বিরোধী দলকে হরতাল না দেয়ার আহ্বান শেখ হাসিনার

এপ্রিল ২০, ২০১৩

0,,15488681_4,00ঢাকা জার্নাল: চলমান এইচএসি পরীক্ষা, বাংলাদেশ গেমস চলাকালে হরতাল না দেয়ার জন্য বিরোধী দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির চরিত্র মানুষ হত্যা করা। ফটিকছড়িতে হরতালবিরোধী শান্তিপূর্ণ মিছিলে তারা হামলা করে ৪-৫ জনকে হত্যা করেছে। এখনো অনেকে নিখোঁজ রয়েছে। তারা আরও মানুষ হত্যার হুমকি দিচ্ছে। সবাই জানে তাদের চরিত্রই মানুষ হত্যার।’
শুক্রবার সন্ধ্যায় কৃষক লীগের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গণভবনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় কৃষক লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য চান মিয়ার স্বরচিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ওপর রচিত ৬টি গানের ডিভিডি প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর নিদের্শে চান মিয়া একটি গান পরিবেশন করেন।
কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে কৃষক লীগ ও দেশের কৃষককে শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, শনিবার থেকে বিডি গেমস শুরু হবে। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় দেশের ছেলেমেয়েরা অংশ নেবে। আশা করব এ গেমস চলাকালীন বিরোধী দল হরতাল দিবেন না।
পরীক্ষার সময় হরতাল দিয়ে বিএনপি ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যত নষ্ট করছে অভিযোগ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় এসে শিক্ষার যে গুণগত পরিবর্তন এনেছি বিরোধী নেত্রীর তা সহ্য হচ্ছে না। তিনি নিজের ছেলেদের শিক্ষার জন্য সরকারি টাকা নিয়ে কী শিক্ষা দিয়েছেন? অর্থ পাচার, মানি লন্ডারিং ছাড়া কিছুই করেনি। এখন পরীক্ষার সময় হরতাল দিয়ে বিএনপি দেশের লাখ লাখ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর ভবিষ্যত নষ্ট করছেন।’
দেশের ছেলে মেয়েরা পড়ালেখা শিখুক তা বিরোধী দলের নেত্রী চান না বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
বিএনপির প্রতি প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, কার স্বার্থে এসব হরতাল দেয়া হচ্ছে। ওই যুদ্ধাপরাধী-যারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে এ দেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়েছে। মা-বোনদের ইজ্জত নিয়েছে তাদের বাঁচানোই বিএনপির একমাত্র লক্ষ্য।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ‘সংবিধান লঙ্ঘন করে জিয়াউর রহমান যখন ক্ষমতায় এসেছিলেন তখন সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনীর অফিসারকে হত্যা করা হয়েছিল। রাজাকারদের ছেড়ে দিয়ে তিনি মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী, উপদেষ্টা বানিয়েছিলেন। তার পরে খালেদা জিয়াও একই কাজ করেছেন। রাজাকারদের গাড়িতে পতাকা তুলে দিয়ে শহীদের অমর্যাদা করেছেন।’
বিরোধী দলকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হবার পর বাসের ভেতর যাত্রী পুড়িয়ে মারছেন। বাস ড্রাইভার মূসা, ট্যাক্সিচালক ফারুক, নিরীহ শিক্ষার্থী ও যাত্রীদের কী অপরাধ। পুলিশের মাথা ইট দিয়ে থেঁতলে দিচ্ছেন। মসজিদে আগুন দিচ্ছেন। কোরআন শরীফ পুড়িয়ে দিচ্ছেন- এগুলোই কী আপনাদের ধর্ম-কর্ম। যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে একটার পর একটা ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছেন।’
কৃষকদের উন্নয়নে বর্তমান সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে এ প্রত্যয়ে সরকার এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সঙ্গে বিএনপির এখানেই পার্থক্য। আমরা ব্যবসা করতে ক্ষমতায় আসিনি। জনগণের ভাগ্য গড়তে ক্ষমতায় এসেছি। সে কারণেই আমরা গুরুত্ব দেই কীভাবে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায়। আমরা চাই দেশের এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে।’
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকার কৃষকের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। বন্যা, খড়া, জলোচ্ছ্বাস যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় আওয়ামী লীগ সরকার কৃষকের পাশে থাকে। দেশ যখন খাদ্যে সয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে তখন বিরোধী দল সহিংস হরতাল দিয়ে উৎপাদন ব্যহত করছে। কৃষক তার সবজির সঠিক দাম পাচ্ছে না। পানির দামে তা বিক্রি করতে হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, বিগত ২২ মাস দেশে কোনো চাল আমদানি করা হয়নি। কৃষকের উৎপাদন বাড়ানোর ফলেই এটা সম্ভব হয়েছে।
কৃষক লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লার সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তৃতা করেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার শামসুল হক রেজা। এসময় আওয়ামী লীগের ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরাসহ কৃষক লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র:বিএম২৪

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.