মধুর ক্যান্টিনের মধুদাকে শহীদ বুদ্ধিজীবীর স্বীকৃতি

মার্চ ২৪, ২০২৪

পেশাগত পরিচয়ের বাইরে গিয়ে ব্যতিক্রমীভাবে দেওয়া হলো বুদ্ধিজীবীর মর্যাদা। তিনি সবার পরিচিত মধুর কেন্টিনের ‘মধুদা’। যিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার একজন চা দোকানি, কিন্তু স্বাধিকার আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ভূমিকায় তার প্রভাব ছিল।

রবিবার (২৪ মার্চ) আরও ১১৮ শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এক সংবাদ সম্মেলনে চতুর্থ ধাপে ১১৮ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রকাশ করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

এ প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করার ক্ষেত্রে আমরা দু’এক জায়গায় ব্যতিক্রম করেছি। যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুদা। ইনি শিক্ষক, লেখক কিংবা গবেষক না, শিল্পীও না। উনি এমন একজন ব্যক্তি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সবাই ওনাকে চেনেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক দেশের স্বাধীনতা সংক্রান্ত যত আন্দোলন হয়েছে, সেখানে উনার একটা অনন্য ভূমিকা ছিল।

তিনি বলেন, এ রকম কিছু ব্যক্তি বিশেষ বিবেচনায় গেছে (তালিকায় অন্তর্ভুক্ত)। উনি (মধুদা) সাধারণ একজন চায়ের দোকানদার। তিনি আবার বৃদ্ধিজীবী হয় কী করে! কিন্তু উনার যে অবদান, ২৩ বছরে যত নেতাকর্মী দেশের নেতৃত্ব দিয়েছেন, উনি তাদের সহযোগিতা করেছেন। বিনা পয়সায় চা খাইয়েছেন।

মন্ত্রী বলেন, তালিকা করার ক্ষেত্রে আমরা আর ব্যতিক্রম করিনি। একটাই করেছি, মধুদারটা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত তার একটা সনদও আছে, যেখানে বঙ্গবন্ধু তাকে (মধুদা) বুদ্ধিজীবী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।

তালিকায় মধুসূধন দে বা মধুদার বাবার নাম লেখা হয়েছে আদিত্ত্ব চন্দ্র দে, মায়ের নাম লেখা হয়েছে যোগমায়া দে। গ্রাম বা মহল্লা-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, থানা-রমনা, জেলা-ঢাকা। মধুদার সেই রেস্তোরাঁ এখনও সবার কাছে ‘মধুর ক্যান্টিন’ নামে পরিচিত।

উল্লেখ্য, স্বাধীনতার আগে প্রায় সব ছাত্রনেতাই মধুর ক্যান্টিনে বসে রাজনৈতিক কাজকর্ম চালাতেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে পাকিস্তান-পর্বে তার রেস্তোরায়ঁ অনেক আন্দোলন-সংগ্রামের পরিকল্পনা হয়েছে। এ কারণে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর শত্রুতে পরিণত হন তিনি। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাকে জগন্নাথ হল থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং সেই রাত্রেই তাকে হত্যা করে।