখে চলে আসা পৌরাণিক কাহিনীগুলো একেবারেই মিথ্যে, বানোয়াট আর ভিত্তিহীন? এদের গোড়ায় কি এতটুকুও সত্যি নেই? সাধারণত এদেরকে মানুষের সভ্যতার ভাঁজে ভাঁজে লেখা মনগড়া গল্প বলেই মনে হবে আমাদের। কিন্তু আসলে যতটা গল্প ভাবা হয় এদেরকে আসলে এগুলো ততটা নয়। বরং এদের সত্যিকারের অস্তিত্ব আর প্রবেশের দরজা নিয়েও রয়েছে মানুষের মতামত। অনেকে খুঁজে পেতে ম্যাপও বানিয়ে ফেলেছেন বৈকি! দেখে নিতে চান কাল্পনিক সেসব দুনিয়ায় ঢুকে পড়ার রাস্তাটা? রইলো আজকের ফিচারে।

১. দ্যা স্কোলোমান্স

রোমানিয়ান পৌরাণিক কাহিনীর অংশ এই স্কুলটিকে রোমানিয়ার ভাষায় বলা হয় সোলোমানারি। রোমানিয়ানদের মতে, একটা সময় এই স্কুলকে তৈরি করেছিল শয়তান স্বয়ং। সেখানে মোট ১০ জন ছাত্র ছিল। যাদের ভেতরে নয়জনকে শিক্ষিত করে বের করে দেওয়া হয় আর সম্মানী হিসেবে রেখে দেওয়া হয় একজনকে। আর প্রয়োজনে বজ্রপাত করতে ব্যবহার করা হয় তাকে। এই স্কুল থেকেই ড্রাকুলা নিজের সব ধরনের শয়তানী শিখেছিল বলে ধারণা করা হয়। তবে সত্যি যেটাই হোক না কেন, এখনো অব্দি এই স্কুলটিতে যাওয়ার উপায় আছে বলে মনে করেন অনেকে। হার্মান্সটাডটের কার্পাথিয়ান পাহাড়ের কাছে একনো স্কুলটি আছে বলে মনে করেন অনেকে, যেটা কিনা প্রায়ই কেঁপে ওঠে প্রচন্ড বজ্রপাতে!

২. নিউগ্রাঞ্জ

আয়ারল্যান্ডের বইনি উপত্যকার খুব উঁচু এই সমাধিস্থলটির বয়স প্রায় ৫,০০০ বছর। অনেক অনেক ইতিহাস আর স্থাপত্যের নিদর্শন বলে মেনে নেওয়া হয় এটিকে। তবে সেসবরের সাথে সাথে আয়ারল্যান্ডবাসীরা একে ইশ্বরের আসা-যাওয়ার স্থান বলেও মনে করে। মনে করা হয় সেলটিকের অন্য পৃথিবীতে যাওয়ার দরজা আছে এখানেই। সেলটিকদের পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে এখান দিয়েই দেবতারা নিজেদের রাজ্যে চলে যেতে পারেন। আবার ফিরতেও পারেন। নিউগ্রাঞ্জের অপরদিকে এমন এক দুনিয়া রয়েছে বলে বর্ণনা করা হয় সেলটিকদের পুরানে, যেখানে কোন বয়ংস নেই, মৃত্যু কিংবা জরা নেই। আছে ভালো ভালো কাবার, বারবার অতিরিক্ত ফল বিরতিহীনভাবে দিয়ে যাওয়া গাছসহ আরো ভালো ভালো জিনিস!

৩. হেসপেরেডেসের বাগান

গ্রিক পুরাকাহিনী অনুসারে গায়া হেরাকে একটি গাছ দিয়েছিল যেটা সোনার আপেলের জন্ম দেয়। আর সেই গাছটিকে সুরক্ষিত রাখার জন্যে লাগানো হয়েছিল হেসপেরেডিসের বাগানে। যেটার কড়া সুরক্ষাবেষ্টনী ভেদ করে হারকিউলিস নিয়ে এসেছিল একটি আপেল। বর্তমানে মরোক্কোর লিক্সাসে হেসপেরেডিসের সেই বাগানে যাওয়ার রাস্তা আছে বলে মনে করেন অনেকে। এর আগে প্রচন্ড সমৃদ্ধ থাকলেও বর্তমানে বেশ বিধ্বস্ত অবস্থায় রয়েছে মরোক্কোর এই সমুদ্রতীরবর্তী স্থানটি।

৪. স্টিক্স নদী

গ্রীক নেদারওয়ার্ল্ডে ঢোকার প্রাথমিক রাস্তা হিসেবে ধরা হয এই স্টিক্স নদীকে। যেটার পানি প্রচন্ড দূষিত এবং মানুষকে মেরে ফেলার জন্যে যথেষ্ট। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে এই নদীর পানি মানুষের কথা বন্ধ করে দিতে পারে, চলত্শক্তিহীন করে দিতে পারে, এমনকি মেরেও ফেলতে পারে। আর বর্তমান বিশ্বের আলেক্সান্ডার দ্যা গ্রেটসহ আরো বেশ কিছু নেতা, বিশেষ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় অনেক বেশি পরিমাণে মানুষ নদীর পানি খেয়ে এমনই ঝামেলায় পড়েন। তাই সব প্রমাণ অনুসারে পেলোপনেশিয়ান পাহাড় থেকে আসা মেভ্রোনেরি নদীকেই সেই নদী বলে মনে করা হয়। যাকে বর্তমানে সবাই চেনে ব্ল্যাক ওয়াটার নামে!

৫. শামভালা

সাঙ্গারি-লা বা বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের কাছে পরিচিত স্বর্গ শামভালা বলে কিছু একটা সত্যিই আছে বলে মনে করেন অনেকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে নাজিরা অনেক চেষ্টাতেও সেটাকে বের করতে পারেনি। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মতে সেখানে যেতে হলে পাপশূণ্যাবস্থায় যেতে হবে। তবে এখনো সেটাতে কেউ না যেতে পারলেও শামভালাতে ঢোকার বেশ কয়েকটি স্থান বের করেছে মানুষ খসড়াভাবে। আর জায়গাগুলো হচ্ছে- রাশিয়ার বেলুখা, আফগানিস্তানের সুফি সারমাউন সেটেলমেন্ট, হিমালযে তিব্বতের সীমানা, প্রাচীন শহর বলখ এবং ভারতের সুটলেজ উপত্যকা!

 

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.