মহাসেনের আঘাতে এক লক্ষ ঘরবাড়ী ক্ষতিগ্রস্থ

মে ১৯, ২০১৩

1111ঢাকা জার্নাল: মহাসেনের আঘাত উপকুলে দশটি জেলায় অন্তত এক লক্ষ ঘরবাড়ী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে জানা গেছে।

বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’ আঘাত হানার পর উপকুলের ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল থেকে অন্তত বারো লক্ষ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল।

ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাগুলো থেকে অনেকে অভিযোগ করছেন,ঘরবাড়ী হারিয়ে তারা দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন। গাছপালা,ফসল এবং চাষ করা মাছের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে এপর্যন্ত ১৭ জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে প্রশাসন।

এছাড়াও সরকার বলছে, ঝড়ের বিপদ কেটে যাওয়ায় আশ্রয় কেন্দ্র থেকে মানুষ এখন তাদের বাড়ীঘরে ফিরে গেছে।

এখন দুঃসময়

মেঘনার মোহনায় ভোলার চর কুকরিমুকড়ি’তে প্রায় ২৫ হাজার লোকের বাস।

মুল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন এই চরে ঘূর্ণিঝড়ে ঘরবাড়ি হারিয়ে অনেক মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন।

সেই চর কুকরিমুকড়িতে ঝড়ে বিধ্বস্ত ঘরেই বাস করছেন মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখন দু:সময়। ঝড়ে ভাঙ্গা ঘরেই কোনভাবে পরিবার নিয়ে আছি।’

চরকুকরিমুকড়ি’র আরেক বাসিন্দা হাবিবউল্লাহ বলেন, ‘অনেক মানুষ পলিথিন টানিয়ে তার নীচে রাত কাটাচ্ছে। অনেকে এখনও ইউনিয়ন পরিষদ ভবন এবং আশ্রয় কেন্দ্রে রয়ে গেছে।’

পটুয়াখালীর খেপুপাড়া এলাকায় ঘূর্ণিঝড় প্রথম আঘাত হেনেছিল। সেখানে ধনজুপাড়া নামের একটি গ্রামের সকল কৃষক মিলে সমিতি করে ৪০ একর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছিলেন। তাঁদের একজন হারুণ তালুদার বলেন, “সূর্যমুখী ফুলের ক্ষেত এখন ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে।”

বরগুনা এবং পটুয়াখালী অঞ্চলে চাষ করা মাছেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। খেপুপাড়ার একটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক আকন্দ বলেছেন, তার ইউনিয়নেই ১৩টি গ্রামের সব পুকুর এবং মাছের পোনার ঘের এখনও পানির নীচে রয়েছে।

তবে সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহা: আব্দুল ওয়াজেদ জানিয়েছেন, এবারের ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলের ১০টি জেলায় ঘরবাড়ির বেশি ক্ষতি হয়েছে।

প্রাথমিক পরিসংখ্যানে তিনি দেখছেন, সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে ,এমন বাড়িঘড়ের সংখ্যা ৪৯হাজার ১৭৮টি। আর আংশিক বিধ্বস্ত বাড়িঘড় হচ্ছে ৪৫ হাজার ৮২৫টি।

তিনি বলেন, “উপকূলীয় জেলাগুলোয় আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ১২ লাখের মতো মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। তাদের সকলেই নিজ নিজ বাড়িঘড়ে ফিরে গেছেন। সে কারণে সরকার ধারণা করছে, বাড়িঘড় ক্ষতিগ্রস্ত হলেও মানুষ একেবারে গৃহহীন হয়ে পড়েনি।”

তিনি উল্লেখ করেছেন, গাছপালা,ফসল বা অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতির পরিসংখ্যান পেতে আরও সময় প্রয়োজন।

সরকার এটাও বলেছে, যাদের বাড়িঘড় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের এখন স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে ২০ কেজি করে চাল এবং তিন হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.