মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের পিছিয়ে দিতে জাতীয় সংগীত নিয়ে রিট : হাই কোর্ট

মার্চ ২৭, ২০১৮

ঢাকা জার্নাল: স্কুল-কলেজের পাশাপাশি মাদ্রাসায় জাতীয় সংগীত প্রতিযোগিতা আয়োজনের নির্দেশনা চ্যালেঞ্জ করে দুই ব্যক্তির করা রিট আবেদন হাই কোর্ট খারিজ করে দিয়েছে।

আদালত বলেছে, স্কুলের শিক্ষার্থীরা জাতীয় সংগীত গাইবে, আর মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা গাইবে না- এটা হতে পারে না।

“ব্রিটিশ আমলে আমরা ইংরেজি না শিখে পিছিয়ে পড়েছিলাম। মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের পিছিয়ে দিতে এখন এ ধরনের রিট করা হয়েছে।”

বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের হাই কোর্ট বেঞ্চ থেকে মঙ্গলবার এই পর্যবেক্ষণ আসে।

এবার স্বাধীনতা দিবসের সকালে সারা দেশে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একসঙ্গে শুদ্ধসুরে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়।

এর আগে শুদ্ধভাবে জাতীয় সংগীত চর্চাকে অনুপ্রাণিত করতে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে দলগত জাতীয় সংগীতের প্রতিযোগিতা হয় ২০ থেকে ৩১ জানুয়ারি।

ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতার পর ১৫ থেকে ২০ মার্চ হয় চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে স্বাধীনতা দিবসের সকালে জাতীয় শিশু-কিশোর সমাবেশে ওই প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

 

এ প্রতিযোগিতার বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে সরকার গত ১৮ জানুয়ারি যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল, তা চ্যালেঞ্জ করেই হাই কোর্টে এই রিট আবেদন করেন কুড়িগ্রামের রাজারহাটের সুখদেব ফাজিল মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক মো. নুরুল ইসলাম মিয়া ও ঢাকার পূর্ব কদমতলীর মেরাজনগরের বাসিন্দা মনির হোসেন স্বাধীন শেখ।

মঙ্গলবার তাদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী তৈমুর আলম খন্দকার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

তৈমুর আলম রিটের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে শুনানিতে বলেন, ১৯৭৮ সালের বিধান অনুসারে কেবল স্কুলেই দিনের শুরুতে জাতীয় সংগীত গাওয়া হবে, মাদ্রাসায় নয়।

“মাদ্রাসা শরিয়ত মোতাবেক চলে। এখানে কোনো প্রকার সংগীতের প্রতিযোগিতা অনুমোদন করে না। তাছাড়া সংবিধানেও ধর্ম পালনের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে।”

বিচারক তখন বলেন, “পবিত্র কোরাআনের কোথায় আছে যে জাতীয় সংগীত গাওয়া যাবে না? আপনি দেখান… আগে তো মাদ্রাসার সিলেবাসে অংক, ইংরেজি, বিজ্ঞান ছিল না। যুগের চাহিদা অনুযায়ী সে বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এ রিট করা হয়েছে প্রকারান্তরে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ক্ষতি করার জন্যই।”

রিটকারীর আইনজীবীর সামনে আদালত প্রশ্ন রাখে, দেশের বাইরে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের কাছে জাতীয় সংগীতের বিষয়ে জানতে চাইলে তখন শিক্ষার্থীরা কী জবাব দেবে?

পরে রিট আবেদনটি ‘উত্থাপিত হয়নি’ মর্মে খারিজ করে দেয় আদালত।

ঢাকা জার্নাল, মার্চ ২৭, ২০১৮।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.