এখন সময় শুধুই বই কেনার…

ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৬

Bookfairঢাকা জার্নাল: স্টল থেকে স্টলে- প্যাভিলিয়ন থেকে প্যাভিলিয়ন; মানুষের ঘোরাঘুরির অন্ত নেই। যারাই এদিন ঘুরেছেন, কিনেছেন একটি হলেও বই। ছুটির এই দিনে এমনিতেই মানুষের ভিড় বেশি, তারওপর আবার কেনাকাটাও বেশি, সব মিলিয়ে দম ফেলার ফুরসত পাচ্ছেন না প্রকাশক-বিক্রেতারা!
শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে মেলা ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র। এ চিত্র জনজোয়ারের। তবে জোয়ার ঘুরতে আসাদের নয়- ক্রেতাদের।

এছাড়া যারা ঢুকেছেন তাদের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে প্রবেশ করতে হয়েছে, এ লাইন যেন বই কেনার উন্মাদনার! সকালে ছিলো মেলার শেষ শিশুপ্রহর। পরে সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয় মেলা। তখনই দেখা তিন বোন, কাঁকন, নাহার সুলতানা ও নিশাতের সঙ্গে। সাথে কাঁকনের ছোট্ট মেয়েও ছিল। তারা দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে প্রবেশ করেছেন মেলায়। উদ্দেশ্য একটাই সবাই মিলে একত্রে বই কেনা।

এতো ভিড় হবে জানতেন কিনা- জবাবে কাঁকন বলেন, ভিড় তো শেষ সময়ে হবেই, আর আজ ছুটির দিন। কিন্তু আমাদেরও তো সময় বের করতে হবে, ছুটি পেয়েছি তাই বই কেনার তাগিদে আসতেই হলো।

তিনি বলেন, এখন যারা আসছেন তারা ক্রেতা। মূল ক্রেতা। আর তো কয়টা দিন বাকি আছে, তাই সময় নষ্ট না করে কেনার জন্যই আসা। মেলা শেষে নতুন বই কেনার সুযোগ খুব একটা হয় না।

বয়স ভিত্তিক তিনজনের বই কিনবেন জানালেন কাঁকন। আর সব বয়সীদের জন্য হুমায়ূন আহমেদ তো রয়েছেই পছন্দের তালিকায়।

মেলায় আসার সঙ্গী হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনবন্ধু আজম, তোয়েব ও শাকিল। হলে থাকেন তারা।

শেষ সময়ে বেশ কিছু প্রয়োজনীয় বই কিনলাম। এর আগে একবার বই দেখে গিয়েছিলাম, আজ এসে কিনে নিয়ে গেলাম।

জ্যোৎস্না পাবলিশার্সের বিক্রয়কর্মী ইমাম হোসেন রাতুল  জানান, ছোটখাটো প্রকাশনা হওয়ার পরও বেচাবিক্রি আজ ভালো। মানুষ যারা আসছেন, তারাই বই নিচ্ছেন- এটা বড় বিষয়।

নওরোজ সাহিত্য সম্ভারের স্টল ব্যবস্থাপক শাওন জানান, শিশুপ্রহরে বিক্রি হয়েছে ভালো, বিকেলের পরও বিক্রি ভালো হচ্ছে।

কেনাবেচা এবং বইমেলা নিয়ে কথা হয় শব্দশৈলীর প্রকাশক ইফতেখার আমিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, বিক্রি অারও বাড়তো যদি স্টল ব্যবস্থাপনায় সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করা হতো। এতে পাঠকরা বারবার একখানেই ঘুরপাক খেয়ে পরে মেলার একটি বড় অংশ না ঘুরে ফিরে যাচ্ছেন। শুধু বাংলা একাডেমির দোষ দিয়ে লাভ নেই। দোষ প্রকাশকদেরও রয়েছে। প্রকাশকদের উচিৎ ছিলো মেলা শুরুর সময় এসব নিয়ে কথা বলা, সমাধান বের করা।তিনি আরও বলেন, পেছনের দিকের প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসা আরও ভালো হওয়া সম্ভব ছিলো, কিন্তু ২১টি প্রতিষ্ঠান পেছনে বরাদ্দ পেয়েও তাদের স্টল সামনে নিয়ে গেছে। বিষয়টি বাংলা একাডেমির দেখা উচিৎ ছিলো।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান বলেন, আমার বুকটা আনন্দে ভরে গেছে মানুষের বই কেনার প্রতি আগ্রহ দেখে। তারা সেদিন (বুধবার) ঝড় বৃষ্টির পরও এসেছিলেন। আর ছুটির দিন হলে তো কথাই নেই। এই পাঠকদের সম্মান জানাতে হবে আমাদের।

ঢাকা জার্নাল, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.