যুদ্ধাপরাধ: রাজনগরের চার আসামির রায় যে কোনো দিন

মার্চ ২৭, ২০১৮

ঢাকা জার্নাল: মৌলভীবাজারের রাজানগর উপজেলার সাবেক মাদ্রাসা শিক্ষক আকমল আলী তালুকদারসহ চার জনের বিরুদ্ধে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধ মামলার রায় হবে যে কোনো দিন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, আটক, নির্যাতন, গুম, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের মত মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে এ মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে।

প্রসিকিউশন ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মঙ্গলবার মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখে।

আসামিদের মধ্যে আকমল আলী তালুকদার (৭৩) এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি তিন আসামি মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার আব্দুন নূর তালুকদার ওরফে লাল মিয়া, আনিছ মিয়া ও আব্দুল মোছাব্বির মিয়া পলাতক।

প্রসকিউশনের পক্ষে এ মামলায় যুক্তি উপস্থাপন করেন সৈয়দ হায়দার আলী। তার সঙ্গে ছিলেন শেখ মুশফিক কবীর ও সায়েদুল হক সুমন।

আর আসামি আকমলের পক্ষে আইনি লড়াইয়ে ছিলেন আইনজীবী আবদুস সোবহান তরফদার। পলাতক আসামিদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আবুল হাসান যুক্তি উপস্থাপন করেন।

গত বছরের ৭ মে অভিযোগ গঠনের মধ্যে দিয়ে এ মামলার বিচার শুরু করে ট্রাইব্যুনাল।

প্রসিকিউটর মুশফিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, একাত্তরে ৫৯ জনকে হত্যা, ছয়জনকে ধর্ষণ, ৮১টি বাড়িতে লুটপাট অগ্নিসংযোগের অভিযোগ রয়েছে এ মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে।

“সাক্ষ্য-প্রমাণ ও পর্যাপ্ত নথির মাধ্যমে প্রসিকিউশন দুটি অভিযোগই প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে বলে আমি মনে করি। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করা হয়েছে।”

তিনি বলেন, এ মামলায় প্রসিকিউশনের ১৩ জন সাক্ষীর মধ্যে পাঁচজনই একাত্তরে আসামিদের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজন ধর্ষনের শিকার।

“আর সাক্ষী বারীন্দ্র মালাকার ও সুবোধ মালাকার সরাসরি আসামিদের নির্যাতনের শিকার। তারা দুজনই সে সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। ফলে এ মামলায় আসামিদের ছাড় পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে আমরা মনে করি।”

২০১৫ সালের ২৬ নভেম্বর চার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল। ওই দিনই রাজনগরের পাঁচগাঁও গ্রাম থেকে আকমল আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মৌলভীবাজার টাউন সিনিয়র কামিল মাদ্রাসার অবসরপ্রাপ্ত এই উপাধ্যক্ষকে পরে ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ২০১৬ সালের ২৩ মার্চ চার আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের পর গত বছরের ৭ মে অভিযোগ গঠন হয়। সূচনা বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় ৪ জুলাই।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের মধ্য দিয়ে ২০১০ সালে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর পর এটি হবে ৩৩তম রায়।

ঢাকা জার্নাল, মার্চ ২৭,২০১৮।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.