বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহারে সবাইকে সংযমী ও সাশ্রয়ী হওয়ার আহবান

ডিসেম্বর ৯, ২০১৫

03প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহারে সবাইকে সংযমী ও সাশ্রয়ী হওয়ার আহবান জানিয়ে বলেছেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। তিনি আশা করেন , ২০২১ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা দাঁড়াবে ২৪ হাজার মেগাওয়াট ও ২০৩০ সালে তা ৪০ হাজার মেগাওয়াট। বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাতের উন্নয়নে তাই ব্যাপক অর্থ বিনিয়োগের প্রয়োজন বলে বাণীতে তিনি বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সপ্তাহ উপলক্ষে আজ দেয়া এক বাণীতে এ আহবান জানান। বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাত উন্নয়নে সরকারের কর্মকা- সম্পর্কে দেশের জনগণকে অবহিত করা এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সংযমী ও সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশে আগামী ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর জাতীয় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সপ্তাহ উদ্যাপন করা হচ্ছে। এ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের গ্রাহক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যখনই সরকার গঠন করেছে জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের উন্নয়ন করেছে। বাণীতে তিনি বলেন, ’৯৬ এর সরকারের সময় পাওয়ার সেল গঠন এবং বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন নীতিমালা প্রণয়ন সহ এ খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৪৩০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করি। গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে আমরা নানামুখী পদক্ষেপ নেই।

৩টি নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করি। কিন্তু পরবর্তী বিএনপি-জামাত জোট উন্নয়নের এ ধারাবাহিকতা আর ধরে রাখেনি বরং আমাদের রেখে যাওয়া ৪৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে ৩২০০ মেগাওয়াটে নিয়ে আসে।’ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উন্নয়নের চালিকাশক্তি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের অবকাঠামো ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন। ১৯৭২ সালের ১ মে প্রেসিডেন্সিয়াল অর্ডার (পিও-৫৯) জারির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড গঠন করেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরে বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা ৭০০ মেগাওয়াট হতে ১৪৬০ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়। পাশাপাশি ১৯৭৫ সালের ৯ আগস্ট শেল অয়েল কোম্পানির মালিকানাধীন তিতাস, হবিগঞ্জ, কৈলাসটিলা, রশিদপুর ও বাখরাবাদ গ্যাসক্ষেত্র মাত্র ১ হাজার ৭৮৬ কোটি টাকায় ক্রয় করেন যা ছিল এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ০২-২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাতের উন্নয়নে তাৎক্ষণিক স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ সহ পুরানো বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো তাৎক্ষণিকভাবে সংস্কার এবং নতুন নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ শুরু করা হয়। গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি ডিজেল, ফার্নেস অয়েল, কয়লা, পারমাণবিক শক্তি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির পদক্ষেপ নেয়া হয় । প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘আমরা নতুন ৭৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ‘সেঞ্চুরি’ অর্জন করেছি। দেশের ৭৫ভাগ জনগণ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা এখন ১৪,০৭৭ (ক্যাভটিভসহ) মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। আঞ্চলিক সহযোগিতার অংশ হিসেবে ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এছাড়াও ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে গ্যাসের গড় উৎপাদন ছিল দৈনিক ১৭৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট, বর্তমানে তা দৈনিক ২৭৩০ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত হয়েছে। বিদ্যুৎ, সার-কারখানা, শিল্প, বাণিজ্যিক ও আবাসিক খাতে বর্তমানে প্রায় ৩০ লাখ গ্রাহকের নিকট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। দেশের পশ্চিমাঞ্চলে গ্যাস সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে বাণীতে উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী জাতীয় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সপ্তাহ-২০১৫ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.