ঘরে ফিরছে উপকূলের মানুষ

মে ১৬, ২০১৩

image_38110_0ঢাকা জার্নাল: ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’ আতঙ্কে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকা উপকূলের মানুষ আশ্রয় কেন্দ্র থেকে ইতোমধ্যে বাড়ি ফিরেছে। পাশাপাশি গবাদি পশুসহ জিনিসপত্রও ফিরিয়ে নেয়া হচ্ছে। তবে দূরবর্তী আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেয়া লোকজন ফিরবে শুক্রবার থেকে। উপকূল সংলগ্ন ৫ উপজেলায় আশ্রয় নেয়া ৪০ হাজার মানুষ ঘরে ফিরেছে। দুর্যোগে গঠিত মেডিকেল টিম স্ব স্ব স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ফিরে গেছে।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে,উপকূলে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরে এসেছে। উপকূলবর্তী অনেক এলাকায় দোকানপাট খুলেছে। কাঁচাবাজারগুলোও চালু হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আতঙ্ক কেটে যাওয়া পরই লোকজনকে বাড়ি ফিরে যেতে বলা হয়েছে। এদিকে মহাসেনের আতঙ্ক কেটে যাওয়ায় কয়েকদিনের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা কেটে গেছে পুরোপুরি।

জেলাপ্রশাসন কার্যালয়সহ শহরের আশ্রয় কেন্দ্র ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নেয়া ১নং ওয়ার্ড সমিতিপাড়ার সব লোকজন ফিরে গেছে বলে জানিয়েছেন ওই এলাকার কাউন্সিলর আকতার কামাল।

মহেশখালীর ধলঘাটা ইউপি চেয়ারম্যান আহছান উল্লাহ বাচ্চু জানান, ধলঘাটার অধিকাংশ মানুষ মাতারবাড়ির উঁচু এলাকা,কালারমারছড়া, বদরখালী ও চকরিয়ায় অবস্থান করছে। তারা শুক্রবার থেকে বাড়ি ফিরবেন। তবে এরই মধ্যে স্থানীয় আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া লোকজন বাড়ি গেছে।
টেকনাফের সেন্টমার্টিন, শাহপরীর দ্বীপ, সাবরাং, বাহারছড়া, জালিয়াপাড়ার সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নেয়া অনেকে বাড়ি ফিরে গেছে।

কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজ আহমদ জানান, নিরাপদ আশ্রয় থেকে কুতুবদিয়ার তাবলেরচর, খুদিয়ারটেক, লেমশিখালী, দক্ষিণ ধুরং, উত্তর ধুরং, আলী আকবর ডেইল এলাকার অন্তত ১০ হাজার মানুষ বাড়ি ফিরে গেছে। বাকিরা শুক্রবার ফিরে যাবে।

জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘মহাসেনের আশঙ্কা শতভাগ কেটে গেছে।তাই লোকজনকে বাড়ি ফিরে যেতে বলা হয়েছে।’

খুলনা প্রতিনিধি জানিয়েছেন,ঘুর্ণিঝড় মহাসেন আতঙ্কে খুলনার ৫ উপজেলায় সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নেয়া ৪০ হাজার উপকূলবাসী ঘরে ফিরেছে। ১৫৭টি আশ্রয় কেন্দ্রে বুধবার সন্ধ্যার আগে তারা আশ্রয় নেন। দুর্যোগে গঠিত মেডিকেল টিম স্ব স্ব স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ফিরে গেছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদপ্তরের সূত্র জানান,উপজেলার আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ডুমুরিয়া উপজেলায় ১৪শ’,দাকোপ উপজেলায় ২০ হাজার, কয়রা উপজেলায় ১০ হাজার,পাইকগাছা উপজেলায় ৩ হাজার ও বটিয়াঘাটা উপজেলার ৫ হাজার ৮শ’ মানুষ আশ্রয় নেন।

জেলা প্রশাসনের সূত্র জানিয়েছে,খুলনায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরে এসেছে।উপকূলবর্তী উপজেলা কয়রা,পাইকগাছা, দাকোপ ও বটিয়াঘাটা উপজেলা সদরে দোকানপাট খুলেছে।কাঁচাবাজারগুলো চালু হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএ খুলনা নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, রূপসা ও ভৈরব নদে কার্গো ও তেলবাহী জাহাজগুলো চলাচল শুরু করেছে। খুলনা নদীবন্দর থেকে ৬টি রুটে যাত্রীবাহী লঞ্চ শুক্রবার থেকে চলাচল শুরু করবে।

খুলনা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.আমিরুল আযাদ জানান,মংলা সমুদ্র বন্দরে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।সমুদ্র বন্দর এলাকায় ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা ও ঝড়ো হওয়া বয়ে যায়।এখন আতঙ্ক কেটেছে।
ঢাকা জার্নাল, মে ১৬, ২০১৩

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.