বেসামাল তিন্নিকে নজরবন্দি !

মে ২১, ২০১৩

Srabonti_Dutta_tinni_-_(29)ঢাকা জার্নাল: নজরবন্দি হয়ে আছেন তিন্নি। যেন আপন ঘরেই পরবাসী সময় পার করছেন তিনি। বাসা থেকে বড়জোর যাওয়া হয় রিহ্যাবে। আর রিহ্যাব থেকে বাসা। যেন খাঁচায় বন্দি হলো আকাশ মাতানো পাখিটি। খবরটি আপাতদৃষ্টিতে আফসোসের হলেও বাস্তবতার ঊর্ধ্বে তো কেউ নন। গেল বৈশাখে ‘নীল কুয়াশা’ নামের একটি নাটকে উঁকি দিয়ে ফের আড়াল হলেন শ্রাবস্তী তিন্নি। জাকারিয়া সৌখিনের রচনায় চয়নিকা চৌধুরীর পরিচালনায় এ নাটকটি গেল বৈশাখী উৎসবে সম্প্রচার হয় এটিএন বাংলায়। যেখানে তিন্নি অভিনয় করেছিলেন দেশের সেরা দুই টিভি তারকা নোবেল ও তারিনের সঙ্গে।

এ নাটকের মধ্য দিয়ে দেড়-দু’বছর পর তিন্নি ফিরেছিলেন ক্যামেরার সামনে কিংবা ফেলে যাওয়া গ্ল্যামার অধ্যায়ে। নাটক সংশ্লিষ্ট অনেকেই ভেবেছিলেন, এবার বোধহয় পাওয়া যাবে নতুন তিন্নিকে। কারণ, ‘নীল কুয়াশা’ নাটকের মধ্য দিয়ে ফেরার আগে টানা এক বছর তাকে থাকতে হয়েছে দেশে এবং বিদেশের বেশ ক’টি রিহ্যাব সেন্টারে। তার বাবা-মা’ই তাকে সুস্থতার লক্ষ্যে বেশ ক’বার রিহ্যাব সেন্টারে পাঠিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। এমনকি ‘নীল কুয়াশা’ নাটকে অভিনয়ের ব্যাপারেও তিন্নির বাবা-মায়ের ঘোরতর আপত্তি ছিল। তাই তো নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরীকে শর্ত দেয়া হয়েছে, শুটিং শুরুর আগে তিন্নিকে বাসা থেকে নিয়ে যেতে হবে। শুটিং শেষ করে আবার তাকে বাসায় পৌঁছে দিতে হবে। এমন শর্তেই মূলত নাটকে অভিনয় করার অনুমতি পান তিন্নি।

উল্লেখযোগ্য তথ্য হলো, লম্বা বিরতি, বাবা-মায়ের শর্ত আর নির্মাতার কড়া নজরদারির মাঝেও তিন্নি শিডিউল ফাঁসিয়ে দেন। প্রথম দিন ঠিক ঠিক শুটিং করলেও পরের দিন থেকে লা পাত্তা!

জানা গেছে, শুটিং ফাঁসানোর ওই সপ্তাহেই তাকে ভারতের একটি রিহ্যাব সেন্টারে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, হিল্লোলের সঙ্গে বছর দুই আগে আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদের পর থেকে বেশির ভাগ সময়ই তিন্নির কেটেছে রিহ্যাব সেন্টারে। আর রিহ্যাব থেকে খানিক সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরলেও দু’দিন বাদেই উচ্ছৃঙ্খলতা এবং অনিয়মতান্ত্রিক চলাফেরার কারণে তাকে যেতে হয়েছে রিহ্যাবে।

জানা যায়, তিন্নি আপাতত বাসায় নজরবন্দি হয়ে আছেন বাবা-মা-স্বজনের। এর মধ্যে অনেক নির্মাতা নাটক-চলচ্চিত্রের অফার নিয়ে বাসায় হাজির হলেও একদমই অনুমতি মিলছে না অভিনয়ের। কারণ, পারিবারিক সূত্রে অভিযোগ রয়েছে, গ্ল্যামার মিডিয়ার কারণেই শ্রাবস্তী তিন্নির আজ এই করুণ পরিণতি। তাই আর কোন নাটক-সিনেমা নয়।

এদিকে জানা গেছে, হিল্লোল-তিন্নির ক্ষণিক সংসারের একমাত্র কন্যা ওয়ারিশা এখন তার নানা-নানীর (তিন্নির বাবা-মা) হেফাজতে আছে। যদিও বাবা হিল্লোলের অনেকদিন ধরে অভিযোগ রয়েছে, মেয়ে ওয়ারিশার প্রতি মা শ্রাবস্তীর তদারকি বরাবরই ছিল অবহেলার। এখনও কি তাই? এমন প্রশ্নের উত্তর খোঁজা বোকামি বটে। কারণ, যেখানে গেল ক’বছর ধরে তিন্নিকেই সামাল দিতে পারছে না কেউ, সেখানে তার সন্তানের বিষয়টি বড় বেশি তুচ্ছ বলেই মনে করছেন অনেকে। এদিকে ক্যারিয়ারের প্রথম থেকেই প্রেমে পড়া এবং সেখান থেকে উঠে আসা, সংসার গড়া এবং সেটা এক লহমায় ভেঙে ফেলা, শুটিং সিডিউল দিয়ে সুন্দর করে ফাঁসিয়ে দেয়া, যখন তখন যার তার সঙ্গে ভনিতা করা অথবা পলকে পলক পাল্টে ফেলা- এর সবই একজন শ্রাবস্তী তিন্নির স্বভাবজাত ব্যাপার। আবার অভিনয় শিল্পী কিংবা বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবেও এই তিন্নির সুখ্যাতি কোন অংশে কম ছিল না। যদিও প্রায় আট বছরের টানা ক্যারিয়ারের শুরু থেকে বছর দুই আগ পর্যন্ত তিনি তার অভিনয় প্রতিভা আর গ্ল্যামারের ঝলকানিকে ছাপিয়ে গেছেন নেতিবাচক আচরণের মধ্য দিয়ে। এ নিয়ে শত খেসারত, মিডিয়ার সমালোচনা আর ইমেজ সঙ্কটের পরেও তার ভেতরকার হেঁয়ালীর বলগা হরিণটা থামেনি। শেষের দিকে (গেল দু’বছর ধরে) এই ধারার আরও অবনতি ঘটেছে। জড়িয়ে পড়েছেন অপ্রকৃতিস্থ কার্যকলাপে। তার এসব বিরতিহীন অপ্রকৃতিস্থ কার্যকলাপে যারপরনাই বিরক্ত ছিলেন নির্মাতা-কুশলী-সতীর্থ-স্বজনরা। তবুও তিন্নির জন্য এখনও আফসোসের সুর কথায় কথায় ভেসে বেড়ায় মিডিয়ায়।

অন্যদিকে তিন্নির সহশিল্পী-প্রেমিক-স্বামী-সন্তানের পিতা আদনান ফারুক হিল্লোল এরই মধ্যে নিজেকে গুছিয়ে তুলেছেন। শোনা যাচ্ছে, তিনি বিয়ে করে ফের সংসারী হয়েছেন আরেক গ্ল্যামারাস অভিনেত্রী-উপস্থাপিকা নওশীনকে নিয়ে।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.