বাদ পড়ছেন পুরনো ৩৮ মন্ত্রী

নভেম্বর ২০, ২০১৩

15_Minister_Oath_181113
ঢাকা জার্নাল: নির্বাচনকালীন ‘ছোট’ মন্ত্রিসভার আকার যত ভাবা হচ্ছিল, তার চেয়েও ছোট হচ্ছে এবং আগের ৩৮ জন বাদ পড়ছেন বলে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি সূত্রে জানা গেছে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মাত্র ১৩ জন পুরনো মন্ত্রীই থাকছেন নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভায়, সোমবার শপথ নেয়া আটজনকে নিয়ে যার সদস্য সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ২১ জনে।

পুরনো মন্ত্রীদের মধ্যে থাকছেন আবুল মাল আবদুল মুহিত, মতিয়া চৌধুরী, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, মহীউদ্দীন খান আলমগীর, ওবায়দুল কাদের, জি এম কাদের, হাসানুল হক ইনু, নুরুল ইসলাম নাহিদ, হাছান মাহমুদ, এ এইচ মাহমুদ আলী। প্রতিমন্ত্রী হিসেবে থাকছেন কামরুল ইসলাম।

মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা ২১ কি এরকম কোনো বিশেষ ইঙ্গিত দেয় যে ৩০ সদস্যের মন্ত্রিসভার বাকি নয়টি পদ বিএনপির জন্য থাকছে?

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একটি সূত্র এক্ষেত্রে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদেরের মঙ্গলবার সকালে দেয়া একটি বক্তব্যের দিকে দৃষ্টিপাত করেন, যেখানে তিনি বলেছেন, বিএনপির জন্য এখনো ‘সর্বদলীয়’ মন্ত্রিসভার দ্বার খোলা।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, “জাতীয় পার্টিকে ৬ থেকে ৭টি (মন্ত্রী পদ) দেয়া হয়েছে, বিএনপিকে দিতে সমস্যা কী? প্রয়োজনে ১০ থেকে ১২টি দেব।”

সরকারি ওই সূত্রটি এর আগে জানিয়েছিল, পুরনো মন্ত্রীদের মধ্যে প্রায় ৩০ জনের মতো বাদ পড়ছেন।

তবে সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক করে সংলাপের বিষয়ে তার হস্তক্ষেপ চেয়ে খালেদা জিয়ার আহ্বানের পর মন্ত্রিসভা নিয়ে আবার পর্যালোচনা হয়।

“এতে এটাই বোঝা যায়, কেন আরো আট থেকে নয় জন পুরনো মন্ত্রী বাদ পড়তে যাচ্ছেন,” বলেছে ওই সূত্র।

আরেকটি সূত্র জানায়, মন্ত্রিসভার অধিকাংশ সদস্যই ইতোমধ্যে জেনে গেছেন, তিনি ‘সর্বদলীয়’ সরকারে থাকছেন কি-না।

খাদ্যমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ মঙ্গলবার তাদের মন্ত্রণালয়ের কর্মীদের বিদায়ও জানিয়েছেন।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের বিদায় অনুষ্ঠানে আবদুর রাজ্জাককে চোখ মুছতে দেখা যায়। আর এক বছর আগে মন্ত্রিপরিষদ সম্প্রসারণের সময় তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে শুধু ‘সংস্কৃতিমন্ত্রী’ বনে যাওয়া আবুল কালাম আজাদও নিজের মন্ত্রণালয়ে বিদায়ী অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

মঙ্গলবার নতুন করে আট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী শপথ নেয়ার আগে সোমবার পর্যন্ত মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা ছিল ৫০, যাদের মধ্যে ৩১ জন ছিলেন মন্ত্রী, আর ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী।

নতুন আট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর দপ্তর বণ্টন ও পুরনোদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন জারির কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।

মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব খন্দকার মো. ইফতিখার হায়দার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আজ এসব আদেশ জারির সম্ভাবনা ক্ষীণ।”

আদেশ জারি করতে বিলম্ব হওয়ার বিশেষ কোনো কারণ আছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “অন্য কোনো কারণ নেই। আজ আদেশ জারি না হলেও তাড়াতাড়িই হয়ে যাবে।”

অবশ্য সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তিনি জানিয়েছিলেন, যে কোনো সময়ই আদেশ জারি করা হবে।

দুপুরের পরে এ বিষয়ে আবারো ইফতিখারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ইফতিখার বলেন, “রাত ৮টার পরে আদেশ জারি করা হতে পারে।”

এরপর সন্ধ্যায় তিনি সম্ভাবনা ‘ক্ষীণ’ বলার পর রাতে আর প্রজ্ঞাপন হয়নি।

ইফতিখারের মতো আগের দিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন ভূইঞাও বলেছিলেন, মঙ্গলবারই সব জানা যাবে।

তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “মঙ্গলবার সকালে নতুন মন্ত্রীদের দপ্তর বণ্টন, পুরাতনদের মধ্য থেকে অনেকের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে আদেশ জারি ছাড়াও আরো একটি ঘটনা ঘটবে।”

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.