মানুষ যখন গিনিপিগ!

মে ১৬, ২০১৩

p2ঢাকা জার্নাল: সাবেক পূর্ব জার্মানি অর্থনৈতিক দিক দিয়ে বেশ গরিব ছিল৷ এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে সেখানকার প্রায় ৫০ হাজার মানুষকে গিনিপিগ বানিয়েছিল বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি ওষুধ কোম্পানি৷

জার্মানির সাপ্তাহিক ‘ডের স্পিগেল’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৮৯ সালে বার্লিন প্রাচীর পতনের আগ পর্যন্ত পূর্ব জার্মানির ৫০টি হাসপাতালে প্রায় ৬০০টি ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা চালানো হয়েছিল৷ একেকটি পরীক্ষার জন্য পূর্ব জার্মান সরকারকে প্রায় চার লক্ষ ইউরো করে দেয়া হতো৷ জার্মানি, সুইজারল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি ওষুধ কোম্পানি এসব পরীক্ষা চালায়৷

এর আওতায় নতুন উৎপাদিত কোনো ওষুধের কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য রোগীকে সেই ওষুধ দেয়া হতো৷ এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগীকে বলা হতো না যে, এটা একটা পরীক্ষা এবং ঐ ওষুধের সম্ভাব্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কেও তাঁকে কিছু জানানো হতো না৷

এমন করতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে রোগীর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে বলে জানায় ‘ডের স্পিগেল’৷ পূর্ব জার্মানির সেই সময়কার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অপ্রকাশিত দলিল, ফার্মাসিউটিক্যাল ইনস্টিটিউট ও স্টাসি গোয়েন্দা পুলিশের কাগজপত্র থেকে এসব তথ্য পেয়েছে স্পিগেল সাপ্তাহিকটি৷

একটা ঘটনায় দেখা গেছে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানির ওষুধ কোম্পানি ‘হ্যোখস্ট’-এর ‘ট্রেনটাল’ নামক একটি ওষুধের পরীক্ষা চালানোর সময় পূর্ব বার্লিনের দুজন রোগীর মৃত্যু হয়েছিল৷ হ্যোখস্ট কোম্পানিটি পরবর্তীতে সানোফির সঙ্গে এক হয়ে যায়৷

আরেকটি ঘটনায়, সান্ডোস-এর তৈরি রক্তচাপ বিষয়ক একটি ওষুধের পরীক্ষায় দুজনের মৃত্যু হয়৷ সুইস কোম্পানি ‘নোভার্টিস’ পরবর্তীতে সান্ডোসকে কিনে নেয়৷

কী বলছে কোম্পানিগুলো

স্পিগেলের পক্ষ থেকে যখন মন্তব্যের জন্য ঐ ওষুধ কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় তখন তারা কোনো প্রতিক্রিয়া জানাতে রাজি হয়নি৷ কারণ হিসেবে তারা বলেছে যে, পরীক্ষাগুলো অনেক আগে করা হয়েছে৷ তবে পরীক্ষার সময় কঠোর নিয়ম পালন করা হয় বলে দাবি করে তারা৷

জেডএইচ/ডিজি (এএফপি)

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.