ছাত্রলীগকে ত্যাগের রাজনীতি করার পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর

আগস্ট ৩১, ২০১৩

PM-Dhanmodi-bg20130831070840ঢাকা জার্নাল: দেশ ও জাতির কল্যাণে ত্যাগ স্বীকার করতে হবে বলে ছাত্রলীগকে পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব স্মরণে ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ পরামর্শ দেন।

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংগঠন করতে হবে। তবে লেখাপড়া বাদ দিয়ে নয়। ফেল করা নেতৃত্ব ক্ষমতায় এলে দেশের কি অবস্থা হয় তা সবাই জানে। তাই পড়াশোনার মাধ্যমে নিজেদের যোগ্য করে তুলতে হবে। কারণ শিক্ষা ছাড়া জাতির উন্নয়ন হয় না।

জাতির পিতার উদ্ধৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বলেছেন, ত্যাগের মধ্যদিয়ে দেশের জন্য কাজ করা যায়। মহৎ অর্জনের জন্য মহান ত্যাগ প্রয়োজন। তাই ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ত্যাগ করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

শিক্ষিত জাতি গড়তে আগামীতে জেলায় জেলায় সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করেছি। সুশিক্ষিত জাতি ছাড়া দেশ এগিয়ে যেতে পারবে না। অথচ বিএনপি ও তাদের হাতে গড়া দলগুলো যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখন তারা ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে।

আওয়ামী লীগ দেশের কল্যাণে কাজ করে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন,  এ দেশের মানুষের জন্য কিছু করে যেতে পারলে মৃত্যুর পর বাবার কাছে বলতে পারবো, আপনার প্রিয় মানুষগুলোর জন্য কিছু করতে পেরেছি।

তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে দেশকে পিছিয়ে দিয়েছে। আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়েছি। ওরা ক্ষমতায় আসে ভোগ করতে। আর আমরা নিজেদের ভাগ্য নয়, দেশের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করতে ক্ষমতায় আসি। আগামীতে ক্ষমতায় আসলে বাকি কাজ সম্পন্ন করে রূপকল্প ২০২১ প্রতিষ্ঠা করা হবে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, আগামীতে রাষ্ট্র পরিচালনা হবে সাংবিধানিক পন্থায়। প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণকে তাদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়াই ছিল আমাদের লক্ষ্য। সেই জন্যই আমরা সংবিধান সংশোধণ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছি।

তিনি বলেন, সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের বিল পাশ দেশের জন্য একটি মাইল ফলক সৃষ্টি হয়। সাংবিধানিক ‍মুক্তি ছাড়া জাতির মুক্তি সম্ভব নয়। যে মুক্তির জন্য জাতির জনক ত্যাগ স্বীকার করে গিয়েছেন।

তত্ত্বাবধায়ক বাতিল বিল পাশ করার সময় এর পক্ষে ২৯১টি ভোট পড়ে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

আওয়ামী লীগ শান্তি বিশ্বাস করে দাবি করে তিনি বলেন, ৪২ বছরে কখনো শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর হয়নি। শুধু ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছে।

বিএনপির দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আরাফাত রহমান কোকোর মানি লন্ডারিংয়ের টাকা ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তারপরও তারা বড় বড় কথা বলে। চক্ষুলজ্জা বলেও একটা কথা আছে।তাদের সেটিও নেই।

সভা আলোচকদের বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, খালেদা জিয়া স্বাধীনতার পরাজিত শক্তিকে পেছন দিক থেকে লালন পালন করছেন।

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন,  খালেদা জিয়ার সঙ্গে ধ্বংসের শক্তি রয়েছে। এর বিপরীতে শেখ হাসিনা সৃষ্টির শক্তি। শেখ হাসিনাকে সামনে এগিয়ে নিতে ছাত্রলীগকে কাজ করতে হবে।

মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের পক্ষে বিদেশী কূটনৈতিকদের তীব্র সমালোচনা করে মতিয়া চৌধুরী বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য বিদেশী কূটনৈতিকরা মিথ্যা বলা অধিকারের পক্ষে আজ সাফাই গাইছেন। তাদের বলি আপনাদের দেশে যদি কেউ এ রকম মিথ্যা বলতো তবে আপনারা কি ব্যবস্থা নিতেন?

ছাত্রলীগ সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন- প্রধানমন্ত্রীর তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা সাংবাদিক নেতা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

আলোচনা সভা পরিচালনা করেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম।

ঢাকা জার্নাল,  আগস্ট ৩১, ২০১৩

 

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.