শেকল-বাঁধা কিশোর ইলিয়াস মুক্ত

এপ্রিল ২৯, ২০১৬
Ilias Policeঢাকা জার্নাল : এক মাসের বন্দি দশা থেকে মুক্তি মিলেছে ১০ বছরের শিশু ইলিয়াসের। হাত পায়ের শেকল খুলে গেছে তার। শেকলে বাঁধা থাকতে থাকতে শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়া ইলিয়াসের স্থান হয়েছে এখন রাজধানীর আগারগাঁও জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে।
ইলিয়াস মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে অস্বাভাবিক আচরণ করায় বাবা আবুল হাশেম তাকে রাস্তার পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখেন। শেকল-বাঁধা ইলিয়াসের এমন নিষ্ঠুর জীবন গত এক মাসের। রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকার একটি তেজগাঁওয়ের পলিটেকনিক মার্কেটের বিপরীত পাশে ফুটপাতে তাকে বেঁধে রাখা হয়। বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে  একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশের পর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ওসি মো. আবদুর রশিদ শিশুটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান। এ সময় তার বাবাও থানায় ছুটে আসেন। তিনি বলেন, তার ছেলের মানসিক সমস্যা। বাসায় একা থাকলে যেকোনো অঘটন ঘটাতে পারে, তাই তাকে রিকশা গ্যারেজের পাশের ফুটপাতে শেকলে বেঁধে রেখে তিনি রিকশা চালাতে যান।

সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদন
ওসি মো. আবদুর রশিদ বলেন, ‘বিষয়টি খুবই অমানবিক। সমকালে সংবাদ প্রকাশের পর আমরা তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি।’
তিনি জানান, ইলিয়াসের মাকে তালাক দেয়ার পর তার বাবা বিয়ে করে। সে সৎমায়ের অত্যাচারে ছিল। মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। সে যখন মুক্ত ছিল তখন মানুষকে মারতো। মানুষের প্রতি অস্বাভাবিক আচরণ করতো। এগুলো থেকে বাঁচার জন্য বাবা তাকে শিকলে বেঁধে রেখে যেতেন।
তিনি বলেন, ‘তাকে আগারগাঁও জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে ভর্তি করে দিয়েছি। আমি নিয়মিত তাকে দেখতে যাবো। ইলিয়াসের বৃদ্ধ বাবাকে একটা চা দোকানের ব্যবস্থা করে দেব। যাতে সন্তান সুস্থ হলে তিনি সন্তানকে পড়াশুনা করাতে পারেন।’
বৃস্পতিবার সন্ধ্যায় তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার এসআই মো. আব্দুল মোতালেব ইলিয়াসকে আগারগাঁও জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে নিয়ে যান। সেখানে তাকে ডা. সাদিয়া আমরিন সালামের তত্বাবধানে ভর্তি করানো হয়। ডা. সাদিয়া আমরিন সালাম বলেন, ‘ইলিয়াস আস্তে আস্তে স্বাভাকি হবে বলে আশা করছি। আপতত তাকে আমরা পর্যবেক্ষণে রাখবো। প্রথমে তাকে বাস্তবে ফিরে নিয়ে আসার চেষ্টা করবো। দীর্ঘ দিন তার ওপর যে ধকল ছিল- তা ভুলানোর চেষ্টা করবো। তারপর মানসিক চিকিৎসা চলবে।’
ঢাকা জার্নাল, এপ্রিল ২৯, ২০১৬।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.