সূবর্ণ এক্সপ্রেসের ৫ বগি আগুনে ধ্বংস

মে ৭, ২০১৩

train-fire-sm20130506231158ঢাকা জার্নাল: চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার জন্য অপেক্ষমাণ থাকা সূবর্ণ এক্সপ্রেসের পাঁচটি বগিতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার ভোর পৌনে ৫টার দিকে সূবর্ণা এক্সপ্রেসের পেছনের ৫টি বগিতে আগুন দেয় তারা। এ পাঁচটি বগির মধ্যে দু’টি বগি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত।

রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, ডক থেকে ভোর সাড়ে চারটার দিকে সূবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের বগিগুলোকে স্টেশনের ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসা হয়। এর ১৫ মিনিট পর বগি থেকে আগুনের ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়।

রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা জাকির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘পাঁচটি বগির মধ্যে একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বগি পুরোপুরি পুড়ে গেছে। বাকী চারটির মধ্যে একটি মোটামুটি ও তিনটি আংশিকভাবে পুড়ে গেছে।’

তিনি জানান, আগুন দেয়ায় এসব বগি এখন চলাচলের অনুপযোগী। এসব বগি মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করে তুলতে কমপক্ষে দু’মাস সময় লাগবে।
বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার সুকুমার ভৌমিক বাংলানিউজকে জানান, পাঁচটি বগিতে আগুনের ঘটনায় অন্তত দু’কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মিজানুর রহমান জানান, ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার জন্য ট্রেনটি প্লাটফর্মে অবস্থান করছিলো। এসময় দুর্বৃত্তরা ৫টি বগিতে আগুন দেয়। তাক্ষণিকভাবে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

এদিকে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দু’জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানান তিনি। তারা হলেন, মোহাম্মদ মিঠু মিয়া (২৪) ও আজগর মোহাম্মদ এহসান (২৩)।
মিঠু মিয়া নওগাঁর বদরগাছি উপজেলার হলুদ বিহার গ্রামের নাজের আলীর পুত্র। আর এহসানের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর সদরে। তার পিতার নাম মৃত আবদুস সোবহান। নগরীর হালিশহরের কে-ব্লকে তার বাসা রয়েছে।
রেলওয়ে থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক নুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, আটক দু’জনকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার প্রক্রিয়া চলছে।

তিনি জানান, তাদেরকে বগির ভেতর থেকে আটক করা হয়েছে।

বিভাগীয় ম্যানেজার সুকুমার ভৌমিক জানান, আটক হওয়া দু’ব্যক্তির কাছ থেকে পেট্রোলসহ বোতল পাওয়া গেছে।

রেলওয়ের একটি সূত্র জানায়, সূবর্ণ এক্সপ্রেসের যাত্রীরা সাধারণত সাড়ে ছয়টার দিকে স্টেশনে আসেন। কিন্তু এই দু’জনকে ভোর পাঁচটায় ট্রেনের বগিতে অবস্থান করছিলেন। স্বাভাবিক সময়ে সকাল ৭টা ৫মিনিটের দিকে এ ট্রেন ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

এছাড়া ঘটনা তদন্তে ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা রোকনুজ্জামানকে এ তদন্তের কমিটির প্রধান করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন বিভাগীয় তড়িৎ প্রকৌশলী শফিকুর রহমান, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক ও সহকারী যান্ত্রিক প্রকৌশলী ওয়াহিদুর রহমান।

বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার সুকুমার ভৌমিক বাংলানিউজকে বলেন,‘তদন্ত কমিটি ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ, দায়ীদের চিহ্নিতকরণ ও আগুন দেয়ার কারণ খুঁজে বের করবে। তাদেরকে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

রেলেওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, দুর্বৃত্তদের আগুনে পুড়ে যাওয়া ৫টি বগি রেখে সূবর্ন এক্সপ্রেস সকাল পৌনে ৯টার দিকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে।

ঢাকা জার্নাল, মে ০৭, ২০১৩

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.